প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: সামনেই ২৬ এর বিধানসভা নির্বাচন। আর সেই নির্বাচনকে কাজে লাগিয়ে এবার ভোট যুদ্ধের ময়দানে নামল শাসকদল থেকে শুরু করে বিরোধীদল। তাই এইমুহূর্তে রাজ্যে ভোটের হাওয়া বেশ গরম। এমতাবস্থায় ফের রাজ্যে দুর্নীতির তদন্ত শুরু করল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট। গতকাল পুর নিয়োগ দুর্নীতি মামলার তদন্তে রাজ্যের দমকলমন্ত্রী সুজিত বসুর (Sujit Bose) অফিসে হানা দিয়েছিল ইডি আধিকারিকরা। পাশাপাশি দক্ষিণ দমদম পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান তথা কাউন্সিলর নিতাই দত্তের বাড়িতেও যায় ইডি।
সুজিত বসুর অফিসে ইডি হানা!
গতকাল অর্থাৎ শুক্রবার সকাল সকাল কলকাতার একাধিক জায়গায় হানা দিয়েছিল ইডি। পুর নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় সুজিত বসুর অফিসে হানা দিয়েছিল ইডি। প্রায় ২০ ঘণ্টা ধরে চলে সেই তল্লাশি অভিযান। রিপোর্ট অনুযায়ী, রাত দেড়টা নাগাদ সুজিত বসুর অফিস থেকে বেরিয়ে যায় ইডি। অফিস ছাড়াও সুজিত বসুর ছেলের রেস্তোরাঁতেও তল্লাশি চালায় ইডি। সেখানে প্রায় ২২ ঘণটা ধরে চলে অভিযান। এরপর ভোররাতে বেশ কিছু নথি বাজেয়াপ্ত করে সেখান থেকে বেরিয়ে যান আধিকারিকরা। জানা গিয়েছে এই দুর্নীতি মামলায় সুজিত বসুর চাটার্ড অ্যাকাউন্টেন্টের বাড়িতেও তল্লাশি চালায় ইডি। এখানেই ক্ষান্ত হননি আধিকারিকরা। পরে আবার দক্ষিণ দমদম পুরসভার চেয়ারম্যান নিতাই দত্তের বাড়ি ও গোডাউনেও দীর্ঘক্ষণ তল্লাশি চালায় ইডি।
রেস্তোরাঁয় টাকার উৎস নিয়ে উঠছে প্রশ্ন
গত বছর অর্থাৎ ২০২৪ সালের ১২ জানুয়ারি পুরনিয়োগ দুর্নীতি মামলার তদন্তে লেকটাউনে সুজিতের দু’টি বাড়ি এবং দফতরে তল্লাশি অভিযান চালিয়েছিল ইডি। সেদিন ১৪ ঘণ্টা ধরে তল্লাশি চালিয়ে বেশ কিছু নথি এবং সুজিত বসুর মোবাইল ফোন বাজেয়াপ্ত করেছিলেন অফিসাররা। ২০২৩ সালের অক্টোবরেও দক্ষিণ দমদম পুরসভার উপ পুরপ্রধান নিতাই দত্তর বাড়িতে তল্লাশি চালিয়েছিল ইডি। সেই সময় নিয়োগ দুর্নীতি সংক্রান্ত নথি উদ্ধার হয়েছিল। নিতাইকে পরে সিজিও কমপ্লেক্সে তলব করা হয়েছিল। আর এবারেও নির্বাচনের আগে আরো একবার তদন্তে নামল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। ইডি জানতে চাইছে, ২০১৬ থেকে ২০২০ সালের মধ্যে সুজিত বসুর রেস্তোরাঁ, তাঁর ছেলের রেস্তোরাঁয় যে টাকা ঢালা হয়েছে, সেই টাকা এসেছে কোথা থেকে।
আরও পড়ুন: ডাক্তারি পড়ুয়াকে জঙ্গলে নিয়ে গিয়ে গণধর্ষণ! আরজি করের ছায়া দুর্গাপুরে
এদিকে, ইডির সক্রিয়তা নিয়ে দমকলমন্ত্রী সুজিত বসু বলেন, ‘‘এরা প্রত্যেক বারই ভোট এলে এটা করে থাকে। বিশেষ করে যারা বিরোধী দলের সঙ্গে যুক্ত, তাদের বাড়ি, অফিস সব জায়গায় যায়। আমার রেস্তরাঁতেও গিয়েছে। এটা নতুন নয়। এর আগেও রেড করা হয়েছে। কিছু তো পায়নি। আসলে ভোটের আগে চাপ তৈরি করতে এটা করা হচ্ছে।’’ সেক্ষেত্রে চুপ থাকেনি বিরোধীরা। বিজেপির প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার বলেছেন, “এত বড় দুর্গাপুজো, এত অনুষ্ঠান, নিজের জন্মদিনে মুম্বই থেকে শিল্পী এনে অনুষ্ঠান, এত টাকা কোথা থেকে আসছে, জনগণকে জবাব দিতে হবে তো।”