শ্বেতা মিত্র, চুঁচুড়াঃ হুগলিতে (Hooghly) হাহাকার। না জেলার মানুষের হাহাকার নয়, বিজেপিতে হাহাকার। হুগলি সাংগঠনিক জেলায় তৃণমূল নয়, নিজেদের বিরুদ্ধেই লড়ছে বিজেপি। গত মঙ্গলবার হুগলির চুঁচুড়ার ঘড়ির মোড়ে বিজেপির পক্ষ থেকে একটি প্রতিবাদী সভার আয়োজন করা হয়েছিল। দুর্গাপুরে মেডিক্যাল পড়ুয়া ধর্ষণের ঘটনার প্রতিবাদেই সেই সভার আয়োজন করা হয়েছিল। আর সেখানে সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদী ভাষণের পর, নিজেদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদী হয়ে উঠলেন বিজেপি দলের মহিলা সদস্যরা।
সভা শেষে হুগলি জেলার বিজেপির মহিলা সদস্যরা অভিযোগ করেন যে, জেলার জেনারেল সেক্রেটারি সুরেশ সাউ তাঁদের বঞ্চনা করছেন। তাঁদের সভায় ডেকে ভিড় জমালেও, কখনও মঞ্চে ডাকা হয়না। এই নিয়ে বিজেপির মহিলা সদস্যাদের কান্নাকাটিও করতে দেখা যায়। যদিও সুরেশ সাউ তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তাতেই কী বিতর্ক থেমে গেল? না এটা হয়ত শুরু …
অন্তর্কলহে হার লকেটের
উল্লেখ্য, ২০১৯ এর লোকসভা নির্বাচনে হুগলি কেন্দ্র থেকে জয়ী হন বিজেপির মহিলা মোর্চার সদস্যা তথা অভিনেত্রী লকেট চ্যাটার্জি। এরপর তাঁকে ২০২১ সালে হুগলির চুঁচুড়া কেন্দ্রের বিধানসভা নির্বাচনে প্রার্থী করা হয়। যদিও তিনি তৃণমূল প্রার্থী অসিত মজুমদারের কাছে হেরে যান। এরপরেই খেলা ঘুরে যায়। বিজেপির একাংশ বিজেপির বিরুদ্ধেই থুড়ি লকেটের বিরুদ্ধে হয়ে যায়।
২০২৪ এর লোকসভা নির্বাচনে ফের সেই আসনেই প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন লকেট চট্টোপাধ্যায়। কিন্তু এ বার রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে হর স্বীকার করতে হয় তাঁকে। ২০২৪-এ শুধু রচনাই নয়, জিতেছিল বিজেপির একাংশ। কারণ তাঁরা সেবার লকেটকে প্রার্থী হিসেবে মেনে নিতে পারেনি। এমনকি নির্বাচনে লকেটের হয়ে প্রচার করা তো দূরের কথা, বিরুদ্ধে প্রচার করা হয়েছিল।
চুঁচুড়ায় বিজেপির প্রার্থী কে?
তবে এখানেই শেষ নয়। আগামী বছর হতে চলা বিধানসভা নির্বাচন নিয়েও হুগলি সাংগঠনিক জেলায় বিজেপির অন্দরে চলছে চাপা অসন্তোষ। হুগলি জেলার চুঁচুড়ার বিজেপির চার মাথাই চাইছেন দল যেন তাঁকে প্রার্থী করে। এমনকি একজন তো হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন যে, তাঁকে প্রার্থী না করা হলে তিনি হয় নির্দল প্রার্থী হব। এছাড়াও আরও দুজন নিজেদের মতো ঘুঁটি সাজাচ্ছেন আগামী নির্বাচনে দলীয় প্রার্থী হওয়ার জন্য।
দেখে হাসছে তৃণমূল
তবে বিজেপির এই অন্তরকলহ দেখে দূরে দাঁড়িয়ে হাসছে তৃণমূল। তাঁরা এটুকু বুঝে গিয়েছে যে, এবার তাঁদের বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াই করার দরকার নেই। বিজেপি নিজেরাই লড়াই করে ভোট ভাগাভাগি করে নেবে।