সৌভিক মুখার্জী, কলকাতা: মধ্যযুগের একদল মানুষকে বলা হতো কিমিয়াগর। তারা দিনের পর দিন গবেষণা চালাতেন যে, সাধারণ ধাতু সীসাকে দিয়ে কীভাবে সোনা (Lead Converted to Gold) তৈরি করা যায়! আর সে যেন ছিল দিন দুপুরে স্বপ্ন দেখার মত। তবে আজ বহুদিনের স্বপ্নকে বাস্তবে পরিণত করেছে আধুনিক বিজ্ঞান।
বেশ কিছু সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গিয়েছে, ইউরোপের বিখ্যাত গবেষণা প্রতিষ্ঠান CERN-র লার্জ হ্যাড্রন কোলাইডারে (LHC) বিজ্ঞানীরা এমন এক অসাধ্য সাধন করে ফেলেছেন, যেখানে সীসার পরমাণুকে সংঘর্ষ করে সোনায় রূপান্তর করা হয়েছে। ভাবছেন কীভাবে? চলুন জানিয়ে দিচ্ছি।
কীভাবে তৈরি হল সোনা?
আসলে 2015 থেকে 2018 সালের মধ্যে চালানো হয়েছিল এই পরীক্ষা-নিরীক্ষা। এই পরীক্ষায় দুটি সীসার পরমাণুকে বিজ্ঞানীরা একে অপরের দিকে আলোর গতিতে ধাক্কা দিতেন। আর বৈজ্ঞানিক উপায়ে এই ধাক্কার ফলে পরমাণুর কেন্দ্রস্থল বা নিউক্লিয়াস থেকে সরাসরি প্রোটনগুলি ছিটকে যায়।
সাধারণত সীসার পরমাণুতে 82 টি প্রোটন থেকে, যা আমরা ফিজিকাল সাইন্সে বহুদিন আগেই পড়েছি। তবে এই সংঘর্ষের ফলে প্রোটন কমে গিয়ে দাঁড়ায় 79 টিতে। আর ঠিক সোনার পরমাণুতেও 79 টি প্রোটন থাকে। বিজ্ঞানের ভাষায় বললে সীসার পরমাণু রূপান্তরিত হয়েছে এক্কেবারে হলুদ ধাতুর পরামাণুতে।
কতটা তৈরি হলো সোনা?
যদিও এই রূপান্তরের ফলে তৈরি হওয়ার সোনার পরিমাণ একেবারে যৎসামান্য। তবে গবেষকদের হিসেবে প্রায় 86 বিলিয়ন নিউক্লিয়াস সোনা তৈরি করা হয়েছে এই পরীক্ষার মাধ্যমে, যা 1 গ্রাম সোনার প্রায় 29 ট্রিলিয়ন ভাগের একভাগ।
এমনকি এই সোনার অস্তিত্ব ছিল খুব অল্প সময়ের জন্যই। 1 সেকেন্ডের আগেই ভেঙে গিয়েছিল ওই সোনার নিউক্লিয়ার। অর্থাৎ, ব্যবহারিক দিক থেকে এটি খুব একটা মূল্যবান না হলেও বিজ্ঞানচর্চার ক্ষেত্রে বিরাট আলোড়ন সৃষ্টি করেছে।
আরও পড়ুনঃ ফিক্সড ডিপোজিটে সুদের হার বদলাল PNB সহ তিন ব্যাঙ্ক, এখন আরও বেশি লাভ
কোন প্রযুক্তি ব্যবহার করা হলো এই পরীক্ষায়?
বেশ কিছু সূত্র মারফত খবর, এই পরীক্ষায় ব্যবহার করা হয়েছে ALICE নামের এক অত্যাধুনিক ডিটেক্টর। আর এটি পারমাণবিক সংঘর্ষের ফলে উৎপন্ন হওয়া ক্ষুদ্র কণাগুলিকে শনাক্ত করতে সাহায্য করে। আর ALICE-র সাহায্যেই বিজ্ঞানীরা এই অসাধ্য সাধন করে ফেলেছেন।
গুরুত্বপূর্ণ খবরের জন্য | Join Group |
চাকরির খবরের জন্য | Join Hood Jobs |
রাশিফলের জন্য | Join Hood Rashifal |
খেলার খবরের জন্য | Join Whatsapp |