ইন্ডিয়া হুড ডেস্ক: দীর্ঘদিন ধরে যকৃতে ক্যানসার নিয়ে ভুগছিলেন বসিরহাটের তৃণমূল সাংসদ হাজি নুরুল ইসলাম। একাধিকবার ভর্তি করা হয়েছিল হাসপাতালে। কিন্তু শেষ রক্ষা হল না, গতকাল অর্থাৎ বুধবার দুপুর ১ টা বেজে ১০ মিনিট নাগাদ বারাসতের বাড়িতে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন সাংসদ। তাঁর বয়স হয়েছিল ৬১ বছর। গোটা এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আসে। এক্স হ্যান্ডেলে শোকপ্রকাশ করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।
রাজনৈতিক জীবনে হাজি নুরুল ইসলাম!
রাজনৈতিক জীবনে ২০০৯ সালে বসিরহাট লোকসভা কেন্দ্র থেকে তৃণমূলের টিকিটে দাঁড়িয়ে প্রথম বার সাংসদ হন নুরুল। এর পরে লোকসভা নির্বাচনে অর্থাৎ ২০১৪ সালে বসিরহাটের পরিবর্তে মুর্শিদাবাদের জঙ্গিপুর থেকে প্রার্থী করা হয় তাঁকে। কিন্তু সে বার ভোটে হেরে যান তিনি। পরে ২০১৬ সালের বিধানসভা ভোটে নুরুলকে হাড়োয়ায় টিকিট দেয় দল। ২০১১ সালে মাত্র ১২০০ ভোটে জেতা হাড়োয়া আসন নুরুল জেতেন ৪৩ হাজারেরও বেশি ভোটে সেবার। এর পরের বিধানসভা ভোটেও হাড়োয়া থেকে জিতে বিধায়ক হিসেবে নির্বাচিত হয়েছিলেন তিনি। শেষে ২০২৪ সালে ফের বসিরহাটের তৃণমূলের প্রার্থী হিসেবে নাম লেখান তিনি।
শোকপ্রকাশ করলেন রেখা পাত্র
যদিও ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে সবচেয়ে বড় ইস্যু ছিল ‘সন্দেশখালি’। যা নিয়ে বিজেপিও বেশ ফায়দা লুটছিল। নুরুলের বিরোধী পক্ষ হিসেবে বিজেপি সামনে এনেছে রেখা পাত্রকে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এমনকি রেখা পাত্রকে শক্তিস্বরূপা বলেছিলেন। পরিস্থিতি দেখে বোঝাই যাচ্ছিল যে এবার হয়তো বসিরহাটে গেরুয়া ঝড় উঠবে কিন্তু তারপরও বসিরহাট লোকসভা আসন পায়নি বিজেপি। কয়েক লক্ষ ভোটের ব্যবধানে বিজেপি প্রার্থী তথা সন্দেশখালি আন্দোলনের মুখ রেখা পাত্রকে হারিয়ে জয়ী হন হাজি নুরুল। রাজনীতির ময়দানে দ্বন্দ্ব বিতর্ক থাকলেও সমানভাবে শোকপ্রকাশ করেছেন রেখা পাত্র।
এদিন তিনি জানান, “ প্রত্যেকটা মৃত্যু খুবই দুর্ভাগ্যজনক। আমরা সমবেদনা জানাই। দীর্ঘদিন অসুখে ভুগছিলেন। চেয়েছিলাম, সুস্থ হয়ে উঠুন। এরকমভাবে চলে যাবেন, ভাবিনি। তাঁর থেকে আমার অনেক রাজনীতি শেখার ছিল। আমরা সত্যিই দুঃখিত।” পরমুহূর্তে তাঁকে পুনরায় রাজনীতির ময়দানে লড়তে দেখা যাবে কিনা জানতে চাওয়ায় তিনি বলেন, “সাধারণ মানুষের জন্য আমার লড়াই ছিল। কে প্রার্থী হবেন, সেটা আমার দল ও সাধারণ মানুষ ঠিক করবেন। তাঁরা চাইলে আবার নামব।”