প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: গতকাল অর্থাৎ শনিবার সংসদের শীতকালীন অধিবেশনে নিজের বক্তব্য পেশের সুযোগ পেয়েছিলেন তমলুকের বিজেপি সাংসদ তথা কলকাতা হাইকোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় (Abhijit Gangopadhyay)। কিন্তু এদিন তাঁর ভাষণের সুরে উঠে এল দেবের স্মৃতি। আসলে এদিন ভাষণের শুরুতেই ইংরেজিতে অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় জানিয়ে দেন যে, তিনি সিদ্ধান্ত নিয়েছেন যে তিনি তবে মাতৃভাষা বাংলায় কথা বলবেন। কারণ সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং মন্ত্রকের উদ্যোগে বাংলা ভাষাকে ধ্রুপদী ভাষার তকমা দিয়েছে। এরপরেই তিনি শুরু করেন বাংলায় তাঁর বক্তব্য।
হিন্দিতে কথা বলার আর্জি অভিজিৎকে
এদিকে সেই ভাষণের মধ্যেই লোকসভায় উপস্থিত হন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তিনি আসার পর কেউ একজন অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়কে তাঁর বক্তব্য হিন্দিতে বলার আবেদন জানান। তাতে অবশ্য অভিজিৎ বাবু কোনো পাত্তাই দেননি বরং উল্টে মোদীর সামনেই বাংলায় ভাষণ চালিয়ে যেতে থাকেন। যদিও তাতে বেশ খুশি হয়েছেন বিজেপি সমর্থকরা। এদিকে অনেকটাই তাঁকে নিয়ে কটাক্ষ করেন। একজন বলেন, ‘অন্যরা হিন্দিতে কথা বলার আর্জি জানালেও আজ সংসদে পুরো বাংলায় কথা বললেন বিজেপি সাংসদ অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়, তাও সেটা প্রধানমন্ত্রীর সামনে। যেটা সম্পূর্ণ অনুচিত।’
নেটিজেনদের প্রতিক্রিয়া
এদিকে অপর একজন প্রশংসার সুরে বলেছেন, ‘অত্যন্ত প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ। ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে যে করে হোক এই বাংলা-বিরোধী বা বহিরাগত তকমা ঝেড়ে ফেলতে হবে বঙ্গ বিজেপিকে। সর্বস্তরে সেই কাজটা করতে হবে।’ যদিও এর আগে ২০১৬ সালে লোকসভায় বাংলায় ভাষণ দিতে গিয়ে একই সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছিল তৃণমূল কংগ্রেসের সাংসদ দীপঙ্কর অধিকারী ওরফে দেবকে। যদিও এই ঘটনায় একাংশই ঘাটালের সাংসদ দেবকে সমর্থন করেছিল।
বাংলা ভাষায় বক্তব্য রাখায় অনেকেই তখন বলেছিলেন যে সংসদে বাংলায় কথা বলার মধ্যে কোনও ভুল নেই। সত্যি কথা বলতে সংসদে বাংলায় ভাষণ শুনে গর্ববোধ হয় বাঙালিদের। এছাড়াও অনেকেই বলেছেন যদি উত্তর ভারতের সাংসদ নিজের মাতৃভাষা হিন্দিতে কথা বলতে পারেন, তাহলে অন্যরা নিজেদের মাতৃভাষায় কেন কথা বলতে পারবেন না। অনেকেই আবার তাঁকে নিয়ে অনেক কুকথাও বলেছিলেন।