সৌভিক মুখার্জী, কলকাতা: দেশের ব্যাঙ্কিং সেক্টরে (Banking News) আসছে বিরাট পরিবর্তন! দীর্ঘ এক দশক পর ব্যাঙ্ক লাইসেন্স দেওয়ার পথে হাঁটছে কেন্দ্র সরকার এবং রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া। সম্প্রতি এক অর্থনৈতিক প্রতিবেদন মারফৎ জানা গিয়েছে, ভারতের অর্থমন্ত্রক এবং আরবিআই ইতিমধ্যেই একটি প্রাথমিক আলোচনা শুরু করেছে।
জানা গিয়েছে, দেশের দীর্ঘমেয়াদি অর্থনৈতিক লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করার জন্য আরও বড় বড় এবং বেশি সংখ্যক ব্যাঙ্কের প্রয়োজন। আর সে কারণেই এবার কেন্দ্রীয় সরকার নতুন করে ব্যাঙ্ক লাইসেন্স দেওয়ার পরিকল্পনা নিয়েছে।
ব্যাঙ্কিং সেক্টরে কী কী পরিবর্তন আসবে?
সূত্র বলছে, এই আলোচনার টেবিলে দেওয়া হয়েছে একাধিক প্রস্তাব। প্রথমত, বড় বড় কোম্পানিগুলোকে ব্যাঙ্ক চালানোর অনুমতি দেওয়া হতে পারে। যদিও সরকার শেয়ার হোল্ডিং নিয়ন্ত্রণে রাখবে। দ্বিতীয়ত, নন ব্যাঙ্কিং সংস্থাগুলিকে পূর্ণাঙ্গ ব্যাঙ্কে রূপান্তর করা হতে পারে এবং বিদেশী বিনিয়োগকারী সংস্থাগুলিকে রাষ্ট্রায়ত্ত্ব ব্যাঙ্কের শেয়ার কেনার অনুমতি দেওয়া হতে পারে।
উল্লেখ্য বলে রাখি, 2014 সালে শেষবার নতুন ব্যাঙ্ক লাইসেন্স ইস্যু করেছিল ভারত সরকার। আর 2016 সালে অবশ্য বড় বড় শিল্পগোষ্ঠীগুলোকে ব্যাঙ্ক খোলার অনুমতি দিয়েছিল ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাঙ্ক। তবে সেই নিষেধাজ্ঞা এবার তুলে নেওয়া হতে পারে বলে অনুমান করা হচ্ছে।
শেয়ার বাজারেও ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া
কেন্দ্র সরকারের এই পদক্ষেপের কথা সামনে আসতেই শেয়ারবাজারে তার প্রভাব পড়তে শুরু করেছে। সম্প্রতি Nifty PSU Bank সূচক শুরুতে 0.8% পড়ে গিয়েছিল। কিন্তু বিকেলের দিকে আবারও উল্টে 0.5% মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। আর এবছরই এই ইনডেক্সের গ্রাফ প্রায় 8% পর্যন্ত উপরের দিকে উঠেছে।
প্রসঙ্গত, বর্তমানে বিশ্বব্যাপী ব্যাঙ্ক র্যাঙ্কিংয়ে ভারতের মধ্যেও এসবিআই এবং এইচডিএফসি ব্যাঙ্ক ছাড়া আর কোনও ব্যাঙ্ক শীর্ষ 100-তেই নেই। অন্যদিকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং চিনা ব্যাঙ্কগুলি তাদের অধিপত্য বজায় রেখেছে। এমনকি রাষ্ট্রায়ত্তে ব্যাঙ্কে বিদেশী বিনিয়োগের সীমা বর্তমানে 20 শতাংশ রাখা হয়েছে এবং তার জন্য সরকারি অনুমতিও প্রয়োজন।
প্রধানমন্ত্রীর বিরাট উদ্যোগ
বলে দিই, প্রধানমন্ত্রীর নরেন্দ্র মোদি 2047 সালের মধ্যে ভারতকে উন্নত দেশ করার লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছেন। হ্যাঁ, ডিজিটাল ইন্ডিয়া মিশনের মাধ্যমেই হবে এই প্রকল্পের বাস্তবায়ন। আর এই লক্ষ্যে পৌঁছতে গেলে দেশের 130% জিডিপি ব্যাঙ্কের মাধ্যমেই নিয়ে যেতে হবে। যদিও এই হাড় বর্তমানে মাত্র 56%।
আর সেই কারণেই এখন প্রয়োজন এমন এমন ব্যাঙ্ক, যারা বড় বড় মেয়াদের লোন দিতে পারবে এবং পরিকাঠামো, শিল্প ও প্রযুক্তি ক্ষেত্রে অবদান রাখতে পারবে। যদিও নন ব্যাঙ্কিং সংস্থাগুলিও অবদান রাখে, তবে ব্যাঙ্কগুলোর উপর সরকার বেশি পরিমাণে আস্থা এবং নিয়ন্ত্রণ করতে চাইছে।
আরও পড়ুনঃ আকাশ ছোঁয়া হলুদ ধাতুর দর, ছ্যাঁকা দিচ্ছে রুপোও! আজকের সোনার দাম
ভারতের ব্যাঙ্কিং খাতে বাড়ছে বেড়েছে লগ্নি
জানিয়ে রাখি, এবার ভারতের ব্যাঙ্কিং সেক্টরে বিদেশের নজরে পড়ছে। জাপানের একটি সংস্থা সম্প্রতি ঘোষণা করেছে যে, তারা ইয়েস ব্যাঙ্কের 20% শেয়ার কিনে নেবে, যার বাজার মূল্য দাঁড়াচ্ছে প্রায় 13,500 কোটি টাকা। আর এটিই এখনো পর্যন্ত দেশের ব্যাঙ্কিং খাতে সবথেকে বড় বিদেশী বিনিয়োগ হতে চলেছে।
প্রসঙ্গত গত মে মাসে ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাঙ্কের গভর্নর সঞ্জয় মালহোত্রা জানিয়েছিলেন, তারা ব্যাঙ্ক লাইসেন্স নীতিমালার বিষয়টি নতুন করে পর্যালোচনা করছে। আর তা এবার বাস্তবায়নের পথে। এখন দেখার, ব্যাঙ্কিং সেক্টরে ঠিক কী কী পরিবর্তন আসে।
গুরুত্বপূর্ণ খবরের জন্য | Join Group |
চাকরির খবরের জন্য | Join Hood Jobs |
রাশিফলের জন্য | Join Hood Rashifal |
খেলার খবরের জন্য | Join Whatsapp |