প্রীতি পোদ্দার: প্রায় দুই বছর পর অবশেষে জেলমুক্ত হলেন বীরভূম এর দোর্দণ্ডপ্রতাপ তৃণমূল নেতা অনুব্রত মণ্ডল। CBI এবং ED-র হাত থেকে রক্ষার পর অবশেষে গতকাল অর্থাৎ সোমবার রাতে তিহাড় জেল থেকে বেরিয়ে আসেন তিনি। বাইরে মেয়ে সুকন্যা মণ্ডলও অপেক্ষায় ছিল বাবার। এরপর তিহাড় জেলের ৩ নম্বর গেট থেকে বের হন অনুব্রত ওরফে কেষ্ট। ফুল দিয়ে স্বাগত জানানো হয় তাঁকে। জেলের চটি ফেলে দিয়ে মেয়ের আনা চটি পরে নেন অনুব্রত। রাতের বিমানে দিল্লি থেকে কলকাতা ফেরেন তিনি। ভোরে দমদম বিমানবন্দরে নেমে গাড়িতে বোলপুর পৌঁছন।
মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে একান্ত বৈঠক অনুব্রতর
আর সেখানে গ্রামের বাসিন্দাদের ঢাক এবং শঙ্খধ্বনির মাধ্যমে বাড়ির আঙিনায় পৌঁছন তিনি। এবং এসে নিজের অফিসে বসেন। সঙ্গে ছিল মেয়ে সুকন্যা মণ্ডলও। বাড়ি ফিরে অতিরিক্ত পরিশ্রমের কারণে এদিন বিশ্রাম নিয়েছেন তিনি। চা এবং ওআরএস খেয়েছেন অনুব্রত। বিকাল নাগাদ রাঙাবিতানে যাওয়ার কথা অনুব্রত মণ্ডলের। মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে একান্ত বৈঠক করার কথা রয়েছে বলেও জোর জল্পনাও বাড়তে থাকে। এত বছর পর এদিন নিচুপট্টির পার্টি অফিসে নিজের চেয়ারে বসে অনুব্রত মণ্ডল প্রায় ঘণ্টাখানেক বৈঠক করেন সেখানকার বিভিন্ন নেতার সঙ্গে।
ভেঙে পড়লেন বাবা মেয়ে!
সেই বৈঠকে কোর কমিটির সদস্য সুদীপ্ত ঘোষও ছিলেন সেখানে। ছিলেন আরও কয়েকজন ঘনিষ্ঠ লোকজনও। কথা চলছিল তাঁদের। সাংবাদিকদের অফিসের ভিতরে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি। কিন্তু অফিসের বাইরে থেকে সাংবাদিকদের ক্যামেরায় ফুটে ওঠে এক অন্য দৃশ্য। হঠাৎই আবেগঘন হয়ে পড়েন মেয়ে সুকন্যা। কিছু একটা বলতে বলতে কেঁদে ফেলছেন তিনি। স্পষ্ট করে কিছু শোনা না গেলেও কারও প্রতি তিনি যে অভিমান করেছেন এবং সেই অভিমানের কারণেই ভেঙে পড়েছেন এটা খুবই স্পষ্ট ছিল।
আর অন্যদিকে ক্যামেরায় মেয়ের এভাবে ভেঙে পড়া দেখে আরও আবেগঘন হয়ে পড়েছে বাবা অনুব্রত। তাঁরও দুচোখ বেয়ে নেমে আসছে জল। এক সময় যিনি কিনা বীরভূমের দোর্দণ্ডপ্রতাপ নেতা হিসাবে পরিচিত ছিলেন, সেখানে তাঁর এমন রূপ দেখে রীতিমত সবাই অবাক। যদিও কান্না নিয়ন্ত্রণের অনেক চেষ্টাই করেছিলেন তিনি। কিন্তু শেষ অবধি তিনি পারেননি তাঁর এই অবস্থা ধরে রাখতে। কিন্তু এসবের মাঝে প্রশ্ন উঠছে আগামীদিনে বীরভূম জেলার রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ কী হবে। তবে কি আবার পুরোনো ফর্মে ফিরবে বীরভূমের কেষ্ট মণ্ডল? নাকি কিছুটা নরম হবেন।