প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: বিহারে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও তাঁর মা-কে যে অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ করায় গোটা কংগ্রেস দলের উপর ক্ষুব্ধ বিজেপি (BJP) ! তবে সেই ঝাঁঝ থেকে বাদ পড়েনি কলকাতাও। শুক্রবার নেতা-কর্মীদের নিয়ে প্রদেশ কংগ্রেসের কার্যালয়ে ঢুকে পড়েন বিজেপি নেতা রাকেশ সিং। চলে বিক্ষোভ-প্রতিবাদ। ছিঁড়ে দেওয়া হয় কংগ্রেসের একাধিক পোস্টার। কালি লাগানো হয় রাহুল গান্ধীর ছবিতে। টায়ার জ্বালিয়ে চলে প্রতিবাদ। এমতাবস্তায় কংগ্রেসকে সমবেদনা জানাতে গিয়ে নিজেই কংগ্রেস নেতাদের হাতে প্রহৃত বাংলা পক্ষের গর্গ চট্টোপাধ্যায়!
ঘটনাটি কী?
ঘটনা সূত্রে জানা গিয়েছে, বিহারে ভোটার অধিকার যাত্রা থেকে কংগ্রেস কর্মীদের মুখে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও তাঁর মা-কে নিয়ে নানা অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ করা হয়েছিল। যার দরুন সেই ঘটনার প্রতিবাদে গতকাল অর্থাৎ শুক্রবার, সকালে কলকাতার কংগ্রেসের সদর দপ্তরে আচমকা BJP নেতা রাকেশ সিংয়ের নেতৃত্বে পতাকা হাতে হামলা চালায় প্রায় ৫০ জন গেরুয়া শিবিরের কর্মীরা। আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয় কংগ্রেসের পতাকায়। শুধু তাই নয়, কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীর পোস্টারেও কালি ছেটানো হয়। এছাড়াও দপ্তরে থাকা ব্যানার পোস্টার ছেঁড়ার অভিযোগ উঠছে বিজেপির বিরুদ্ধে। শেষে এই উত্তাল পরিস্থিতির মাঝেই রাকেশ সিংয়ের বিরুদ্ধে স্থানীয় থানায় অভিযোগ জানিয়েছে কংগ্রেস। এদিকে ওই একই দিনেই সন্ধ্যে বেলায় কংগ্রেস ভবনে সমবেদনা জানাতে গিয়ে কয়েকজন কংগ্রেস নেতাদের হাতে আক্রান্ত হয়েছেন বাংলা পক্ষের গর্গ চট্টোপাধ্যায় এবং কৌশিক মাইতি।
কংগ্রেসের আক্রমণে আহত গর্গ চট্টোপাধ্যায়
হামলা প্রসঙ্গে বাংলা পক্ষের সম্পাদক গর্গ চট্টোপাধ্যায় তাঁর ফেসবুক প্রোফাইলে জানিয়েছেন যে গতকাল অর্থাৎ শুক্রবার, সন্ধ্যায় প্রদেশ কংগ্রেস অফিস বিধান ভবনে গিয়েছিলেন। সেখানে যখন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি শুভঙ্কর সরকারের সঙ্গে কথা বলছিলেন সেই সময় আচমকা বড় বাজারের কংগ্রেস কাউন্সিলর সন্তোষ পাঠক, প্রদেশ কংগ্রেস সেবা দল সভাপতি রাহুল পান্ডে ও প্রমোদ পান্ডের নেতৃত্বে তাঁর উপর ১৫-২০ জন হিন্দি-উর্দুভাষী দুষ্কৃতী হামলা চালায়। যা নিয়ে বেশ ক্ষুব্ধ গর্গ চট্টোপাধ্যায় এবং শীঘ্রই তাদের শাস্তির দাবি জানিয়েছেন তিনি।
এদিকে এই হামলার ঘটনা নিয়ে কটাক্ষ করেছেন বিজেপি নেতা তরুণজ্যোতি তিওয়ারি। তিনি তাঁর এক্স হ্যান্ডেলে দাবি করেন যে “বাঙালিরা মারধর করলেও গর্গবাবুর কোনও অসুবিধা নেই, কারণ তিনি সেই মারধরে অভ্যস্ত, সবচেয়ে হাস্যকর ব্যাপার হল পশ্চিমবঙ্গ সরকার তাকে নিরাপত্তা দিলেও তবুও তাকে মারধর খেতে হয়েছে।”
আরও পড়ুন: দুর্নীতির বিরুদ্ধে পথে নেমেই হল কাল! বেতন কাটা গেল চাকরিহারা শিক্ষক সুমন বিশ্বাসের
বিজেপির সভাপতিকে খোলা চিঠি প্রদেশ কংগ্রেস অধ্যক্ষের
এদিকে কংগ্রেস দপ্তরে বিজেপির হামলার ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাজ্য বিজেপির সভাপতিকে গতকাল খোলা চিঠি লিখেছেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি শুভঙ্কর সরকার। তিনি লিখেছেন, “আজ সকালে প্রদেশ কংগ্রেসের কার্যালয় খোলা ছিল না। চোর-কাপুরুষের মতো অতর্কিতে ‘বিধান ভবন’- ঢুকে আপনার দলের সমাজবিরোধী কর্মী ও নেতারা যেভাবে কংগ্রেস নেতৃত্বের ছবি নষ্ট করেছে। এবং কংগ্রেসের সম্পত্তি বিনষ্ট করেছে সে বিষয়ে আপনার সুস্পষ্ট ব্যাখ্যার অপেক্ষায় থাকলাম আমরা।” তিনি আরও জানান যে, “এরপরেও যদি রাকেশ সিংয়ের বিরুদ্ধে বিজেপি ব্যবস্থা না নেয়, পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার না করে, তবে রাজ্যজুড়ে কংগ্রেস কর্মীদের ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ কোন পর্যায়ে যাবে, তা আমাদের জানা নেই।”
এদিকে কংগ্রেসের দফতরে আক্রান্ত হওয়া গর্গ চট্টোপাধ্যায় তাঁর নিজের ফেসবুক প্রোফাইলে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন। তিনি লিখেছেন, ‘একাধিক খুনে অভিযুক্ত সন্তোষ পাঠক, একাধিক হিন্দিভাষী পান্ডে নামক বহিরাগত ক্রিমিনালদের ক্রাচ নির্ভর প্রদেশ কংগ্রেসের গান্ধীবাদী সভাপতি শুভঙ্কর সরকারের দম থাকলে সিসিটিভি ফুটেজ প্রকাশ করুন আমার উপর পাঠক, পান্ডে ও তাদের দলবলের আক্রমণের, মিডিয়ার সামনে এক ঝুড়ি মিথ্যা না বলে। আমার সামনে ক্ষমা চাওয়ার নাটক কেন করলেন?’
বাংলা পক্ষের প্রতিষ্ঠাতা গর্গ চট্টোপাধ্যায়ের উপর আক্রমণের পর ক্ষোভে ফেটে পড়েছেন বাংলা পক্ষের সমর্থকরাও। বাংলা পক্ষের এক সমর্থক সুনীল কুমার দাস গর্গ চট্টোপাধ্যায়ের ফেসবুক প্রোফাইলে লিখেছেন, ‘কংগ্রেস ব্যবস্থা না নিলে, আমরা ভোটে কংগ্রেসের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব।’
গুরুত্বপূর্ণ খবরের জন্য | Join Group |
চাকরির খবরের জন্য | Join Hood Jobs |
রাশিফলের জন্য | Join Hood Rashifal |
খেলার খবরের জন্য | Join Whatsapp |