আক্রান্ত অল্প বয়সীরাও, ব্রেন হেমারেজ কী শুধু অতিরিক্ত মানসিক চাপেই হয়? জানালেন চিকিৎসকরা

Published on:

brain stroke

বৈশাখী মণ্ডল, কলকাতাঃ আপনি কি সারাদিন খুব চিন্তা করেন? আপনি কি জানেন এতে কতো বড়ো ক্ষতিটাই না হচ্ছে আপনার জীবনের সাথে। মানসিক চাপ যেমন আপনার বিভিন্ন অসুখের কারণ হয়, ঠিক তেমনি আপনার আচমকা মৃত্যুর কারণও হতে পারে। মানসিক চাপের থেকেই সাধারণত আসে রক্তচাপ। এই মানসিক চাপ আর রক্তচাপ একসাথে মিলে একটা গোটা জীবন শেষ করে দিতে পারে। আজকাল কমবয়সি বেশি বয়সী সকল প্রকার মানুষের ব্যাস্ততার পরিমাণ অনেকটাই বেড়ে গিয়েছে এবং তাদের মধ্যে অনেকের এই রক্তচাপ ও মানসিকচাপে তৈরি হচ্ছে ব্রেন হ্যামারেজের ঘটনা।

WhatsApp Community Join Now

আজকালকার দিনে প্রতি ঘরে কারোর না কারোর ডায়াবেটিস, ওবেসিটিতে আক্রান্ত হয়েই আছে। সাথে নিয়োমিত ধুমপান ও মদ্যপানতো সাধারণ বিষয়। এর সাথেই আবার যুক্ত হয় অতিরিক্ত মানসিক চিন্তা ফলে এরা মস্তিষ্কের ভিতর রক্ত ক্ষরণের পরিস্থিতি সৃষ্টি করে। মস্তিষ্কের পরিমাণ মতো অক্সিজেন না পৌছালে ব্রেন ফাংসান ঠিক থাকেনা এতে অনেকক্ষেত্রে ব্রেন স্ট্রোকে পরিণত হয়।

আবার রক্তনালির দ্বারাও অক্সিজেন ব্রেনে ঢোকে অতিরিক্ত চাপের ফলে মাঝে মধ্যে রক্ত নালি ফেঁটে যায় বা রক্তনালী লিক হয়ে যায় এবং ব্রেনে খুব চাপ সৃষ্টি করে আর অক্সিজেন ব্রেনে পৌঁছাতে বাধা পায়। স্নায়ুকোষে পর্যাপ্ত পরিমাণে পুষ্টির জোগান না হলে মানুষের শারীরিক ও মানসিক অক্ষমতা তৈরী হয় কোনো কোনো ক্ষেত্রে মানুষটির মৃত্যুও ঘটে যায়। ব্রেনে কোনো আঘাত আসলে, লিভার সিরোসিস, সংক্রামন অসুখ, রক্তে প্লেটটেলের অভাব, ধ্বনি ফেঁটে যাওয়াও ব্রেন স্ট্রোকের কারণ হতে পারে।

চিকিৎসকেরা সবসময় বলেন কিছু জিনিস পর্যবেক্ষণ করতে, তাহলেই রোগির স্ট্রোক হয়েছে কিনা কমবেশি জানা সম্ভব। এইসব পর্যায়েগুলো মিলে গেলেই স্বত্তর ডাক্তারের নিকট আসলে রোগির অনেক সময় বিপদ কেটে যায়। পর্যায়ে গুলোকে এক কথায় বলা হয় BEFAST

BEFAST কথার অর্থ

B ব্যালেন্স – অর্থাৎ ভারসাম্য হারানো।

E চোখ – হঠাৎ ট্যেরা হয়ে যাওয়া। একটা জিনিসকে ২ টো দেখা বা দৃষ্টি শক্তি লোপ পাওয়া।

F মুখ – যেকোনো একদিকে মুখ বেঁকে যাওয়া।

A হাত – একদিকে হাত অসাড় হয়ে যাওয়া বা বেঁকে যাওয়া।

S স্বর – হঠাৎ কথার স্বর জড়িয়ে যাওয়া।

T সময় –

উপরের বিষয়ে গুলোর ভিতর যেকোনো একটা বা একাধিক লক্ষণ দেখা দিলে সাথে সাথে রোগীকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যেতে হবে। এতে একজন মানুষের প্রান বাঁচানো সম্ভব হতে পারে। এই অসুখ শুধুমাত্র বয়স্কদের হয় এমন চিন্তা করা নিছকই ভুল। কারণ এই অসুখের কোনো বয়স হয়না‌। আজকাল প্রতিটা মানুষের এতো ব্যাস্তোতার ভিতর দিয়ে যায় যে এই অসুখ ২০, ২৪ বছর বয়সী ছেলেমেয়েদের মধ্যেও বেড়ে উঠছে।

শুধু মানসিক চাপের কারণেই হয়না ব্রেন স্ট্রোক

ব্রেন স্ট্রোক শুধুমাত্র মানসিক চাপের কারণেই হয়না। এর সাথে আছে অনেক ছোটোখাটো কারণ। এই যেমন কোনো মেডিসিনের কোর্স শেষ না হলেও মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ হতে পারে। তাই সাবধান হয়ে যাওয়া খুবই দরকার সাধারণ মানুষের কারণ এই ছোটোখাটো বিষয়ে গুলো ডেকে আনতে পারে এই জটিল অসুখ।

পরামর্শ নিন ডাক্তারের

চিকিৎসা শুরু হবার পূর্বেই রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে আনতে হবে। বিপি হাই থাকলে মানসিক চাপ থেকে দূরে রাখতে হবে। সাথে সোডিয়াম, পটাশিয়াম, সুগারের মাত্রাও ঠিক রাখা খুবই জরুরি। সামান্য জ্বর হলেও ডাক্তারের পরামর্শ নিন। জ্বরের থেকেও ব্রেনে প্রভাব ভালো পরে। সবসময় চিন্তা থেকে নিজেকে দূরে রাখুন। নিয়মিত শরীরচর্চা করুন। ওষুধ খাওয়া, ব্লাড সুগার ও প্রেশার নিয়ন্ত্রণে রাখুন। ধূমপান মদ ও ফাস্টফুড বর্জন করুন। সুস্থ জীবনযাপন করুন।

সঙ্গে থাকুন ➥
X