প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: কলকাতার অন্যতম বড় দুর্গাপুজো হিসেবে বরাবরই বেশ পরিচিত হয়ে আসছে সন্তোষ মিত্র স্কোয়ার (Santosh Mitra Square)। চলতি বছর পুজোর থিম হিসেবে তুলে ধরা হয়েছে ‘অপারেশন সিঁদুর’। AI ভিডিয়োর মাধ্যমে জম্মু ও কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে নৃশংস জঙ্গি হামলার চিত্র ফুটিয়ে তোলা হয়েছে পুজো মণ্ডপে। কিন্তু এই পুজো মণ্ডপ নির্মাণের ক্ষেত্রে শুরু থেকে একাধিকবার বাঁধার মুখে পড়তে হয়েছিল। অবশেষে গত শুক্রবার, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এই পুজোর উদ্বোধন করেন। কিন্তু এখনও সম্পূর্ণ বাধা কাটেনি। এবার সন্তোষ মিত্র স্কোয়ার বিতর্কের হুঙ্কার ছাড়লেন অর্জুন সিং।
AI ভিডিয়ো নিয়ে বিতর্ক সন্তোষ মিত্র স্কোয়ারে
অপারেশন সিঁদুরের এই থিমে ভারত মাতার জয় স্লোগান মেশানো প্রায় ৩ মিনিটের AI ভিডিয়োতে পহেলগাম হামলা থেকে শুরু করে ভারতীয় সেনার অভিযান, সবই ধরা পড়েছে মণ্ডপে। কিন্তু সেই থিম নিয়েই তীব্র বিতর্কের ঝড় উঠেছে শহরে। অভিযোগ, সাধারণ দর্শকদের প্রবেশে নানা ইচ্ছাকৃত বাধা তৈরি করা হচ্ছে। যা নিয়ে ক্ষোভ বাড়ছে স্থানীয় মানুষ ও দর্শনার্থীদের মধ্যে। সন্তোষ মিত্র স্কোয়ারে দুর্গাপুজোর অন্যতম উদ্যোক্তা বিজেপি কাউন্সিলর সজল ঘোষও প্রশাসন এবং পুলিশের বিরুদ্ধে একের পর এক অভিযোগ প্রকাশ্যে আনছেন। জানা গিয়েছে প্রায় ৪০ ফুট চওড়া রাস্তা গার্ডরেল দিয়ে নাকি আটকে দিয়েছে পুলিশ। দর্শনার্থীদের সরু ১৫ ফুট রাস্তা দিয়ে ঘোরানো হচ্ছে। যেখানে মাঠে পৌঁছতে ৭০০ মিটার হাঁটা পথ পরে সেখানে এখন যেতে হচ্ছে প্রায় সাড়ে তিন কিলোমিটার পথ। এবার সেই নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করলেন অর্জুন সিং।
কী বলছেন অর্জুন সিং?
স্থানীয় রিপোর্ট অনুযায়ী, গতকাল অর্থাৎ রবিবার সন্তোষ মিত্র স্কোয়ারের দুর্গাপুজো নিয়ে মাঠে নামেন বিজেপি নেতা অর্জুন সিং। সংবাদমাধ্যমে তিনি স্পষ্ট হুঁশিয়ারি সুরে প্রশাসনের উদ্দেশে জানিয়ে দেন যে, ‘ওই পুজো যদি বন্ধ হয়, তা হলে বাংলায় আগুন জ্বলবে।’ এখানেই তিনি থামেননি, অর্জুন সিং আরও বলেন যে, ‘এই পুজোয় সিঁদুরের লড়াই তুলে ধরা হয়েছে। মা-বোনেদের সম্মান রক্ষার কথা বলা হয়েছে। অথচ আজ সিঁদুরেরও রাজনীতি করা হচ্ছে। সজল ঘোষ বুক চিতিয়ে পুজো করুন। হাজার হাজার মানুষ তাঁর পাশে আছে।’ বরাবরই কলকাতার প্রথম সারির এই পুজো দর্শনার্থীদের ভিড় টানে। তবে গতবার যেমন পুলিশের সঙ্গে সংঘাতের ঘটনায় শিরোনামে এসেছিল লেবুতলা পার্কের পুজো, এই বছরও পরিকল্পনা করে সন্তোষ মিত্র স্কোয়ারের পুজো ভণ্ডুল করার চেষ্টা করা হচ্ছে বলে অভিযোগ।
আরও পড়ুন: চারার দাম ৫০ টাকা, বছরে আয় ৫ লক্ষ! তেজপাতার চাষেই ভাগ্য বদল বাংলার কৃষকদের
প্রসঙ্গত, সন্তোষ মিত্র স্কোয়ারের পুজো নিয়ে উদ্যোক্তা ও পুলিশের সংঘাত যখন ক্রমেই বাড়ছে, তখন মহম্মদ আলি পার্কের পুজো নিয়েও একাধিক জটিলতা তৈরি হয়েছিল। যদিও সেই জট এখন কেটে গিয়েছে। প্রায় ২০ ঘণ্টা বন্ধ থাকার পর, অবশেষে দর্শনার্থীদের জন্য খুলে দেওয়া হল পুজো মণ্ডপ। এই প্রসঙ্গে পুলিশের প্রশংসা করে মহম্মদ আলি পার্কের পুজো উদ্যোক্তা অশোক ওঝা স্পষ্ট জানিয়ে দেন, যে প্রবলেমটা হয়েছিল সেই প্রবলেমটা শেষ হয়ে গেছে। আমাদের মণ্ডপ দর্শনার্থীদের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে। কিছু আমাদের মিসআন্ডারস্ট্যান্ডিং হয়েছিল, পুলিশ বরঞ্চ হেল্প করছে এখন। আমাদের কমিটিতে পুলিশের ওপর কোনও অভিযোগ নেই।