প্রীতি পোদ্দার: দুই বছর আগে ২০২২ সালে ২২ জুলাই দক্ষিণ কলকাতার নাকতলার বাড়ি থেকে গ্রেফতার করা হয় রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে। SSC নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ED-র হাতে গ্রেফতার হয়েছিলেন তিনি। শুধু তিনি এক নন, সেই সময় পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ‘ঘনিষ্ঠ’ হিসেবে নাম উঠে আসে অভিনেত্রী তথা মডেল অর্পিতা মুখোপাধ্যায়েরও। তাঁর টালিগঞ্জ এবং বেলঘরিয়ার ফ্ল্যাটে ED চল্লাশি চালিয়ে কোটি কোটি টাকার বেশি নগদ উদ্ধার করেছিল পুলিশ। সঙ্গে ভুরি ভুরি সোনার গয়না সহ অজস্র বৈদেশিক মুদ্রা। সেই কারণে অর্পিতাও গ্রেফতার হয়েছিল ED র হাতে। পাশাপাশি SSC নিয়োগ মামলাতেও CBI এর হাতে গ্রেফতার করা হয়েছিল তাঁকে। তবে সম্প্রতি CBI এর হাতে প্রাথমিক নিয়োগ মামলায় পার্থর গ্রেফতারির আশঙ্কা উঠে এসেছে।
গ্রেফতারির আবেদন মঞ্জুর আদালতের!
সেই সূত্রে গতকাল অর্থাৎ মঙ্গলবার ব্যাঙ্কশাল কোর্টের বিশেষ সিবিআই আদালতে ভার্চুয়ালি পেশ করা হয় রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থকে। সেখানে CBI পার্থকে হেফাজতে নেওয়ার আবেদন জানায়। এছাড়াও প্রাইমারি নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় অন্য অভিযুক্ত অয়ন শীলকেও তদন্তের কারণে হেফাজতে নেওয়ার আবেদন জানানো হয়। অর্থাৎ দুজনকেই প্রাথমিক নিয়োগ মামলায় গ্রেফতারের আবেদন জানিয়েছিল CBI। আর সেই আবেদন মঞ্জুর করে আদালত। এ দিন দুজনকে এই মামলায় ‘শোন অ্যারেস্ট’ দেখানো হল। এর মধ্যে সোমবার রাত থেকে তাঁর বুকে ব্যথা শুরু হয়। তার পর বেশি দেরি না করে শীঘ্রই তাঁকে জেল হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়।
অসুস্থ হয়ে জেল হাসপাতালে ভর্তি পার্থ!
SSC নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ED গ্রেপ্তারের প্রেক্ষিতে সম্প্রতি জামিন চেয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। কিন্তু আইনজীবীদের মতে, ‘যদি সুপ্রিম কোর্ট ওই মামলায় তাঁকে জামিনও দেয় সেক্ষেত্রে জেলমুক্তি হওয়ার সম্ভাবনা একদমই নেই পার্থর। কারণ CBI তাঁকে শ্যোন অ্যারেস্ট দিয়েছে । এ দিন আদালতে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের আইনজীবী মুকুল রোহতগি বলেন, ‘আমার মক্কেল অসুস্থ।’ যদিও সিবিআই-এর আইনজীবী পাল্টা দাবি জানান, পার্থর মেডিক্যাল রিপোর্ট আসলে ২০২৩ সালের। তবে পার্থ চট্টোপাধ্যায় এদিন ভার্চুয়াল শুনানিতেও দাবি করেন, তিনি অসুস্থ। তাঁর বিরুদ্ধে তদন্তে কিছু মেলেনি। কিন্তু তা সত্ত্বেও তাঁকে জেলে রাখা হয়েছে। বিচারক এর পরিপ্রেক্ষিতে জানান, এই গ্রেফতারের আবেদনের ক্ষেত্রে এই মন্তব্যগুলি গ্রাহ্য নয়। তবে জামিনের আবেদনের ক্ষেত্রে উল্লেখ করতে পারেন তিনি।
আরও পড়ুনঃ পুজোয় দ্বিগুণ সামগ্রী, অক্টোবরে কোন রেশন কার্ডে কী কী মিলবে? তালিকা দিল সরকার
প্রসঙ্গত, সম্প্রতি নিয়োগ দুর্নীতি মামলা থেকে শুরু করে গোরু পাচার মামলা, একের পর এক হেভিওয়েট জামিন পেয়েছেন। তালিকায় রয়েছেন মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়, অনুব্রত মণ্ডল, এনামূল হক। তাই সেক্ষেত্রে একাধিক প্রভাবশালীর জামিনের পর CBI এর এই আবেদন যথেষ্টই তাৎপর্যপূর্ণ ভূমিকা তৈরি করেছে রাজনৈতিক মহলে।