প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: রাজ্যে একের পর এক দুর্নীতির মামলার জটে প্যাঁচ খেতে খেতে রীতিমত প্রাণ ওষ্ঠাগত হয়ে উঠেছে শাসকদলের বেশ কিছু নেতার। রেশন দুর্নীতি, নিয়োগ দুর্নীতি, কয়লা পাচার কাণ্ড থেকে গোরু পাচার কাণ্ড কোনোটাই বাদ যাচ্ছে না। এদিকে কিছুদিন আগেই আবার কয়লা এবং গরু পাচার কাণ্ডের অন্যতম অভিযুক্ত বিকাশ মিশ্রকে শ্লীলতাহানির অভিযোগে গ্রেফতার করে কালীঘাট থানার পুলিশ। তাঁর বিরুদ্ধে নিজের দাদার মেয়েকে যৌন হেনস্থা করার অভিযোগ উঠে আসে। এইমুহুর্তে আদালতের নির্দেশে এখন পুলিশ হেফাজতে রয়েছেন বিকাশ।
এদিন পুলিশ হেফাজতে নিয়ে যাওয়ার সময় হঠাৎ করেই, প্রিজন ভ্যানে বিকাশ মিশ্র সাংবাদিকদের সামনে চিৎকার করে বলতে শুরু করেছিল, “আমাকে মারার চক্রান্ত চলছে। আমাকে মারার চক্রান্ত চলছে। আমি মুখ খুললে সরকার পড়ে যাবে।” খানিকটা উত্তেজিত হয়ে চিৎকার করতে থাকেন বিকাশ। কিন্তু পুলিশরা কোনো সময় অপচয় না করে সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে নিয়ে দ্রুত চলে যায় প্রিজন ভ্যানে। যার ফলে রাজ্য সরকারের প্রতি সন্দেহের আঁচ আরও বাড়ছিল। আর সেই রেশ থাকতে না থাকতেই এবার বড় জয় পেল বিকাশ।
বড় জয় বিকাশের!
এমনিতেই কয়লা পাচারকাণ্ডে অন্যতম অভিযুক্ত হিসেবে তালিকায় রয়েছে বিনয় মিশ্রের ভাই বিকাশ মিশ্র। গরু পাচার মামলাতেও রয়েছে তাঁর নাম। যার জন্য ২০২১ সালে তাঁকে গ্রেফতার করে CBI। পরে যদিও আদালত একাধিক শর্ত দিয়ে জামিনে ছাড়া দেন বিকাশকে। জামিনের সময় বিকাশকে আদালত শর্ত দিয়েছিল যে, কলকাতার বাইরে তিনি যেতে পারবে না এবং প্রতি সপ্তাহে CBI অফিসে হাজিরা দিতে হবে। কিন্তু জামিনের এই দুই শর্ত কোনো ভাবেই মানতে চাননি বিকাশ। তাই আদালতের এই দুই শর্তকে চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ হয়েছিলেন বিকাশ।
শাস্তির পরিমাণ অনেকটাই কমাল উচ্চ আদালত
আর আজ সেই মামলায় কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অরিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় এবং বিচারপতি শুভেন্দু সামন্তর ডিভিশন বেঞ্চ বড় নির্দেশ দেয়। বিকাশের ওপর আরোপ করা দুই শর্তগুলি খানিক শিথিল করল কলকাতা হাইকোর্ট। এদিন দুই বিচারপতির বেঞ্চ জানায়, কলকাতার বাইরে যেতে পারবেন তিনি। তবে কোনওভাবেই আদালতের কাজ ছাড়া পশ্চিম বর্ধমান যেতে পারবেন না তিনি। এমনকি রাজ্যের বাইরেও বেরোতে পারবেন না। পাশাপাশি প্রতি সপ্তাহের বদলে মাসে একবার CBI এর অফিসে হাজিরা দিতে হবে। যার ফলে বিকাশ মিশ্রের শাস্তির পরিমাণ কিছুটা হলেও লাঘব করা হয়েছে।