প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: বছর ঘুরলেই ২৬ এর বিধানসভা নির্বাচন। হাতে গুনে গুনে বাকি আর মাত্র কয়েকটা মাস। তাই সময় নষ্ট না করে এখন থেকেই ভোট বাজারের হাওয়া বুঝে ময়দানে নেমে পড়েছে রাজনৈতিক দলগুলি। সাধারণ মানুষের মন জুগিয়ে চলতে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করছেন নেতা মন্ত্রীরা। এমতাবস্থায় বিপুল চাপে ফেঁসেছে শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস। ভোটের সময় যত এগিয়ে আসছে ততই যেন সরকারের দুর্নীতিকাণ্ড প্রকাশ্যে আসছে। আর এবার প্রকাশ্যে এল মৎস্য দপ্তরে (Fishery Department) নিয়োগ দুর্নীতির অভিযোগ।
ব্যক্তিগত বন্ডে আপাতত জামিনে চন্দ্রনাথ
রেশন দুর্নীতি, গরুপাচার কাণ্ড, কয়লাপাচার কাণ্ড থেকে শুরু করে বালি দুর্নীতি এবং নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে বেশ কলঙ্কিত পশ্চিমবঙ্গ সরকার। ইডি এবং সিবিআই-এর তৎপরতায় উঠে আসছে একের পর এক বিস্ফোরক তথ্য। আর এই আবহে রাজ্যে আরও এক দুর্নীতির অভিযোগ উঠে এল। এবং সেই ঘটনায় নাম জড়াল নিয়োগ দুর্নীতির মামলায় অন্যতম অভিযুক্ত রাজ্যের কারা এবং ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পমন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিনহা। কিছুদিন আগেই প্রাথমিক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় তাঁর বাড়িতে ইডি তল্লাশি চালিয়ে নগদ ৪১ লক্ষ টাকা এবং একটি মোবাইল ফোন বাজেয়াপ্ত করা হয়েছিল। যা নিয়ে বিস্তর আলোচনা হয়েছিল। শেষে ইডির বিশেষ আদালত ১০ হাজার টাকার ব্যক্তিগত বন্ডে একাধিক শর্ত দিয়ে চন্দ্রনাথ সিনহার জামিনের আবেদন জানান। আর এবার উঠে এল মৎস্য দপ্তরে নিয়োগ দুর্নীতির অভিযোগ।
মৎস্য দপ্তরে নিয়োগ দুর্নীতির অভিযোগ!
জি ২৪ ঘণ্টার রিপোর্ট অনুযায়ী, গোপালচন্দ্র দাস নামের এক এজেন্টের বয়ান থেকে মৎস্য দফতরে নিয়োগে অনিয়মের সন্ধান পেয়েছে সিবিআই। এই গোপাল তাঁর বয়ানে সিবিআইকে জানিয়েছেন, ইতিমধ্যেই ধৃত নীলাদ্রি ঘোষকে তিনি চাকরিপ্রার্থীদের থেকে টাকা তুলে দিয়েছিলেন। তাঁদের কাউকে কাউকে এসএসসি গ্রুপ সি-তে ভুয়ো নিয়োগপত্র দেওয়া হয়েছিল। সেই সঙ্গে অনেককে ভুয়ো নিয়োগপত্র দেওয়া হয়েছিল মৎস্য দফতরে। টাকার অঙ্ক ছিল ১ লাখ ২০ হাজার। জানা গিয়েছে, মৎস্য দফতরে যাঁদের নিয়োগপত্র দেওয়া হয়েছিল তাঁরা ১০ মাস চাকরি করেছেন। বদলে তাঁরা নগদে বেতন পেয়েছেন। তার পর তাঁদের চাকরি চলেও গিয়েছে।
আরও পড়ুন: গ্রেফতার হরিদেবপুর গণধর্ষণে মূল অভিযুক্ত দেবাংশু বিশ্বাস! আজই তোলা হবে আদালতে
CBI এর নজরে মৎস্য দফতরের কর্তারা
এজেন্ট গোপালচন্দ্র দাস তাঁর বয়ানে সিবিআইকে আরও জানিয়েছেন যে, নীলাদ্রি ঘোষের সঙ্গে তাঁর পরিচয় তাপস মণ্ডলের সূত্রে। তাপস এবং কুন্তল ঘোষের মধ্যে সেতুবন্ধন করতেন এই নীলাদ্রি। গোপাল তাঁর বয়ানে দাবি করেছেন, প্রথমে SSC-তে নিয়োগ করা হবে ঠিক হয়েছিল। তার পর বলা হয়, এসএসসিতে এখন ফাঁকা নেই, মৎস্য দফতরে ঢুকিয়ে দেওয়া হচ্ছে। যাঁরা টাকা দিয়েছিলেন চাকরির জন্য, তাঁদের অনেকেই তাতে রাজি হয়ে সেখানে ঢুকে যান। আর সেই সমস্ত ঘটনা ঘটেছিল তৎকালীন মৎস দপ্তরের মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিনহার আমলে। তাই এজেন্টের এই বয়ানের উপর ভিত্তি করে সিবিআইয়ের নজরে এখন মৎস্য দফতরে রয়েছেন কর্তারাও।