প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: রাজ্যে নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ড নিয়ে একের পর এক অভিযোগ উঠে এসেছে কলকাতা হাইকোর্টে। টাকার বিনিময়ে যোগ্য ব্যক্তিদের চাকরি ছিনিয়ে তা হস্তান্তর করা হয়েছিল অযোগ্য ব্যক্তিদের হাতে। যার দরুন জেলের ঘানি টানতে হয়েছে শাসকদলের (TMC) একাধিক হেভিওয়েট নেতাদেরকে। যার মধ্যে অন্যতম হলেন প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। আর এই আবহে এবার আরও এক অভিযোগ উঠে এল শাসকদলের বিরুদ্ধে। অর্থের বিনিময়ে এবার নাকি দলের শিক্ষক সংগঠনের পদ ‘বিক্রি’ হচ্ছে। যা নিয়ে শোরগোল পরে গেল দলের অন্দরে।
অর্থের বিনিময়ে এবার পদ কেনার অভিযোগ উঠল।
সূত্রের খবর, কাজী মনোয়ার ফারুক নামে শাসকদলের এক শিক্ষক নেতা তথা বেলডাঙ্গা রামেশ্বরপুর হাই স্কুলের প্রাক্তন প্রধান শিক্ষক তৃণমূলের সর্বোচ্চ নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু এবং তৃণমূলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সীকে এক অভিযোগ পত্র পাঠান। যেখানে তিনি সংগঠনের রাজ্য সভাপতি বিজন সরকারের দিকে আঙুল তুলে অভিযোগ জানিয়েছিলেন যে দলের (TMC) অন্দরে টাকার বিনিময়ে পদ বিক্রি হচ্ছে। শুধু তাই নয় তিনি এও অভিযোগ করেন যে টাকার বিনিময়ে বিজেপি, সিপিএম, কংগ্রেসের সঙ্গে যুক্ত শিক্ষকদের সংগঠনের রাজ্য স্তরে জায়গাও দেওয়া হয়েছে।
অভিযোগপত্রে কী জানানো হয়েছে?
এদিকে কাজী মনোয়ার ফারুক নামে ওই শিক্ষকের অভিযোগপত্র নিয়ে ব্যাপক ‘অস্বস্তি’ তৈরি করেছে তৃণমূলের শিক্ষক সংগঠনের অন্দরে। এই অভিযোগপত্রে তিনি আরও বলেন যে যাঁরা দিনের পর দিন শরীরের ঘাম রক্ত ঝরিয়ে শিক্ষক সংগঠন করলেন, তাঁদের বাদ দিয়ে অন্য রাজনৈতিক দলের লোকেদের পদ দেওয়া হচ্ছে। যাঁরা মঞ্চ থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নামে কটূক্তি করেছেন, তাঁদের জামাই আদর করে রাজ্য স্তরের সংগঠনের পদ দেওয়া হয়েছে।’’
এখানেই থামেননি তিনি, আরও জানিয়েছেন যে, ‘‘সংগঠনের সভাপতি পদ বিজন সরকারের হাতে যাওয়ার পর সমাজমাধ্যমে নানা গ্রুপ খোলা হয়েছে। তার কোথাও পুরনো শিক্ষকনেতাদের জায়গা হয়নি। এমন নেতাকে জায়গা দেওয়া হয়েছে, যিনি আরজি কর কাণ্ডের সময় রাত দখলে নেমে রাজ্য সরকারের নামে বাজে কথা রটিয়ে বেরিয়েছে। তাই এ বিষয়ে অভিযোগ জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রী, শিক্ষামন্ত্রী ও দলের শীর্ষনেতাদের চিঠি দিয়েছি। আশা করব তাঁরাই এর বিহিত করবেন।’’
আরও পড়ুনঃ ‘লক্ষ লক্ষ টাকা দিয়ে অ্যাওয়ার্ড কিনেছে’, রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক দাবি
কী বলছেন সংগঠনের সভাপতি বিজন বাবু?
এদিকে কাজী মনোয়ার ফারুক এর অভিযোগপত্রকে সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন বলে দাগিয়ে দিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। উল্টোদিকে সংগঠনের সভাপতি বিজন অবশ্য জানিয়েছেন যে, ‘‘দলীয় নেতৃত্বের সুপারিশক্রমে জেলা ও রাজ্য কমিটি গঠিত হয়েছে । রাজ্যের হাজার হাজার শিক্ষকের মধ্যে এক জন প্রমাণ ছাড়া কী বলছেন, তা নিয়ে না ভেবে সংগঠনকে ভাঙবেন না। বরং ২০২৬ সালের বিধানসভায় রাজ্য জুড়ে চতুর্থবারের জন্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে মুখ্যমন্ত্রী করতে প্রচারে ঝাঁপিয়ে পড়া উচিত সকলের।’’












