‘ক্লাস থ্রি পর্যন্ত পড়াশোনা, ডান হাতের চার আঙুল কাটা!’ প্রদীপ করের মৃত্যুতে CBI তদন্তের দাবি

Published:

Pradip Kar Suicide Case
Follow

প্রীতি পোদ্দার, আগরপাড়া: আর কিছুদিনের মধ্যেই রাজ্যে শুরু হতে চলেছে SIR প্রক্রিয়া। ইতিমধ্যেই জেলায় জেলায় শুরু হয়ে গিয়েছে SIR প্রস্তুতি। এমতাবস্থায় ফের খবরের শিরোনামে উঠে এল NRC বিতর্ক। কিছুদিন আগে আগরপাড়ায় প্রদীপ করের দেহ উদ্ধার (Pradip Kar Suicide Case) আর তার পাশ থেকে উদ্ধার হওয়া নোট নিয়ে রহস্য জোরাল হয়েছে রাজনৈতিক অন্দরে। পুলিশের দাবি, নোটে লেখা ছিল, ‘আমার মৃত্যুর জন্য NRC দায়ী।’ আর এই আবহে পরিবারের সদস্যদের বক্তব্য, প্রদীপ করের নাকি ডান হাতের চারটে আঙুলই ছিল না। সেই কারণেই এবার CBI তদন্তের দাবি জানাল বিজেপি।

ক্ষোভ উগরে দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী

গত সোমবার আগরপাড়ায় ৫৭ বছরের প্রৌঢ় প্রদীপ করের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হওয়া নিয়ে তোলপাড় কাণ্ড শুরু হয় রাজ্য রাজনীতিতে। পাশে মিলেছিল সুইসাইড নোট। যেখানে স্পষ্ট লেখা ছিল, “আমার মৃত্যুর জন্য NRC দায়ী।” আর এই খবর সামনে আসতেই সামাজিক মাধ্যমে পোস্ট করে কেন্দ্র-কমিশনের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এমনকি সাংবাদিক বৈঠকেও এই ঘটনাকে নিয়ে মুখ খুলেছেন তৃণমূলের সর্ব ভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও। পাশাপাশি অভিষেক নিজেও গিয়েছিলেন প্রদীপ করের বাড়িতে। মৃতের পরিজনদের সঙ্গে দেখা করেন তিনি। এমতাবস্থায় রাজনৈতিক তরজা যখন তুঙ্গে তখন আত্মঘাতী প্রৌঢ়ের ভগ্নিপতি প্রকাশ্যে আনলেন এক বিস্ফোরক তথ্য।

কী বলছেন প্রদীপ করের ভগ্নীপতি?

আত্মঘাতী প্রদীপ করের সুইসাইড নোটকে কেন্দ্র করে ভগ্নিপতি উত্তম হাজরা বলেন, “আমি কোনওদিন সেভাবে ওকে লিখতে দেখিনি। তবে ডান হাতেই সব কাজ করতেন। ৮০ সালের আগে একটি দুর্ঘটনায় ডান হাতের চারটে আঙুল কাটা গিয়েছিল। ক্লাস থ্রি-ফোর পর্যন্ত পড়াশোনা করেছিলেন, একটা মশারির দোকান চালাতেন।” এছাড়াও তিনি আরও জানান, “প্রদীপ ভাই ও ভাইয়ের বউয়ের সঙ্গে থাকতেন। পরিবারের কোনও সমস্যা ছিল না বলে জানাচ্ছেন উত্তম। সব সময় হাসি মজাই থাকতেন, এমনকি কিছুদিন আগেও তাঁকে বাড়ির সামনে আড্ডা মারতে দেখেছেন।” আর এই তথ্য প্রকাশ্যে আসতেই উদ্ধার হওয়া সুইসাইড নোট নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করল গেরুয়া শিবির।

প্রশ্ন তুলছে বিজেপি

বিজেপি নেতৃত্ব প্রৌঢ়ের এই আত্মহত্যার ঘটনায় CBI তদন্ত দাবি করেছেন। তাঁদের মতে নিরক্ষর এবং আঙুল কাটা ব্যক্তি কীভাবে এই নোট লিখতে পারে সেই নিয়েও উঠছে প্রশ্ন। এই বিষয়ে প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি তথা কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী সুকান্ত মজুমদারও বলেন, ‘যথাযথ তদন্ত হওয়া প্রয়োজন। সুইসাইড নোটটি কে লিখেছেন তা জানা দরকার। NRC তো চালুই হয়নি। NRC নিয়ে মানুষকে ভয় দেখিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও তাঁর দল।’ এছাড়াও সুইসাইড নোটের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীও।

আরও পড়ুন: দিল্লিতে স্বাধীনভাবে থাকলেও … বাংলাদেশে কবে ফিরবেন জানিয়ে দিলেন শেখ হাসিনা

উল্লেখ্য, প্রদীপের দেহের ময়নাতদন্তের রিপোর্ট এখনও মেলেনি। তিনি আদৌ লিখতে জানতেন কি না, তা নিয়ে তাঁর সংশয় রয়েছে। তবে পরিবারের তরফে জানানো হয়েছে, উনি পানিহাটি বিধানসভার ভোটার। ২০২৪ সালেও ভোট দিয়েছেন। তবে বাবা বাংলাদেশ থেকে এসেছিলেন। এমনকি ২০০২ সালের ভোটার তালিকায় নাম রয়েছে প্রদীপ করের। তাই সেক্ষেত্রে কমিশনের নিয়ম অনুযায়ী প্রদীপের নাম ভোটার তালিকা থেকে বাদ যাওয়ার কোনও কারণ নেই। তাহলে কী কারণে এই মৃত্যু তাই নিয়ে ধোঁয়াশা বাড়ছে।

গুরুত্বপূর্ণ
Join
চাকরির খবর
Join
রাশিফল
Join
খেলার খবর
Join