প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: পূর্ব ভারতের অন্যতম বড় সমবায় ব্যাঙ্ক হল কাঁথি। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে তৃণমূল ও বিজেপির মধ্যে টানাপোড়েন থাকার কারণে মাঝে তিন বছর নির্বাচন হয়নি। এরপর সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচনের জন্য কেন্দ্রীয় বাহিনীর উপস্থিতিতে ভোট করানোর নির্দেশ দেয় সর্বোচ্চ আদালত। সেই মতো গত ১৫ ডিসেম্বর কাঁথি সমবায় ব্যাঙ্কে ভোটাভুটি হয়। সমবায় ব্যাঙ্কের নির্বাচনে মোট আসন সংখ্যা ছিল ১০৮টি। আর এই নির্বাচনে তৃণমূল, বিজেপি ও অন্য রাজনৈতিক দলের সমর্থনে মোট ৩৮১ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। মোট ভোটার সংখ্যা ছিল ৮০ হাজার ৪৮০ জন। কিন্তু সেই নির্বাচনকে ঘিরেও ধুন্ধুমার পরিস্থিতি।
জানা গিয়েছে গত ১৫ ডিসেম্বর কাঁথি সমবায় ব্যাঙ্কের নির্বাচনে ১০৮টি আসনের মধ্যে তৃণমূল সমর্থিত প্রার্থীরা ১০১টি আসনে জিতেছিলেন। আর সেই নির্বাচনে বিজেপি সমর্থিত প্রার্থীরা জিতেছিলেন মাত্র ছ’টিতে। এর পরে ওই নির্বাচন নিয়ে শঙ্কর বেরা-সহ ৫১ জন এই মামলা দায়ের করেন হাই কোর্টে। অভিযোগ উঠেছিল যে, ওই নির্বাচনে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মানা হয়নি। এবং তৃণমূলের বিরুদ্ধে ভোটে অনিয়ম, কারচুপি এবং বুথ দখল করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন মামলাকারীরা। আর সেই কারণে তাঁরা হাই কোর্টে ওই নির্বাচন বাতিলের আবেদন জানান।
নিয়মিত বেঞ্চেই হবে মামলার শুনানি!
আর এই আবেদনের বিরুদ্ধে গতকাল অর্থাৎ সোমবার হাই কোর্টে বিচারপতি শম্পা দত্ত পালের এজলাসে রাজ্য সরকারের আইনজীবী জেনারেল কিশোর দত্ত সওয়াল করেন, মামলাকারীদের অভিযোগ ভিত্তিহীন। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মেনে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করেই নির্বাচন হয়েছে। এমনকি ভোটারদের নিরাপত্তার ব্যবস্থা, সিসিটিভি বসানোর মতো পদক্ষেপও করা হয়েছে। আর এই অভিযোগে বিচারিক ওই মামলাটি জরুরি ভিত্তিতে শুনানি করতে রাজি হয়নি। বিচারক শম্পা দত্ত পাল জানিয়েছেন যে নিয়মিত বেঞ্চেই হবে মামলার পরবর্তী শুনানি। এদিকে কাঁথি সমবায় ব্যাঙ্কের নির্বাচনে বিজেপি লড়াই করেনি বলে দাবি জানান রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী।
নির্বাচন লড়া নিয়ে বিস্ফোরক দাবি শুভেন্দু-র!
জানা গিয়েছে, গতকাল শুভেন্দু অধিকারী বলেন, ‘‘এই নির্বাচনে বিজেপি লড়াই করেনি। ভুল তথ্য দেওয়া হয়েছে। দলের কোনও প্রতীক নেই। দলের অভ্যন্তরীণ নির্দেশ ছিল যে তৃণমূলের বিরুদ্ধে যে থাকবে তাঁকে চাইলে সাহায্য করা হবে।’’ সেই সঙ্গে তাঁর মন্তব্য, ‘‘যদি বিজেপি নির্বাচনের ময়দানে নামত তাহলে দল লড়ার মতো করেই লড়ে। আতিপাতি ভাবে নয়। যেমন চলতি বছরের লোকসভায় দুটোতে লড়ে হারিয়ে দিয়েছি শাসদলকে। এবং পূর্ব মেদিনীপুরে ৪৬ শতাংশ ভোট পেয়েছি।’’
এদিকে নির্বাচনে যে বিজেপি লড়ছে এমনটাই জানিয়েছিল প্রাক্তন তৃণমূল সাংসদ শিশির অধিকারী। তিনি সেইসময় দাবি করেছিলেন যে, ‘‘বিজেপি জিতবে। এই সমবায়ে বিজেপির জয় নিয়ে সকলেই আশাবাদী। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে এই সমবায়ের ভোট হচ্ছে। তবে সব বুথে তো কেন্দ্রীয় বাহিনী নেই। তাই সেখানে অশান্তি করার চেষ্টা চালিয়েছে তৃণমূল।’’