প্রীতি পোদ্দার, চণ্ডীগড়: পঞ্জাবের স্বর্ণমন্দিরে (Golden Temple Amritsar) ফের চলল গুলি। তাও আবার শিরোমণি অকালি দলের প্রধান সুখবীর সিং বাদলকে লক্ষ্য করে। জানা গিয়েছে, আজ অর্থাৎ বুধবার সকালে অমৃতসরের স্বর্ণমন্দিরে প্রার্থনা করতে গিয়েছিলেন সুখবীর সিং বাদল। গেটে ঢোকার মুখেই হঠাৎ তাঁকে লক্ষ্য করে চালানো হয় গুলি। কিন্তু সৌভাগ্যবশত সেই গুলি গায়ে লাগেনি তাঁর। সূত্রের খবর, অল্পের জন্য রক্ষা পেয়েছেন অকালি দলের প্রধান সুখবীর সিং বাদল। সঙ্গে সঙ্গে উপস্থিত লোকজন আটক করে আততায়ীকে। ভয়ংকর এবং চাঞ্চল্যকর পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে সেখানে। তাঁকে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে পিস্তলটিও।
ধীর পায়ে স্বর্ণমন্দিরেই হত্যার পরিকল্পনা
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, সুখবীর সিং কে যে হত্যা করার চেষ্টা করেছিল, তিনি হলেন নারায়ণ সিংহ চৌরা। অমৃতসর থেকে প্রায় ৭৫ কিলোমিটার দূরের গুরুদাসপুর জেলার বাসিন্দা তিনি। আশেপাশে থাকা প্রত্যক্ষদর্শীদের তরফে জানা গিয়েছে, আজ সকালে স্বর্ণমন্দিরে যখন ঢুকছিলেন সুখবীর তখন সেই সময়েই ধীর পায়ে তাঁর দিকে এগিয়ে আসেন এক অপরিচিত যুবক। এর পরেই আচমকা জামার ভিতরে লুকিয়ে রাখা আগ্নেয়াস্ত্রটি বের করে অকালি প্রধানকে লক্ষ্য করে গুলি চালিয়ে দেন। হামলার নেপথ্যে কী কারণ লুকিয়ে রয়েছে, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
অকাল তখত-র শাস্তি ভোগ করতে স্বর্ণমন্দিরে সুখবীর সিং বাদল
সম্প্রতি ২০১৫ সালে ক্ষমতায় থাকাকালীন প্রভাব খাটিয়ে ডেরা সাচ্চা সৌদার প্রধান গুরমিত রামরহিমকে ‘অন্যায় সুবিধা’ পাইয়ে দেওয়ার অভিযোগে এবং ধর্মীয় অপরাধ করার জন্য আগেই শিরোমণি অকালি দলের প্রাক্তন সভাপতি তথা রাজ্যের প্রাক্তন উপমুখ্যমন্ত্রী সুখবীর সিং বাদল-সহ পূর্বতন অকালি মন্ত্রিসভার একাধিক সদস্যকে দোষী সাব্যস্ত করেছিল শিখ সম্প্রদায়ের সর্বোচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন অকাল তখত। অকাল তখত হল শিখ ধর্মাবলম্বীদের সর্বোচ্চ প্রতিষ্ঠান। যার জেরে পরবর্তীতে তাঁদের সকলকে একাধিক শাস্তি দেওয়া হয়। সেই শাস্তি তালিকায় ছিল – শৌচালয় পরিষ্কার, বাসন মাজা ও ধোওয়া, জুতো পরিষ্কার করা ইত্যাদি।
এদিকে সেই শাস্তির আদেশ মানতে মঙ্গলবারের পর আজ অর্থাৎ বুধবার সকালেও ‘সাজা’ খাটতে ভাঙা পায়ে হুইলচেয়ারে চেপে অমৃতসর স্বর্ণমন্দিরে পৌঁছে যান সুখবীর। অকাল তখত-এর নির্দেশ অনুযায়ী, ‘সেবাদার’ হয়ে গুরুদ্বারের রান্নাঘর এবং শৌচালয় পরিষ্কার করার কথা ছিল তাঁর। কিন্তু সেই শাস্তির মধ্যেই আততায়ীর দল যে সুখবীরকে হত্যা করার পরিকল্পনা করছে তা স্পষ্ট উঠে এসেছে এই কাণ্ডের পর।