প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: গত রবিবার ছিল স্বামী বিবেকানন্দের ১৬৩ তম জন্মদিবস ও ৪১ তম জাতীয় যুব দিবস। আর এই উপলক্ষে রবিবার সকাল থেকেই রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় পদযাত্রা থেকে শুরু করে নানা ধরনের বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল। আর সমস্ত এলাকায় অনুষ্ঠানের দায়িত্ব অর্পণ করা হয়েছিল জেলাশাসকদের উপর। কিন্তু এই অনুষ্ঠানের মধ্যে দিয়ে ফের ঘটে গেল মারাত্মক ঘটনা। বিবেকানন্দের জন্মদিনে তৃণমূলের যুব দিবসের মিছিলে অংশগ্রহণ না করায় ৪ বছরের শিশুকে রাস্তায় ফেলে একের পর এক আছাড় মারার অভিযোগ উঠল তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে।
ঘটনাটি কী?
গত ১২ জানুয়ারি, রবিবার স্বামী বিবেকানন্দের জন্মদিন উপলক্ষে হাওড়ার বাঁকড়ার রাজীব কলোনিতে শাসক দল তৃণমূলের তরফ এক যুব দিবসের মিছিলের আয়োজন করা হয়েছিল। কিন্তু এলাকার যুব মিছিলে অংশগ্রহণ না করায় দলের ছেলেদের কাছে বেধড়ক মার খেতে হল সেখানকার বাসিন্দা শেখ মইবুল সহ পরিবারকে। এদিন আক্রান্ত শেখ মইবুল অভিযোগ করেন যে তিনি তৃণমূলের যুব দিবসের মিছিলে অংশগ্রহণ না করতে পারায় শেখ জাহিদ নামে এক ব্যক্তি দলবল নিয়ে রাতের বেলা তাঁকে ঘর থেকে টেনে হিঁচড়ে বার করে ব্যাপক মারধর করে। সেই সময় স্বামীকে বাঁচাতে গেলে দলের লোকজন শ্লীলতাহানি করে মইবুলের স্ত্রীকে।
আক্রান্ত ৪ বছরের ছোট্ট শিশু
এমনকী তাঁদের ছোট ৪ বছরের পুত্রসন্তানকেও ঘর থেকে টেনে বার করে দুই পা ধরে রাস্তায় একের পর এক আছাড় মারে দলের লোকজন। বর্তমানে গুরুতর জখম অবস্থায় শিশুটি হাওড়া জেলা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। আক্রান্ত শেখ মইবুল এদিন দাবি করেন গত ১২ জানুয়ারি তৃণমূলের যুব দিবসের মিছিলে যোগদান করতে বেলগাছিয়া গিয়েছিলেন তিনি। সেখানে তৃণমূল নেতা কৈলাশ মিশ্রের নেতৃত্বে হয়েছিল যুব মিছিল। এদিকে ওই একই দিনে হাওড়ায় তৃণমূল নেতা কল্যাণ ঘোষের নেতৃত্বে যে যুব মিছিলের আয়োজন হয় সেখানে আর যোগদান করতে পারেননি তিনি। সেজন্য রবিবার রাত ১০টা নাগাদ তাঁর বাড়িতে চড়াও হয় দলের লোকজন।
পুলিশি ব্যবস্থা নিতে চলেছেন মন্ত্রী অরুপ রায়
জানা গিয়েছে অভিযুক্ত ব্যক্তি শেখ জাহিদ তৃণমূল নেতা কল্যাণ ঘোষের অনুগামী বলে পরিচিত। মইনুলের দাবি, ”আমি খেটে খাই। সারাদিন মিছিল করলে খাব কী? তার জন্য আমাকে ও আমার গোটা পরিবারকে মেরেছে জাহিদ।” তাঁর ছোট ৪ বছরের ছেলেটাকে ঘর থেকে বার করে রাস্তায় একের পর এক আছাড় মারার অভিযোগ তোলেন তিনি। গোটা ঘটনা সম্পূর্ণ বিস্তারিত ভাবে পর্যবেক্ষণের পর পুলিশি ব্যবস্থার আশ্বাস দিয়েছেন রাজ্যের আরেক মন্ত্রী অরূপ রায়। এমনকি তৃণমূলের লোকের এই ধরনের ভয়ংকর ঘটনায় ক্ষুব্ধতা প্রকাশ করেন তিনি।
আরও পড়ুনঃ স্বাধীনতা সংগ্রামীর জাল শংসাপত্র, মিলত পেনশনও! মামলা উঠতেই রিপোর্ট তলব হাইকোর্টের
এবিষয়ে মন্ত্রী অরূপ রায় বলেন, “তৃণমূলের অন্দরে এই ধরণের ঘটনা কেউ সমর্থন করে না। দলের লোক দলের মিছিলে না গেলে তাঁর বিরুদ্ধে দলীয়ভাবে ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে। কিন্তু বাড়ি গিয়ে মারধর করবে এটা একদমই মেনে নেওয়া যায় না। তাই যত শীঘ্র সম্ভব এই ঘটনার বিরুদ্ধে চরম ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”