প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: আজ তৃতীয়া, পুজোর শুরু হতে হাতে বাকি মাত্র আর কয়েকটা দিন। এখন থেকেই চারিদিকে যেন পুজো পুজো রব। এদিকে গত শনিবার থেকে কলকাতার বিভিন্ন দুর্গাপুজোর মণ্ডপ উদ্বোধন শুরু করে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রবিবারও দক্ষিণ কলকাতার বেশ কিছু পুজোমণ্ডপের উদ্বোধন করেন তিনি। যোধপুর পার্ক সর্বজনীন, ৯৫ পল্লী, সেলিমপুর পল্লী, বাবুবাগান, বান্ধন সম্মিলনীর পুজোমণ্ডপের উদ্বোধন করেন তিনি। এমতাবস্থায় আলিপুরদুয়ারে (Alipurduar) পুজো উদ্বোধন নিয়ে হল বড় বিপত্তি। উদ্বোধনী সংগীত হিসেবে মাইকে বাজানো হল আযান।
মন্দিরে বাজছে আযান!
বিজেপি কর্মীর পোস্ট করা এক ভিডিও অনুযায়ী, সম্প্রতি আলিপুরদুয়ারে দুর্গাপুজোর উদ্বোধনের সময় মন্দিরের মধ্যে মাইক থেকে বাজানো হচ্ছিল আযান। জানা গিয়েছে, শামুকতলা পুলিশ ও জেলা ব্লক প্রশাসনের উপস্থিতিতে বক্তব্য চলাকালীনই আযানের সুর ভেসে উঠে মাইকে কিন্তু মুখ্যমন্ত্রীকে খুশি করার জন্য সেই মাইক বন্ধ করেনি প্রশাসনিক আধিকারিকরা। আর তাতেই ক্ষিপ্ত স্থানীয়রা। এদিকে ধর্ম নিয়ে এইরূপ ছিনিমিনি করা নিয়ে শামুকতলা দুর্গাবাড়ি পূজা কমিটি ও স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে শুরু হয় এক জরুরী বৈঠক। আর তাতেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় যে মন্দির চত্বর সনাতনী রীতি মেনে পুরোহিত দ্বারা গঙ্গা জল ও গোবর দিয়ে শুদ্ধিকরণ করা হবে।
বাংলাদেশের ছায়া বাংলার মাটিতে?
এদিকে সোশ্যাল মিডিয়ায় এই ভাইরাল ভিডিও পোস্ট হতেই কমেন্ট বক্সে উপচে পড়েছে নানাবিধ মন্তব্য। অনেকেই এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে। সনাতনী ধর্মের প্রতি এইরূপ অনাচার মেনে নিতে পারেনি অনেকে। অন্যদিকে আবার এই ঘটনাকে হিন্দুদের বাড়াবাড়ি বলেও কটাক্ষ করেছে। গত বছর, বাংলাদেশে নমাজ আর আযানের সময়ে দুর্গাপুজোর গানবাজনা বন্ধ রাখার কথা বলা হয়েছিল । শুধু তাই নয় আওয়ামি লিগ সরকারের পতনের পর থেকেই ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের উপর নির্যাতনের অভিযোগ উঠে এসেছিল বাংলাদেশে। এবার সেই চিত্রই দেখা যেতে চলেছে বাংলার মাটিতে।
আরও পড়ুন: পুজোর আগেই বড় সুখবর! রেল কর্মীদের দেওয়া হবে মোটা টাকার বোনাস
প্রসঙ্গত, দুর্গাপুজো মণ্ডপে আজান নিয়ে ২০১৯ সালেও বিতর্ক তৈরি হয়েছিল। আর সে বার বিতর্কে জড়িয়ে পড়েছিল বেলেঘাটার একটি পুজো। সেখানকার দুর্গাপুজোর মণ্ডপে থিম সঙ্গীত হিসেবে কেন সংস্কৃত স্তবকের সঙ্গে আজান বাজানো হয়েছে এই নিয়ে বিতর্ক গড়ায় আদালত পর্যন্ত। যদিও পুজো কমিটির কর্তারা জানিয়েছিলেন, কমিটি দ্বারা নির্বাচিত ‘সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি’ থিমকে মাথায় রেখেই ওই আজান ব্যবহৃত হয়েছে মণ্ডপে।