প্রতিদিন পৃথিবীতে ভেঙে পড়ছে স্টারলিঙ্কের স্যাটেলাইট!

Published:

Starlink Satellite
Follow

সৌভিক মুখার্জী, কলকাতা: রাতের আকাশে কি তাকিয়ে কখনও ধীরে ধীরে চলতে থাকা তারা কিংবা উজ্জ্বল রেখা দেখেছেন? যদি মনে করেন ওটা কোনও উল্কা খসে পড়ছে বা কোনও নক্ষত্র, তাহলে আপনি ভুল। কারণ ওগুলি স্পেসএক্সের স্টারলিঙ্ক স্যাটেলাইট (Starlink Satellite), যা মহাকাশ থেকে ভস্ম হয়ে দিনের পর দিন পৃথিবীতে ফিরে আসছে। সম্প্রতি অবসরপ্রাপ্ত হার্ভার্ড অ্যাস্ট্রোফিজিসিস্ট জনাথন ম্যাকডাওয়েল এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, প্রতিদিন নাকি 1 থেকে 2টি স্টারলিঙ্ক স্যাটেলাইট পৃথিবীর বায়ুমন্ডলে প্রবেশ করে ভেঙে পড়ছে।

আকাশে ভেসে বেড়াচ্ছে 8000-এর বেশি স্যাটেলাইট

প্রসঙ্গত, বর্তমানে পৃথিবীর কক্ষপথে 8000-এর বেশি স্যাটেলাইট ঘুরে বেড়াচ্ছে। আর এগুলি ইলন মাস্কের সংস্থা স্পেসএক্সের নির্মাণ করা। তবে সবথেকে চমক দেওয়ার বিষয়, এই সংখ্যা দিনের পর দিন বাড়ছে। পাশাপাশি, অ্যামাজনের Kuiper প্রজেক্ট এবং চিনের কয়েকটি সংস্থাও নিজেদের স্যাটেলাইট আকাশে পাঠিয়েছে। আর এই স্যাটেলাইটগুলি মূলত লো আর্থ অরবিটে অর্থাৎ পৃথিবী থেকে মোটামুটি 1200 মাইলের মধ্যেই ঘোরে। তবে এই ধরনের স্যাটেলাইটের গর আয়ু সাধারণত 5 থেকে 7 বছর হয়ে থাকে। ফলে পুরনো স্যাটেলাইটগুলি নিয়মিতভাবে পৃথিবীর বায়ুমন্ডলে ভেঙে পড়ে। এমনকি তিনি সতর্ক করেছেন, আগামী কয়েক বছরের মধ্যে নাকি এই সংখ্যা বেড়ে প্রতিদিন 5 টিতে পৌঁছবে।

এদিকে তিনি আরও জানিয়েছেন, যদি এই হারে স্যাটেলাইটের সংখ্যা দিনের পর দিন বাড়তে থাকে, তাহলে একসময় মহাকাশ Kessler Syndrome নামের এক ভয়াবহ পরিস্থিতিতে পরিণত হবে। মোদ্দা কথা, মহাকাশে এত বেশি বস্তু জমে যাবে যে, একটির সঙ্গে আরেকটির সংঘর্ষ শুরু হবে। আর এতে নতুন করে ধ্বংসাবশেষ তৈরি হবে, যা আরও সংঘর্ষ ঘটাবে।

উল্কা নাকি স্যাটেলাইট, কীভাবে চিনবেন?

এদিকে আকাশে অনেকেই জ্বলতে থাকা এই সমস্ত রেখা দেখে প্রশ্ন করছে, ওটা কি উল্কা, নাকি মহাকাশযানের কোনও টুকরো। তবে জনাথন বলেছেন, এটা চিনে নেওয়ার একটি সহজ উপায় রয়েছে। তা হল এর গতিবেগ। উল্কা খুব দ্রুত গতিতে কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই অদৃশ্য হয়ে যায়। তবে স্যাটেলাইটের অংশগুলি অনেক ধীরে ধীরে চলে। প্রায় 1 থেকে 2 মিনিট ধরে আকাশে দেখতে পাবেন। অর্থাৎ, যদি দেখেন যে আকাশে ধীরে চলতে থাকা কোনও বস্তু যা মিনিট খানেক ধরে ঘুরে বেড়াচ্ছে, তাহলে সম্ভবত সেটি কোনওরকম স্যাটেলাইটের টুকরো।

তবে শুধুমাত্র পুরনো হয়ে যাওয়া নয়, বরং সূর্যের অতিরিক্ত তাপে নতুন নতুন স্যাটেলাইটগুলোও ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। যখন সূর্যের তাপমাত্রা এবং বিকিরণ বেড়ে যায়, তখন পৃথিবীর উপরের স্তর ফেঁপে ওঠে। ফলে নীচের কক্ষপথে থাকা স্যাটেলাইটগুলি আরও ঘর্ষণের কারণে ধীরে ধীরে নীচে নেমে আসে এবং বায়ুমণ্ডলে পুড়ে ছাই হয়ে যায়।

আরও পড়ুনঃ তারাপীঠে প্রতিমা নিরঞ্জনের সময় উত্তেজনা! গ্রেপ্তার তৃণমূল প্রধানের স্বামী সহ ৫

এদিকে চলতি বছরের 25 সেপ্টেম্বর ক্যালিফোর্নিয়ার বে-এরিয়ার আকাশে একটি স্টারলিঙ্ক স্যাটেলাইটের আগুন জ্বলা দৃশ্য দেখা গিয়েছিল। আর তার মুহূর্তের মধ্যে সোশ্যাল মিডিয়ায় তা ভাইরাল হয়ে যায়। কিন্তু মনে রাখবেন, পৃথিবীর 70% জুড়ে জল। তাই বেশিরভাগ স্যাটেলাইটের অনুপ্রবেশ সমুদ্রের উপর ঘটে, যা মানবচক্ষুতে দৃশ্যমান হয় না।

গুরুত্বপূর্ণ
Join
চাকরির খবর
Join
রাশিফল
Join
খেলার খবর
Join