প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: গত বৃহস্পতিবার, শীর্ষ আদালতের রায়ে এক লহমায় প্রায় ২৬ হাজার চাকরি বাতিল (SSC Case) হয়ে গিয়েছে। শেষ পর্যন্ত এসএসসি নিয়োগ মামলায় ‘চালে মিশে কত কাঁকড়’ দীর্ঘ তদন্তেও জানা গেল না। প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খান্নার কলমের এক আঁচড়েই চাকরি গেল ২৫ হাজার ৭৫৩ জন শিক্ষক-অশিক্ষক কর্মীর। খবর ছড়িয়ে পড়তেই শুরু হয়েছে চাকরিহারাদের হাহাকার। হঠাৎ করে চাকরি বাতিল হয়ে যাওয়ায় চারিদিকে শিক্ষক ও অশিক্ষক কর্মচারীর হতাশায় ভেঙে পড়ার ছবি যেন ভেসে উঠেছে। ভবিষ্যৎ এ তাঁদের জন্য কী অপেক্ষা করছে তা নিয়ে বেশ চিন্তিত সকলে। আর এই আবহেই এবার চাকরি বাতিল হওয়ায় প্রতিবাদের ডাক দিল বিজেপি।
বিক্ষোভ কর্মসূচি বিজেপির!
দলীয় সূত্রে খবর পাওয়া গিয়েছে আগামী ৭ এপ্রিল ‘কালীঘাট চলো’ অভিযানের ডাক দিয়েছে BJP যুব মোর্চা। এরপর ১৩ এপ্রিল কলেজ স্কোয়ার থেকে ধর্মতলা পর্যন্ত আরও একটি মিছিল করবে বলে জানিয়েছে বিজেপির যুব মোর্চা। এদিকে আগামী ৭ এপ্রিল সোমবার নেতাজি ইন্ডোরে যোগ্য চাকরিহারাদের সভায় যাবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই কথা তিনি নিজের মুখেই নবান্ন থেকে বৈঠক চলাকালীন জানিয়ে দিয়েছেন। এদিকে আবার একইদিনে প্রতিবাদ কর্মসূচির ডাক দিচ্ছে বিজেপিও। অর্থাৎ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যখন যোগ্য চাকরিহারাদের কথা শুনতে যাবেন নেতাজি ইন্ডোরে তখন কালীঘাট চলো কর্মসূচিতে থাকবেন বিজেপির নেতা কর্মীরা। যার ফলে তুমুল বিক্ষোভের সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।
চাকরিহারাদের সভায় যাবেন মমতা
এদিকে প্রায় ২৬ হাজার চাকরিপ্রার্থীদের অবস্থা চোখে দেখা যাচ্ছে না। আচমকাই ভবিষ্যৎ অন্ধকার হয়ে যাওয়া এবং তার মোকাবিলা কীভাবে হবে, সেই আলোচনা এবং পরবর্তী পদক্ষেপ ঠিক করতে তাই আগামী ৭ তারিখ সমাবেশের আয়োজন করেছেন তারা। এদিন সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের পর নবান্ন থেকে সাংবাদিক বৈঠক করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নানা বিষয় নিয়ে দীর্ঘ আলোচনা চলে। আর সেই বৈঠকে থেকেই তিনি বার্তা দিয়েছেন যে, ‘আমি জানিয়েছি, তাঁদের সভায় যাব। তবে বলছি, মানসিক চাপ নেবেন না, ধৈর্য্য হারাবেন না।’ অন্যদিকে একই সঙ্গে প্রশ্নও তোলেন, ‘কেউ যদি ভালমন্দ করে বসেন, তার দায় কার?’ কিন্তু এদিকে এতজন চাকরিপ্রার্থীর চাকরি চলে যাওয়ার দায়ভার নিতে নারাজ স্কুল সার্ভিস কমিশন। তাতেও সুর চড়িয়েছে বিরোধীরা।
আরও পড়ুনঃ আসছে নতুন ১০ ও ৫০০ টাকার নোট! আগের নোট কি বাতিল? জানাল RBI
নবান্নে এদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় চাকরি চলে যাওয়াতে রাম বামকে দুষছিলেন। কিন্তু মানতে চায়নি বিরোধীরা। এই প্রসঙ্গে শুভেন্দু অধিকারী বললেন, ”এখন উনি অনেকেরই দোষ দিচ্ছেন। কিন্তু সেই কবে ফরওয়ার্ড ব্লক থেকে তৃণমূলে যোগ দেওয়া পরেশ অধিকারীর মেয়েকে চাকরি পাইয়ে দিয়েই প্যানেল ভাঙা শুরু হয়েছিল।” সেইসঙ্গে তিনি মনে করিয়ে দিলেন, প্রাক্তন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ই প্রথম প্রাথমিকে চাকরিতে বেআইনি নিয়োগের বিষয়টি চিহ্নিত করেন, কড়া পদক্ষেপ নেন। এদিকে এসবের মাঝে চাকরিহারারা পড়েছেন উভয় সংকটে। তাঁদের অনেকেই সামনেই বলে ফেলছেন রাজ্য সরকার এই সংকটের জন্য দায়ী। আবার এটাও বুঝতে পারছেন নেতাজি ইন্ডোরের সভাতে না গেলে বিপাকে পড়তে হতে পারে। চিহ্নিত হয়ে যেতে পারেন। সেকারণে কোনও ঝুঁকি নিতে চাইছেন না তাঁরা।
রাজ্য রাজনীতি, বিনোদন থেকে শুরু করে খেলা সংক্রান্ত নানা ধরনের খবরের লেটেস্ট আপডেট পেতে এখনই ফলো করুন আমাদের India Hood Bangla কে।