প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: গত বছরের লোকসভা নির্বাচনে সন্দেশখালি কাণ্ড রীতিমত তোলপাড় করে তুলেছিল রাজ্য রাজনীতি। রেশন দুর্নীতির তদন্তে ‘প্রভাবশালী’ প্রাক্তন তৃণমূল নেতা শেখ শাহজাহানের বিরুদ্ধে ইডি আধিকারিক ও আধাসেনা জওয়ান আসলে তাঁদের উপর তৃণমূলের লোকেরা চড়াও হয়। তার পর তাঁদের বিরুদ্ধে আন্দোলনে সেখানকার সাধারণ মানুষ। একের পর এক অভিযোগ উঠে আসে। কখনও এলাকার অনেক কৃষিজমি জোর করে দখল করে নিচ্ছে শাসক দল তো আবার কখনও মাছের ভেড়ি বানানোর অভিযোগ ওঠে শাহজাহান এবং তাঁর সঙ্গীদের বিরুদ্ধে। এমনকি মহিলাদের নির্যাতন নিয়েও উঠে এসেছে নানা প্রসঙ্গ। সেই অভিযোগ কাটতে না কাটতেই ফের খবরের শিরোনামে সন্দেশখালি।
ঘটনাটি কী?
গত বছর ১৫ এপ্রিল সন্দেশখালির মাঝেরপাড়ার এক গৃহবধূ সন্দেশখালি থানায় গণধর্ষণের অভিযোগ দায়ের করেন। পুলিশের কাছে সেই নির্যাতিতা জানান, সন্দেশখালি ২ ব্লক তৃণমূল সভপতি দিলীপ মাইতির নেতৃত্বে দলের দুষ্কৃতীরা মাথায় বন্দুক ধরে তাঁকে জোর করে গণধর্ষণ করা হয়েছে । কিন্তু অভিযোগ উঠেছে গোটা ঘটনা পুলিশের কাছে FIR করার পরেও ঘটনার তদন্তে পুলিশ কোনো তৎপরতা দেখায়নি। শেষে বাধ্য হয়েই এবার পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ তুলে বিচারপতি জয় সেনগুপ্তের এজলাসে মামলা দায়েরে করলেন নির্যাতিতা।
নিষ্ক্রিয় ভূমিকা পুলিশের
জানা গিয়েছে গত সোমবার, উত্তর ২৪ পরগনার সন্দেশখালির এক তৃণমূল নেতা ও তাঁর দলের লোকদের বিরুদ্ধে গণধর্ষণের অভিযোগ তুলে কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন সন্দেশখালির ওই তরুণী। মামলা দায়ের করার অনুমতি দেন বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত। আজ ছিল সেই মামলার শুনানি। এদিন নির্যাতিতা আদালতে জানান “অভিযুক্তেরা আমাকে বারবার মামলা তুলে নেওয়ার জন্য হুমকি দিচ্ছেন। কিন্তু পুলিশ কিছু করছে না। উল্টে বুক ফুলিয়ে এলাকায় ঘুরে বেড়াচ্ছে অভিযুক্তরা। বরং উল্টে প্রাণ সংশয়ে ভুগছি আমি। এমনকি মেরে ফেলার হুমকিও আসছে।”
গোটা ঘটনার পর্যবেক্ষণ করে বিচারপতির নির্দেশ, নির্যাতিতার বাড়িতে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে পুলিশকে নিরাপত্তা দিতে হবে। এছাড়াও রাজ্যের আইনজীবীর তরফে এদিন আদালতে জানানো হয়েছে যে, ঘটনায় তদন্ত অনেকটা এগিয়েছে। চার্জশিট দেওয়ার প্রক্রিয়াও শুরু হয়েছে। তবে বিচারপতি এদিন নির্দেশ দেন আগামী সোমবার এই মামলার পরবর্তী শুনানি রয়েছে। এবং ওই দিনেই পুলিশকে তদন্তের অগ্রগতির রিপোর্ট জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি।