মৃত্যুদণ্ড নয়, অভয়ার ধর্ষকের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড! রায় ঘোষণা শিয়ালদা আদালতের

Published on:

Updated on:

sanjay roy

প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: গত শনিবার আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ এবং হাসপাতালের তরুণী চিকিৎসকের ধর্ষণ এবং খুনের মামলায় সঞ্জয় রায়কে দোষীসাব্যস্ত করার পরে আজ অর্থাৎ সোমবার দুপুরে সাজা ঘোষণা করলেন শিয়ালদা অতিরিক্ত দায়রা আদালতের বিচারক অনির্বাণ দাস। দুপুর পৌনে তিনটে নাগাদ আদালতের তরফে জানিয়ে দেওয়া হল আরজি কর কাণ্ডে ধৃত অভিযুক্ত সিভিক ভলান্টিয়ার সঞ্জয় রায়কে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হল। তবে সেই রায়ের বিরুদ্ধে সঞ্জয়ের কাছে সুযোগ আছে উচ্চতর আদালতে যাওয়ার।

গত ৯ আগস্ট আর জি কর হাসপাতালের চারতলায় সেমিনার রুম থেকে উদ্ধার করা হয়েছিল দ্বিতীয় বর্ষের মহিলা চিকিৎসকের দেহ। উত্তাল হয়ে উঠেছিল গোটা রাজ্য রাজনীতি। পরিস্থিতি এতটাই ভয়ংকর হয়ে উঠেছিল যে সেদিনই উত্তর কলকাতার টালা থানায় তাঁকে ধর্ষণ ও খুনের মামলা দায়ের হয়েছিল। ঠিক এক দিনের মাথায় কলকাতা পুলিশের তৎপরতায় এবং সিসিটিভি ফুটেজ এর তথ্য অনুযায়ী মূল অভিযুক্ত হিসাবে গ্রেপ্তার হয় সিভিক ভলান্টিয়ার সঞ্জয় রায়। কলকাতা পুলিশ এর তদন্ত চলাকালীনই হাই কোর্টের নির্দেশে সেই তদন্তের ভার চলে যায় CBI এর হাতে। কিন্তু তিন মাসের মধ্যে চার্জশিট পেশ করে কলকাতা পুলিশের দাবিতেই সহমত হয়ে CBI জানিয়ে দেয়, আরজি করে তরুণী চিকিৎসক ধর্ষণ ও খুনে সঞ্জয় রায়ই ছিলেন একমাত্র অভিযুক্ত।

সন্দীপ ঘোষ ও অভিজিৎ মণ্ডলকে গ্রেফতারও কোনো তথ্য পায়নি CBI!

কিন্তু CBI এর দাবি মানতে নারাজ নির্যাতিতার পরিবার সহ রাজ্যের একাধিক সাধারণ নাগরিক। তাঁদের সকলের মতে এই ধর্ষণ এবং খুন সঞ্জয় একা কিছুতেই করতে পারে না। আর সঙ্গে জড়িত আছে একাধিক প্রভাবশালী মন্ত্রী এবং বিশিষ্ট ব্যক্তিগণ। এর মাঝে আরজি করের প্রাত্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ ও টালা থানার তৎকালীন ওসি অভিজিৎ মণ্ডলকে তথ্য ও প্রমাণ লোপাট, ষড়যন্ত্রের অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছিল। কিন্তু তাঁদের বিরুদ্ধে যথাযথ প্রমাণ না মেলায় CBI তিন মাসের মধ্যে চার্জশিট পেশ করতে পারেনি। তাই তাঁরা জামিনে মুক্তি পান। শেষে ধৃত সঞ্জয় রায়ের বিরুদ্ধে CBI এর দায়ের করা চার্জশিটের ভিত্তিতে মামলায় বিরুদ্ধে চার্জ গঠন হয়। তারই ভিত্তিতে শুরু হয় সঞ্জয় রাইয়ের বিচারপর্ব।

ঘোষণা করা হল সঞ্জয়ের সাজা

টানা দু’মাসের বিচারপর্বের শেষে গত শনিবার শিয়ালদা কোর্টের বিচারক অনির্বাণ দাস ধৃত সঞ্জয় রায়কে ১৬০ পাতার ‘অর্ডার’ দিয়ে আদালত দোষী সাব্যস্ত করে। তবে সেদিন আদালতে সঞ্জয় বার বার নিজেকে নির্দোষ বললেও বিচারপতি তাঁর মন্তব্য শুনতে চাননি। এমনকি সেদিন সঞ্জয়ের সাজাও ঘোষণা করেননি। আশা করা হচ্ছিল গত শনিবারই আরজি কর মামলার রায়দান হবে। তবে সেদিন শিয়ালদা আদালতের বিচারপতি অনির্বাণ দাস রায়দান স্থগিত রাখেন।

ইন্ডিয়াহুডের বিশেষ প্রতিবেদন

দোষী সাব্যস্ত হওয়ার পর সঞ্জয় আদালত কক্ষ থেকে ফের একবার বলেছিল যে, সে নির্দোষ। তাঁকে ফাঁসানো হচ্ছে। এমনকি কিছু IPS অফিসারদের দিকেও আঙুল তুলেছিল সঞ্জয়। পাশাপাশি সঞ্জয় এও বলেছিল যে, তাঁর গলায় রুদ্রাক্ষের মালা রয়েছে। সে ধর্ষণ করলে সেই মালা অক্ষত কেন? সঞ্জয়ের এই বয়ান শুনে বিচাপতি দাস বলেন যে, তুমি দোষী প্রমাণিত। আর তোমার শাস্তিও হবে। আগামী সোমবার তোমার সাজা ঘোষণা হবে। সেদিন তুমি নিজের পক্ষও রাখতে পারবে।

এল যাবজ্জীবন কারাদন্ডের সাজা

অবশেষে সেই সোমবার এল। আর বিচারক অনির্বাণ দাসও তাঁর সাজা ঘোষণা করলেন। আজ তাই সকাল থেকেই কোর্ট চত্বর বেশ নিরাপত্তায় ঢেকে রাখা হয়েছিল। দুপুর সাড়ে ১২ টার পরে বিচারসভা বসলেও তখনও ঘোষণা করা হয়নি সঞ্জয়ের সাজা। অবশেষে দুপুর পৌনে তিনটে নাগাদ জানানো হয় সঞ্জয়ের সাজা। তবে মৃত্যুদণ্ড নয়, সঞ্জয়কে আমৃত্যু কারাদণ্ডের সাজা শোনানো হয়েছে। 

গুরুত্বপূর্ণ খবরের জন্যJoin Group
চাকরির খবরের জন্যJoin Hood Jobs
রাশিফলের জন্যJoin Hood Rashifal
খেলার খবরের জন্যJoin Whatsapp
সঙ্গে থাকুন ➥