প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: রাজ্যে একের পর এক প্রকল্পে সুযোগ সুবিধা পেয়ে দেওয়ার জন্য একের পর এক মোটা টাকার কাটমানির অভিযোগ উঠে এসেছে। অভিযোগের তীর সবসময় ছিল শাসকদল তৃণমূলের দিকে। এমনকি এই ধরনের ঘটনার পিছনে বরাবর নাম উঠে এসেছে তৃণমূলের বড় বড় নেতার নাম। তার জন্য এমনকি ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিছুদিন আগে আবাস যোজনা প্রকল্পেও উঠে এসেছিল শাসক দলের বিরুদ্ধে কাটমানির অভিযোগ।
কাটমানির অভিযোগ দূর করতে তৎপর দল
বিগত দুই বছর ধরে কেন্দ্রীয় সরকার, আবাস যোজনার খাতে আর্থিক তছরুপের অভিযোগ তুলে দীর্ঘদিন ধরে টাকা না-দেওয়ায় রাজ্য সরকার নিজেই ঠিক করেছিল কেন্দ্রের সাহায্য না নিয়েই নিজেদের টাকাই আবাস যোজনার খাতে জমা দেওয়া হবে। সেই সূত্রেই গত মঙ্গলবার রাজ্য সরকার আবাস প্রাপকদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে প্রথম কিস্তির টাকা দিয়েছে। পরের দিন অর্থাৎ বুধবারও অনেকের অ্যাকাউন্টে টাকা ঢুকেছে। জানা গিয়েছে আরও দুই বা তিন দিনের মধ্যে বাকিদের অ্যাকাউন্টে টাকা চলে আসার কথা। কিন্তু এই টাকা ঢোকানোর নামে কোনো দলীয় কর্মী যাতে কাটমানি না নেয়, সেই ব্যাপারে এবার নিশ্চিত করতে চাইছেন জেলা তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব। লিখিত ভাবে না-হলেও বড় বড় নেতারা বৈঠক করে অথবা ওয়াটস্ অ্যাপ এর মাধ্যমে গ্রুপে পাঠানো হচ্ছে বার্তা।
মাইকিং করে জনসাধারণে প্রচার
এর আগে জেলে যাওয়ার আগে দলের বিভিন্ন বৈঠকে এই নিয়ে হুঁশিয়ারি দিতে দেখা গিয়েছে জেলা তৃণমূলের সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলকে। এবার রাজনগর ব্লক তৃণমূল পার্টির তরফে জানা গিয়েছে, দিন কয়েক আগে ব্লক সভাপতি ব্লকের পাঁচটি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার নেতাদের ডেকে একটি বৈঠক করা হয়। এবং সেখানে বলা হয় আবাস প্রাপকদের থেকে যেন কোনও কাটমানির অভিযোগ সামনে না-আসে। যদি অভিযোগ সামনে আসে তাহলে সংশ্লিষ্ট নেতা বা কর্মীর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা করা হবে। অন্যদিকে ব্লক কোর কমিটির এক তৃণমূল নেতা জানায়, ‘‘আমরা মাইকিং করে এলাকায় এলাকায় উপভোক্তাদের সচেতন হওয়ার জন্য কথা বলা হচ্ছে। বাংলার বাড়ি প্রাপকের অ্যাকাউন্টে যে টাকা সরকার দিয়েছে, সেই টাকা উপভোক্তারই। কেউ টাকা চাইলে সঙ্গে সঙ্গে যেন গ্রাম পঞ্চায়েতকে জানানোর জন্য বলা হয়েছে।
শাসকদলের এমন উদ্যোগকেই বিঁধেছেন বিরোধী দলগুলি। ঠাট্টা করতে ছাড়ছে না সিপিএম, বিজেপি। এই প্রসঙ্গে সিপিএমের জেলা সম্পাদক গৌতম ঘোষ জানান দলের এই উদ্যোগ থেকেই স্পষ্ট হচ্ছে যে এত দিন তৃণমূলের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ সত্যি। তৃণমূল দলটা বিভিন্ন পথে রোজগার করে। সেটা আটকাতে পারবে না-জেনেই দায় এড়ানোর চেষ্টা ওদের নেতাদের।’’