প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: ২০২২ সালের ২৩ জুলাই দীর্ঘ তল্লাশি এবং জিজ্ঞাসাবাদের পর পার্থ চট্টোপাধ্যায় (Partha Chatterjee) ও অর্পিতাকে গ্রেফতার করেছিল ED। তল্লাশির সময় অর্পিতার টালিগঞ্জের ফ্ল্যাট এবং বেলঘরিয়ার বাড়ি থেকে নগদ বহু কোটি টাকা উদ্ধার হয়। উদ্ধার হয় বিদেশি মুদ্রা এবং সোনার গয়নাও। আর এর পর ED এবং CBI এর একের পর এক তদন্তে উঠে আসে বহু নেতার নাম। আর এই তদন্তের আবহে এবার গ্রেফতার হল পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের এক ‘ঘনিষ্ঠ’।
ঘটনাটি কী?
সূত্রের খবর, প্রাথমিকে নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় গতকাল অর্থাৎ সোমবার রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষা মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ‘ঘনিষ্ঠ’ সন্তু গঙ্গোপাধ্যায়কে গ্রেফতার করেছে CBI। অভিযোগ উঠেছে যে প্রাথমিকে নিয়োগ দুর্নীতিতে তিনি ‘এজেন্ট’ হিসাবে কাজ করতেন। বিভিন্ন সময়ে এই সন্তুর কাছেই নাকি জমা পড়েছে নিয়োগ দুর্নীতির কোটি কোটি টাকা। এর আগে ইডির চার্জশিটেও নাম ছিল সন্তুর। তল্লাশি চালানো হয়েছে তাঁর বাড়িতেও। এমনকি, তাঁকে ডেকে পাঠিয়ে জিজ্ঞাসাবাদও করেছে CBI। তবে উল্লেখযোগ্য বিষয় হল এই সন্তুর সঙ্গে শাসকদলের অনেক নেতার খুব ভালো সম্পর্ক ছিল।
নিয়োগ দুর্নীতিতে এজেন্টের ভূমিকায় ছিল সন্তু!
একটা সময়ে সন্তু নাকি তৃণমূলের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। এবং যার ফলে সন্তুর সঙ্গে হুগলির বহিষ্কৃত তৃণমূল নেতা কুন্তল ঘোষ, শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায় এবং নিয়োগকাণ্ডে অভিযুক্ত হুগলির ব্যবসায়ী অয়ন শীলদেরও যোগাযোগ ছিল। আর এনারাই জেরার মুখে পড়ে সন্তুর নাম বলে দেন। নিয়োগ দুর্নীতির তদন্তে অয়ন শীলকে ইডির জেরার সময়েই প্রথম উঠে এসেছিল সন্তুর নাম। তিনি স্বীকার করেন, পার্থের ‘ঘনিষ্ঠ’ সন্তুর সঙ্গে যোগাযোগ ছিল তাঁর। ২০১২ এবং ২০১৪ সালের টেট পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে নিয়োগের জন্য ৪৫ কোটি টাকা তাঁকে দিয়েছিলেন বিভিন্ন জেলার এজেন্টরা। এর মধ্যে ২৬ কোটি ৩০ লক্ষ টাকা অয়ন দিয়েছিলেন এই সন্তুকে।
অন্যদিকে আরেক অভিযুক্ত শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায় দাবি করেন, বেহালার সন্তু এবং হুগলির কুন্তল, দু’জনেই পার্থের ‘ঘনিষ্ঠ’ ছিলেন। অয়ন এবং পার্থের মধ্যে তাঁরা সেতু হিসাবে কাজ করতেন। পৌঁছে দিতেন চাকরিপ্রার্থীদের অর্থ। এরপর CBI পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে গ্রেপ্তারের পর তদন্ত করেই সন্তু গঙ্গোপাধ্যায়ের সঙ্গে তাঁর যোগের ব্যাপারে নিশ্চিত হন। আর এদিকে সোমবারই নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় জামিন পেয়েছেন পার্থের বান্ধবী অর্পিতা মুখোপাধ্যায়। কলকাতার বিচার ভবন তাঁকে জামিন দিয়েছে। কিন্তু এখনও জেলবন্দী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। ED এবং CBI এর দুই মামলাই এখনও বিচারাধীন। বহু বার জামিনের আবেদনও করেছেন পার্থ। কিন্তু তা মঞ্জুর হয়নি।