প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: একেতেই বাংলাদেশে তৈরি হয়েছে অস্থির পরিস্থিতি। তার উপর আবার বঙ্গের শাসকদলের নেতাদের মধ্যেই দেখা যাচ্ছে বিবাদ। এই আবহে খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দলের নেতাদের নিষেধ করেছিলেন মুখ খুলতে। কিন্তু তৃণমূল সুপ্রিমোর সেই নিষেধাজ্ঞাকে কার্যত বুড়ো আঙুল দেখিয়ে ফের তোপ দাগলেন ভরতপুরের তৃণমূল বিধায়ক হুমায়ুন কবীর। উঠে এল বাবরি মসজিদের প্রসঙ্গ।
ঘটনাটি কী?
বিধানসভায় দাঁড়িয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যেদিন বাংলাদেশ সম্পর্কিত কোনো বিষয় নিয়ে প্ররোচনা দিতে নিষেধ করছেন ঠিক সেদিনই বিধানসভার গেটের বাইরে বেরোতে না বেরোতেই সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে ফের বিস্ফোরক মন্তব্য করলেন ভরতপুরের বিতর্কিত তৃণমূল বিধায়ক হুমায়ুন কবীর। এদিন তিনি সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে ঘোষণা করে দিলেন, “মুর্শিদাবাদের বেলডাঙায় নতুন একটি ‘বাবরি মসজিদ’ তৈরি হতে চলেছে। এছাড়াও হুমায়ুনের দাবি, পরের বছর অর্থাৎ ৬ ডিসেম্বর ওই মসজিদের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হবে। নতুন এই মসজিদের পূর্ণাঙ্গ রূপ দিতে তিন থেকে পাঁচ বছর লাগতে পারে।” সম্প্রতি এক ধর্মীয় জলসা থেকে প্রথম এই ঘোষণা করেছিলেন হুমায়ুন। এদিন তাঁর ব্যাপারে ব্যাখ্যা দিলেন।
বাবরি মসজিদ নিয়ে পরিকল্পনা ব্যাখ্যা হুমায়ূনের
এছাড়াও এদিন তিনি দাবি করলেন যে অযোধ্যায় যে বাবরি মসজিদ ছিল তার থেকেও বড় মসজিদ হবে মুর্শিদাবাদে। তবে কোনও রাজনৈতিক দলের নেতা হিসেবে নয়, একজন ইসলাম ধর্মাবলম্বী হিসেবে তিনি এই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন। বেলডাঙ্গায় বাবরি মসজিদ নির্মাণ প্রসঙ্গে হুমায়ুন কবীর বলেন, যেখানে বাবরি মসজিদ তৈরি হবে সেখানে আশি শতাংশ মুসলিমের বাস। ২০২৫ সালে ওই মসজিদের শিলান্যাস করা হবে। কিছু লোককে জায়গা খোঁজার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। কয়েকজন ইঞ্জিনিয়ারকে দায়িত্ব দিয়েছি তাঁরা প্ল্যান করবেন। এখানে রাজ্য সরকার বা তৃণমূলের কোনও বিষয় নেই। মুসলিমদের আবেগকে গুরুত্ব দিয়ে, একটি ট্রাস্টি তৈরি করে মসজিদ তৈরি হবে।”
এদিকে হুমায়ুনের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার বিষয়ে কড়া প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তিনি বলেন, ‘এটাই তো তৃণমূলের কৌশল। এরা মুখে ধর্মনিরপেক্ষতার কথা বলবে, মুখ্যমন্ত্রী বিধানসভায় দাঁড়িয়ে শান্তির বাণী দেবেন, আর দলের বিধায়করা বাবরি মসজিদ তৈরি করবেন। পশ্চিমবঙ্গের হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষ এদের চিনে গিয়েছে।’ তবে হুমায়ূনের বিরুদ্ধে ক্ষুব্ধ বেশ কয়েকজন তৃণমূল নেতা। তাঁর কথায়, ‘অতীতে দলের প্রবীণ নেতাদের প্রকাশ্যে আক্রমণ করার জন্য পার্টি শোকজ করেছিল হুমায়ুনকে। এরপরেও উনি লাগাতার তৃণমূলকে বিড়ম্বনায় ফেলে চলেছেন।”