প্রীতি পোদ্দার: গোটা বিশ্ব ব্রহ্মাণ্ডের কোণায় কোণায় এখনও লুকিয়ে রয়েছে বহুল অপ্রকাশিত সত্য। তবে এই অজানার ভান্ডার যে অল্পটুকু তা নয়। সেটি মহাসমুদ্রের সমান। যার মধ্যে সামান্য ভাগ শুধুমাত্র অনুসন্ধান করতে পেরেছে বিজ্ঞানীরা। তবে এখানেই থেমে যায়নি বিজ্ঞান। গবেষণা চালিয়ে রাখতে এখনও অদম্য সাহসের সঙ্গে খুঁজে চলেছে নানা অপ্রকাশিত সত্য। আর এই আবহেই এবার মঙ্গলে আবিষ্কৃত হল এক নয়া তথ্য। যা নিয়ে বেশ উচ্ছ্বসিত NASA।
সালফারের পর মঙ্গলে মিলল অদ্ভুত দৃশ্য
অনেক সময় মঙ্গলে এমন অদ্ভুত জিনিস দেখা যায়, যা বিজ্ঞানী ও সাধারণ মানুষের মধ্যে আরও কৌতূহল জাগায়। বেশ কিছু মাস আগে মঙ্গল গ্রহে হলুদ রংয়ের ক্রিস্টাল ছড়িয়ে থাকতে দেখা গিয়েছিল। সেই সকল দ্রব্য ভালো করে পরীক্ষা নিরীক্ষার পর জানা যায়, ওগুলি আসলে খাঁটি সালফার। এবং এই সালফার মঙ্গলে খুঁজে পাওয়াটাকেই বিজ্ঞানীরা অনেকটা মরুভূমির মধ্যে জলের সন্ধান পাওয়ার সঙ্গে তুলনা করেছেন। আর এরই মাঝে এবার মঙ্গলে দেখা মিলল মাকড়সার। সেই বিষয়ে এক বড় সত্য তুলে ধরল NASA।
এর আগে মঙ্গলগ্রহের মাকড়সাদের কথা প্রথম জানা যায় ২০০৩ সালে। সেই সময় প্রথম মঙ্গলগ্রহের বুকে মাকড়শার ঝাঁকের মতো কিছু কিলবিল করতে দেখা যায়। সঙ্গে সঙ্গে একাধিক কৃত্রিম উপগ্রহ ওই মাকড়শার ঝাঁকের মতো বস্তুগুলির ছবি তুলে নেয়। আর এই ছবি গুলোর মাধ্যমেই বোঝা যায় প্রায় ৩০০ মিটারের বেশি এলাকা জুড়ে ওই মাকড়শার ঝাঁকের মতো বস্তু ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে।
আর এই ছবি প্রকাশিত হতেই বিজ্ঞানীদের মধ্যে নানা বিতর্কের দানা বাঁধল। বিভিন্ন বিজ্ঞানীরা বিভিন্ন মতামত প্রেরণ করছে। সেই নিয়ে প্রায় গত কয়েক বছর ধরেই গবেষণা চালাচ্ছিলেন বিজ্ঞানীরা। অবশেষে সেই রহস্য উদঘাটন করা গেল। গত ১১ সেপ্টেম্বর The Planetary Science Journal-এ একটি গবেষণাপত্র প্রকাশিত হয়েছে সেই সত্য। জানা গিয়েছে, ওই মাকড়শার মতো দেখতে বস্তু আসলে মঙ্গলগ্রহের ভূখণ্ড।
মঙ্গলগ্রহের উপরিভাগ জুড়ে ছড়িয়ে থাকা মাকড়সার মত দেখতে এই ছোট ছোট কালো গঠনগুলি দেখে অনেকেই মনে করেছিল যে এটি মাকড়সা। যদিও এগুলো মোটেও মাকড়সা নয়। পরে জানা যায় এগুলি ছোট এবং গাঢ় রঙের ভূখণ্ড। যা আসলে জমে থাকা কার্বন ডাই অক্সাইড এর বরফ।
কীভাবে তৈরি হয়েছে এটি?
জানা গিয়েছে, মঙ্গলগ্রহের মাটিতে যে কার্বন ডাই অক্সাইডের বরফ রয়েছে, তা তরলে পরিণত না হয়ে যখন সরাসরি গ্যাসে পরিণত হয়, তখন তাকে মাকড়শার মতো দেখায়। আর এই বৈশিষ্ট্যগুলিকে অ্যারেনিফর্ম ভূখণ্ড বলা হয়। এই কালো দাগগুলি ছবিতে ছোট মনে হতে পারে, কিন্তু বাস্তবে তাদের আকার বড়। সবচেয়ে ছোট দাগ যেটি রয়েছে তা অনেকটা ১৪৫ ফুট জুড়ে হতে পারে এবং বৃহত্তম আধা মাইল হতে পারে।
এই গোটা গবেষণার সত্য উদঘাটন করেছিলেন লরেন এমসি কিওন, যিনি কিনা NASA-র জেট প্রপালসন ল্যাবরেটরিতে প্ল্যানেটারি জিওমর্ফোলজিস্ট। তবে এর আগে ২০২১ সালে। তখন তিনি বলেছিলেন, মঙ্গলগ্রহে বসন্ত কালে সূর্যালোক কার্বন ডাই অক্সাইডের বরফ ভেদ করে মাটিতে পৌঁছয়। এর ফলে মাটি গরম হয়, যার সংস্পর্শে এসে বরফের তরল না হয়ে গিয়ে, গ্যাসের আকার ধারণ করে। কালো ধোঁয়া তৈরি হয়। এর চাপে বরফের স্তরও ফেটে যায়। ওই ফাটল দিয়ে বেরিয়ে আসে গ্যাস ও ধুলো। তবে সব জায়গায় এমন হয় না।
অবশেষে পাঁচ বছর পর সবটাই হাতে কলমে প্রমাণিত হল। লরেন এমসি, কার্বন ডাই অক্সাইড বরফ নিয়ে পৃথিবীতে এর আগে গবেষণা করে সকলের কৌতূহল মিটিয়েছিলেন। অন্যদিকে মঙ্গল গ্রহে একটি সক্রিয় আগ্নেয়গিরির সন্ধান পাওয়া গিয়েছে যেটি কিনা পৃথিবীর সর্বোচ্চ শৃঙ্গ মাউন্ট এভারেস্টের চেয়েও বেশি।
গুরুত্বপূর্ণ খবরের জন্য | Join Group |
চাকরির খবরের জন্য | Join Hood Jobs |
রাশিফলের জন্য | Join Hood Rashifal |
খেলার খবরের জন্য | Join Whatsapp |