সৌভিক মুখার্জী, কলকাতা: এবার থেকে চলন্ত ট্রেনে তোলা যাবে টাকা! হ্যাঁ, অবিশ্বাস্য মনে হলেও সত্যি। এবার এই চিত্রই বাস্তবে রূপ নিয়েছে ভারতীয় রেলের এক যুগান্তকারী উদ্যোগে। প্রথমবারের মতো চলন্ত ট্রেনে স্থাপন করা হয়েছে এটিএম মেশিন (Train ATM)। সুত্রের খবর, এই অবাক করার মত ব্যবস্থা চালু করা হয়েছে মুম্বই-মনমাড পঞ্চবতী এক্সপ্রেসে।
কোন ট্রেনে বসানো হয়েছে এটিএম?
সূত্র বলছে, মুম্বই-মনমাড পঞ্চবতী এক্সপ্রেস (১২১০৯), যেটি প্রতিদিন মুম্বাইয়ের ছত্রপতি শিবাজী মহারাজ টার্মিনাস (CSMT) থেকে ছেড়ে মনমাড জংশনে পৌঁছায়। আর এই ট্রেনের এসি চেয়ার কারে বসানো হয়েছে এই বিষয়ে এটিএম মেশিন। প্রায় ৪ ঘন্টা ৩৫ মিনিট সময় ধরে যাত্রা করে এই ট্রেনটি। আর এবার এই দীর্ঘ যাত্রায় সেরা অভিজ্ঞতা দিতেই চালু করা হচ্ছে এই প্রযুক্তি।
কীভাবে এই প্রকল্প বাস্তবায়ন হল?
এই বিশেষ এটিএম মেশিন ইনস্টলেশন একেবারেই সাধারণ কাজ ছিল না। এর জন্য মুম্বাই মনমাড জংশনে রুটে চলা এই বিশেষ ট্রেনের একটি কোচে নির্দিষ্ট বিশেষ কিছু পরিবর্তন আনা হয়। জানা যাচ্ছে, মনমাড রেলওয়ে ওয়ার্কশপে কোচটিকে আপগ্রেড করা হয়েছে। এরপরেই এটিএম মেশিন বসানোর জন্য প্রয়োজনীয় পরিকাঠামো তৈরি করা হয়।
সূত্র বলছে, মেশিনটি বসানো হয়েছে একেবারে কোচের পিছন দিকে। যেখানে সাধারণত একটি ছোট প্যান্ট্রি স্পেস থাকে। আর সেখানে তৈরি করা হয়েছে একটি ছোট কিউবিকল, যা বাইরে থেকে শাটার দরজা দিয়ে সুরক্ষিত রয়েছে। এমনকি চলন্ত ট্রেনে মেশিনটি যাতে সঠিকভাবে কাজ করতে পারে, তার জন্য বিশেষ বৈদ্যুতিক সংযোগও করা হয়েছে।
কোন ব্যাঙ্কের এটিএম বসেছে?
এখনো পর্যন্ত যা জানা যাচ্ছে, এই পরিষেবার জন্য এগিয়ে এসেছে ব্যাঙ্ক অফ মহারাষ্ট্র। তাদের এটিএম মেশিনই বসানো হয়েছে এই বিশেষ কোচে। ব্যাঙ্ক এবং রেলের যৌথ উদ্যোগেই এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হয়েছে।
আরও পড়ুনঃ বন্ধুত্বের মূল্য চোকাতে হবে পাকিস্তানকে! কোটি কোটি ডলার আদায়ের প্রস্তুতি নিচ্ছে বাংলাদেশ
ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা
যদি এই ট্রায়াল সফল হয়, তাহলে রেল কর্তৃপক্ষ অন্যান্য ট্রেনেও এই এটিএম এর ব্যবস্থা চালু করার পথে হাঁটতে পারে। এতে যাত্রীদের যাত্রা হবে আরো সুবিধাজনক এবং বিপদে-আপদে ট্রেন থেকেই তোলা যাবে টাকা। ফলে নগদ টাকার প্রয়োজন হলে আর স্টেশন অবধি অপেক্ষা করতে হবে না। ট্রেনের এটিএমই পৌঁছে দেবে যাত্রীদের প্রয়োজনীয় অর্থ। সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে যেভাবে রেল পরিষেবা উন্নত হচ্ছে, তাতে ভবিষ্যৎ কোথায় গিয়ে দাঁড়ায় সেটাই এখন দেখার।