আগে ঘুরত, এখন ঠায় দাঁড়িয়ে! কেন থেমে গেল ভিক্টোরিয়ার পরী? জানা গেল আসল কারণ

Published on:

victoria memorial angel

শ্বেতা মিত্রঃ কলকাতার ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল (Victoria Memorial) শহরের অন্যতম প্রধান পর্যটন গন্তব্যস্থল। রানী ভিক্টোরিয়ার স্মরণে নির্মিত এই সুন্দর স্থাপনাটি একটি জাদুঘর এবং পর্যটক আকর্ষণ। এটি ১৯০৬-১৯২১ সালের মধ্যে নির্মিত একটি আইকনিক ব্রিটিশ স্মৃতিস্তম্ভ এবং এর স্থাপত্য সবাইকে মুগ্ধ করে। এই ভিক্টরিয়া মেমোরিয়াল দেখতে প্রতি বছর দেশ, বিদেশের নানান মানুষ কলকাতায় ছুটে আসেন। আপনি যদি পুরানো ব্রিটিশ রাজের রাজধানীর ব্যাপারে জানতে ইচ্ছুক হয়ে থাকেন তাহলে আপনাকে অবশ্যই একবার হলেও খুঁজে পেতে চান তবে আপনাকে অবশ্যই একবার এই অবিশ্বাস্য ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল পরিদর্শন করতে হবে। যদিও আজকের এই প্রতিবেদনে ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল নিয়ে কথা হবে না, আজ কথা হবে ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালের ওপরে থাকা একটি পরীকে নিয়ে। এই পরী আগে ঘুরলেও এখন কেন ঘোরে না, সেই নিয়ে উঠেছে শুরু করেছে প্রশ্ন।

ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালের পরীকে ঘিরে প্রশ্ন!

WhatsApp Community Join Now

যারা ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল ঘুরতে গিয়েছেন তারা নিশ্চয়ই দেখে থাকবেন একটি পরীকে বা নারী মূর্তিকে। উপর প্রধান হলের মাথার উপরে রয়েছে গম্বুজ আর এই গম্বুজের বাইরের দিকেই রয়েছে একটি ব্রোঞ্জের গ্লোব। এই ব্রোঞ্জের গ্লোবে পারদ ভরা থাকে। গ্লোবের উপরেই দাঁড়িয়ে আছে সাড়ে ছয় টনের ব্রোঞ্জের একটি নারীমূর্তি। বাঁ হাতে একটি লম্বা শিঙা ফুঁকছে আর তাঁর ডান হাতে একগুচ্ছ ফুল, পিছনে দু’টি পাখা।

এই মূর্তি কিন্তু কোনও সাধারণ মূর্তি নয়, কারণ একটু জোরে হাওয়া দিলেই এই পরী ঘুরত। ব্রিটিশ যুগে এই রহস্যময় ঘটনাকে ঘিরে শুরু হয়েছিল নানা গুজব। অনেকে বলত ওই পরী নাকি ব্রিটিশদের ‘গুপ্তচর’। বিশালাকায় সৌধের উপর দাঁড়িয়ে গোটা কলকাতার উপর নজর রাখছে পরী। তখন বলা হত, ‘অ্যাঞ্জেল ইজ ওয়াচিং ইউ’।

মানুষের সমান উঁচু এই পরী

জানা যায়, ১৯০৬ সালের ৪ জানুয়ারিতে ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল তৈরির কাজ শুরু হয়। ১৯২১ সালের ২৮ ডিসেম্বর ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালের দ্বার খুলে দেওয়া হয়। এরপর বসানো হয় এই কালো পরীকে। প্রায় ৫ মিটার অর্থাৎ তিন মানুষ সমান উচ্চতার এই পরীর ওজন ৩.৫ টন।

কেন ঘোরে না এই পরী?

এবার জেনে নেওয়া যায় কেন এই পরী আর ঘোরে না? বিশেষজ্ঞদের দাবি এই পরী ঘুরতে বাতাসের গতিবেগ প্রয়োজন হয় ১৫ কিলোমিটার/ঘণ্টা, কিন্তু কলকাতার আশেপাশে উঁচু উঁচু ইমারত হয়ে যাওয়ায় হাওয়ার গতিবেগ অনেকটাই কমেছে।

অন্যদিকে ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল কর্তৃপক্ষ জানাচ্ছেন পরীর নিচে রয়েছে একটি গিয়ারবক্স। যার ফলেই পরীর এই ঘূর্ণন। কিন্তু, কালক্রমে সেই গিয়ারবক্সে জ্যাম হয়ে যাওয়ায় ১৫ কিলোমিটার হাওয়ার বদলে পরী ঘুরতে হাওয়ার দরকার পড়ে প্রায় ৭০ থেকে ৮০ কিলোমিটার। কিন্তু, সম্প্রতি আমফান ঝড় কলকাতার উপর দিয়ে বয়ে যাওয়ার পরে সেই জ্যাম অনেকটাই ঠিক হয়ে গিয়েছে পরীর। ফলে এখন দমকা হাওয়াতে মাঝে মধ্যেই ঘুরতে দেখা যাচ্ছে এই পরীকে।

সঙ্গে থাকুন ➥
X