সৌভিক মুখার্জী, কলকাতা: আপনি কি কখনো কল্পনা করেছেন যে, প্লেনে 100ml এর বেশি জল বা অন্য কোন লিকুইড বহন করা যাবে না (Flight Rules)? আসলে বিমানবন্দরে সিকিউরিটি চেকপয়েন্টে প্রায়ই দেখা যায়, যাত্রীরা বোতলের জল বা কোন প্রসাধনী সামগ্রী নিয়ে গেলে আটকে যান। আসলে এর পেছনে রয়েছে এক ভয়াবহ সন্ত্রাসী ষড়যন্ত্রের ইতিহাস, যা বদলে দিয়েছে বিমান চলাচলের নিরাপত্তার গোটা নিয়মকে।
২০০৬ সালের এক ভয়ানক ষড়যন্ত্র
সালটা ছিল ২০০৬। লন্ডনের হিথরো বিমানবন্দর। ব্রিটিশ এয়ারওয়েজের এক ফ্লাইটে ওঠার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন কয়েকজন যাত্রী। তাদের ব্যাগে ছিল সাধারণ কিছু জলের বোতল। কিন্তু যখন নিরাপত্তা কর্মীরা স্ক্যানিং করেন, তখন বোতলগুলির মধ্যে সন্দেহজনক ইঙ্গিত পান। আরো খতিয়ে পরীক্ষা করে দেখা যায়, বোতলগুলি আসলে বিস্ফোরক তরল পদার্থ দিয়ে ভরা। হ্যাঁ ঠিকই শুনেছেন। পরিকল্পনা ছিল প্লেন উপরে ওঠার পরই এই তরল দিয়ে ভয়াবহ বিস্ফোরণ ঘটানো হবে। আসলে এই ঘটনার আগে পর্যন্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা যেমন কঠোর ছিল না। তাই সাধারণ বোতলের আড়ালে এই ভয়ানক ষড়যন্ত্রের ফন্দি আটা হয়েছিল।
নিরাপত্তার নতুন নিয়ম
বিমানবন্দরের এই ঘটনার পর আন্তর্জাতিক বিমান সংস্থাগুলি কার্যত শিউরে ওঠ। এরপরই ইন্টারন্যাশনাল সিভিল অ্যাভিয়েশন অর্গানাইজেশন (ICAO) নতুন নিয়ম চালু করে। নতুন নিয়ম বলছে, যাত্রীরা 100ml এর বেশি কোন লিকুইড বহন করতে পারবে না। এই নিয়ম বিশ্বের সব বিমানবন্দরে বাধ্যতামূলক। বোতলে নিতে পারবেন শুধুমাত্র জল, জুস, পারফিউম, লোশন, শ্যাম্পু বা স্যানিটাইজার জাতীয় পদার্থ। বেশি পরিমাণে লিকুইড থাকলে সেটি চেক-ইন লাগেজে রাখতে হবে।
কীভাবে কাজ করবে এই নতুন নিয়ম?
প্লেনে ওঠার সময় হাতে থাকা ব্যাগে 100ml এল এর বেশি কোন লিকুইড থাকলে তা ফেরত দিতে হবে। সিকিউরিটি স্ক্যানিং এর সময় বিশেষ লিকুইড ডিটেকশন টেকনোলজি ব্যবহার করা হয় এখন। পাশাপাশি প্লাস্টিকের বোতলে কোন সিল থাকলে তাও প্রত্যাখ্যান করা হয়। অনেক যাত্রী ভেবে থাকেন, “আমার সিল করা বোতল তো নিরাপদ। তাহলে এটি কেন নিষিদ্ধ করা হলো?” কিন্তু সন্ত্রাসীরা একবার সাধারণ জলের বোতলের মধ্যেই বিস্ফোরক লুকিয়ে রেখেছিল। তাই বিমান কর্তৃপক্ষ এখন কোন ঝুঁকি নিতে চায় না।
তাহলে প্লেনে কীভাবে জল পাবেন?
আসলে প্লেনে ওঠার পর বিমান সংস্থা জল সরবরাহ করে। এয়ারপোর্টে সিকিউরিটি চেকের পর আপনি জলের বোতল কিনতে পারবেন। কিছু এয়ারলাইন্সে খালি বোতল নিয়ে ভেতরে ঢুকে ফিলটার থেকেও জলভরা যায়। তাই দুশ্চিন্তা করার কোনো কারণ নেই।
ছোট একটি নিয়ম, কিন্তু বিশাল সুরক্ষা
বিমানবন্দরে এই 100ml এর বেশি লিকুইড নিষিদ্ধ হওয়ার পেছনে রয়েছে এই ভয়ংকর সন্ত্রাসী ষড়যন্ত্র। ২০০৬ সালের সেই ঘটনা না ঘটলে হয়তো আজ প্লেনে এই নিয়ম থাকত না। তাই পরেরবার থেকে প্লেনে চড়ার সময় অবশ্যই এই বিষয়টি মাথায় রেখে এয়ারপোর্ট পা দেবেন।
গুরুত্বপূর্ণ খবরের জন্য | Join Group |
চাকরির খবরের জন্য | Join Hood Jobs |
রাশিফলের জন্য | Join Hood Rashifal |
খেলার খবরের জন্য | Join Whatsapp |