প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা : একঘেয়েমি কাজ করতে করতে একটু ব্রেক টাইম পেলেই অনেকেই সোশ্যাল মিডিয়ায় ঢুঁ মারতে চলে যান। আর এইমুহুর্তে সোশ্যাল মিডিয়া খুললেই অসংখ্য ফুড ব্লগিংয়ের ভিডিও নজরে আসে। যার জেরে অনেকেই এখন ভাইরাল হয়ে যাচ্ছেন সোশ্যাল মিডিয়ায়। ব্যবসাও বেড়েছে কয়েকগুণ অনেকের। সে উজ্জ্বলদার বিরিয়ানি হোক কিংবা নন্দিনীদির হোটেল। কিন্তু কারও কারও কাছে আবার ফুড ব্লগিং অতিষ্ঠ হয়ে উঠছে। এবার এক জনপ্রিয় দোকানি তাঁর দোকানে ফুড ব্লগিংকেই নিষিদ্ধ করে দিচ্ছে। তাও আবার কম্পিউটারে টাইপ করে লিখে প্রিন্ট করে সেই নোটিস টাঙিয়েছেন তিনি।
ব্লগিং নিষিদ্ধ রাজু দার দোকানে
শিয়ালদা মেট্রোর সামনে থেকে রাস্তাটা সোজা বৌবাজার চলে গিয়েছে। সেখানে বিদ্যাপতির সেতুর একটি শাখা চলে গিয়েছে মৌলালির দিকে। সেই ব্রিজের নিচে ভোর ভোর বামদিকে একটা ছোট্ট দোকান দিয়েছে সকলের প্রিয় রাজু দা। আর তাঁকে ঘিরেই ভিড় করেছে অনেক ক্রেতা। সেই ভিড়ের মধ্যেও আবার কিছু লোক মোবাইল তাক করে রয়েছে, তাঁর দিকে। যদিও রাজুদার কোনও স্থায়ী দোকান নেই। দুটো ডেকচি ও দুটো ক্যানই ব্যবসার মূল সম্বল। বিখ্যাত তাঁর পকেট পরোটা আর আনলিমিটেড তরকারির জন্য। কিন্তু এবার তিনি নিজেই তাঁর দোকানে ফুড ব্লগিংকে নিষিদ্ধ করলেন।
ব্লগিং নিয়ে কী বলছেন রাজু দা?
এই সিদ্ধান্ত নেওয়ার কারণ হিসেবে রাজু দা নিজে বলেন, “যে পরিমাণে ভিড় হচ্ছে এখন, তাতে ব্যবসায়ী সমিতি থেকে পার্টি অফিস সকলেই রেগে যাচ্ছে। তবে তাদের সমস্যা দোকান বা খবর নিয়ে নয়, সমস্যা ব্লগারদের নিয়েই। ভোর থেকে অসংখ্য ব্লগার ভিড় করছে দোকানে। ব্যবসার জায়গাটা নষ্ট করে দিচ্ছে। সমিতি আর পার্টি অফিসের দাদারা আমার পাশেই আছেন। তাঁরা আমাকে প্রথম থেকেই সাপোর্ট করে আসছেন। এর মধ্যে থানা থেকেও ডাক এসেছিল। এখানে এত ভিড় হচ্ছে বলে মানুষজনের যাতায়াত করতে অসুবিধা হয়। ছোট্ট পাঁচ ফুট চওড়া রাস্তা। সেখান দিয়ে ভ্যান, ম্যাটাডোর চলাচল করে। এত ভিড় হলে তো সমস্যা হবেই।”
তিনি আরও বলেন যে এমন কিছু ফুড ব্লগার রয়েছেন যাঁরা কিনা নিজেদের পেজের ভিউ বাড়ানোর জন্য যা খুশি তাই করছেন। খাবার সম্পর্কে জিজ্ঞেস করার বদলে দুয়েকজন এসে তাঁকে বলছে, আমাকে আপনার পরোটা দিন, বাঁধিয়ে রাখব। পুজো করব। যেটা কিনা সত্যিই খারাপ লেগেছে রাজু দার। তাই সমস্ত পরিস্থিতি বিচার করেই তিনি এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। ব্লগারদের জন্য তাই আলাদা ব্যবস্থা করেছিলেন মাঝে। এর আগে রাজু দা নটার সময় দিয়েছিলেন ব্লগারদের। কিন্তু কোনো লাভ হয়নি। তারপর ভিডিয়ো বন্ধ করে দিয়েছিলেন তিনি।