প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: রাজ্যে নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় যেখানে জামিনের জন্য মরিয়া হয়ে আদালতে লড়াই করছেন প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় (Partha Chatterjee) ঠিক তখনই একের পর এক বাধার মুখে পড়ে চলেছেন তিনি। আর এবার আরও বড় বিপাকে পড়লেন পার্থ। কারণ এবার তাঁর সমস্ত কুকান্ডের রাজসাক্ষী দিতে চলেছে তাঁর জামাই কল্যাণময় ভট্টাচার্য। ইতিমধ্যে সেই আবেদন মঞ্জুর করেছে কলকাতার বিশেষ PMLA আদালত। আজ অর্থাৎ মঙ্গলবার ব্যাঙ্কশাল আদালতের দ্বিতীয় জুডিশিয়ার ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে প্রাথমিক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় রাজসাক্ষী হিসাবে গোপন জবানবন্দি দিলেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের জামাই কল্যাণময় ভট্টাচার্য। এই আবহে এবার জামাইয়ের বয়ানে উঠে এল শ্বশুরের বিরুদ্ধে চাঞ্চল্যকর তথ্য।
সিবিআইয়ের মামলায় জেলবন্দি পার্থ
২০২২ সালের ২৩ জুলাই নাকতলার বাড়ি থেকে পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে রাজ্যে নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় গ্রেফতার করেছিল ইডি। এর ঠিক এক মাসের মাথায় অর্থাৎ ২৩ আগস্ট তাঁর জামাই কল্যাণময় ভট্টাচার্যকে সমন পাঠায় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। কিন্তু প্রথমে দু-দু’বার তলবের পরেও হাজিরা দেননি পরে ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে মার্কিন মুলুক থেকে কলকাতায় এসে হাজিরা দিয়েছিলেন কল্যাণময় ভট্টাচার্য। ইতিমধ্যে মানিক ভট্টাচার্য, কুন্তল ঘোষ-সহ নিয়োগ দুর্নীতি মামলার একাধিক অভিযুক্ত জামিন পেয়েছেন। কিন্তু ইডির মামলা থেকে জামিন পেলেও সিবিআইয়ের মামলার কারণে এখনও জেলবন্দি পার্থ।
বাবলি চট্টোপাধ্যায়ের নামে ট্রাস্ট
এদিকে প্রাথমিকে নিয়োগ দুর্নীতিতে কল্যাণময় ভট্টাচার্য এবং তাঁর অধীনে কয়েকটি সংস্থাকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট জমা দিয়েছে ইডি। ইতিমধ্যেই ওই মামলার বিচার প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গিয়েছে। কল্যাণময় তাঁর লিখিত বয়ানে জানান যে, ২০১৭ সালে শাশুড়ি বাবলি চট্টোপাধ্যায়ের মৃত্যুর পর তাঁর নামে একটি ট্রাস্ট তৈরি করেন পার্থ। সেই ট্রাস্টের চেয়ারম্যান করা হয় পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের কন্যা তথা কল্যাণময়বাবুর স্ত্রী সোহিনী চট্টোপাধ্যায়কে। এবং সেই ট্রাস্টের নামে পশ্চিম মেদিনীপুরের পিংলায় ১৫ কোটি টাকা ব্যয় করে তৈরি করা হয় স্কুল। সেই স্কুল পরিচালনার ভার ছিল কল্যাণময়বাবুর ২ মামার ওপরে। এছাড়াও এই ট্রাস্টের টাকায় একাধিক জমি কেনা হয়েছিল।
আরও পড়ুনঃ এক বছরে ১৮.৫ কোটি পর্যটকের আগমন, পর্যটন কেন্দ্রে ভারত সেরা বাংলা! জানাল সরকার
বয়ান জমা জামাইয়ের
শ্বশুর পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের নির্দেশেই তিনি ‘বাবলি চ্যাটার্জি মেমোরিয়াল ফাউন্ডেশন ট্রাস্টের’ অন্যতম সদস্য হয়ে ছিলেন। এবং পার্থের স্ত্রী বাবলি মারা যাওয়ার পরে তাঁদের আত্মীয় এবং ঘনিষ্ঠদের নিয়ে ট্রাস্টটি গড়া হয়। ট্রাস্টের মাধ্যমে জমি কেনা এবং একটি স্কুল গড়া হয়েছিল। এছাড়াও নিয়োগ দুর্নীতির কালো টাকা পার্থের প্রয়াত স্ত্রীর নামে ট্রাস্ট এবং কল্যাণময়ের নানা সংস্থার মাধ্যমে সাদা করা হয়েছিল। তিনি আরও বলেছেন, এই দুর্নীতিতে জড়ানোর কোনও ইচ্ছা প্রথম থেকেই তাঁর ছিল না। শুধুমাত্র প্রভাবশালী শ্বশুরমশাইয়ের নির্দেশে স্কুল পরিচালনার দায়িত্ব নিয়েছিলেন তিনি।
রাজ্য রাজনীতি, বিনোদন থেকে শুরু করে খেলা সংক্রান্ত নানা ধরনের খবরের লেটেস্ট আপডেট পেতে এখনই ফলো করুন আমাদের India Hood Bangla কে।