প্রীতি পোদ্দার, মালদা: চিকিৎসার উন্নতি হয়নি একদমই। তাই বাধ্য হয়েই এবার দিল্লি ছুটতে হচ্ছে নাগরাকাটায় আক্রান্ত বিজেপি সাংসদ খগেন মুর্মুকে (Khagen Murmu)। চোখেও সমস্যা, ঝাপসা দেখছেন তিনি তাই আর চোয়াল নাড়াতে পারছেন না। মঙ্গলবার আগরতলা তেজস আনন্দবিহার রাজধানী এক্সপ্রেসে দিল্লি রওনা হন সাংসদ খগেন মুর্মু। একমুখ দাড়ি এবং পরনে ছিল গোলাপি পাঞ্জাবি এবং সাদা পাজামা। হুইলচেয়ারে বসেই ট্রেনে উঠলেন সাংসদ। সঙ্গে রয়েছেন তাঁর স্ত্রী মঞ্জু কিস্কু।
গুরুতর আহত খগেন মুর্মু
উল্লেখ্য, গত ৬ অক্টোবর উত্তরবঙ্গের নাগরাকাটায় বিপর্যস্ত এলাকা পরিদর্শনে গিয়ে আক্রান্ত হয়েছিলেন বিজেপি সাংসদ খগেন মুর্মু এবং বিধায়ক শঙ্কর ঘোষ। তড়িঘড়ি তাঁদের শিলিগুড়ি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। চোট খুব একটা গুরুতর না থাকায়, প্রাথমিক চিকিৎসার পর বিধায়ক শঙ্কর ঘোষকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু খগেন মুর্মুর অবস্থা ছিল বেশ জটিল। তাঁর চোখের নীচের হাড় ভেঙে গিয়েছে। এক্স রে রিপোর্টে স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে, চোখের কয়েক সেন্টিমিটার নীচের স্পর্শকাতর একটি হাড় ভেঙে গিয়েছে। আর কিছুটা হলে চোখটাও ভীষণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারত বলে জানিয়েছিল চিকিৎসকরা। এখনও চোখে সমস্যা, ঝাপসা দেখছেন এবং চোয়াল নাড়াতে পারছেন না। তাই এবার চিকিৎসার জন্য দিল্লি যাচ্ছেন তিনি।
দিল্লিতে চিকিৎসার জন্য গেলেন খগেন!
গত শনিবার রাতে শিলিগুড়ির নেওটিয়া হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়েছিলেন খগেন মুর্মু। এরপর শিলিগুড়ি থেকে সড়কপথে বাড়ি ফেরেন মালদা উত্তরের বিজেপি সাংসদ। তখনও সাংসদের স্ত্রী জানিয়েছেন চোখে সে ঝাপসা দেখছেন, চোয়াল ও দাঁতে তাঁর ব্যথা রয়েছে এখনও এবং কথা বলা নিষেধ, তরল খাবারের পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকেরা। জানা গিয়েছে প্রথমে ওষুধের সাহায্যে বিষয়টি ঠিক করানোর চেষ্টা চালানো হয়। চার সপ্তাহ পর্যবেক্ষণে রাখা হয় তাঁকে। কিন্তু সেক্ষেত্রে কোনো উন্নতি হয়নি। তাই আগেই অপারেশন করে পাত বসানো হতে পারে বলে চিকিৎসকরা আভাস দিয়ে রেখেছিলেন। রিপোর্ট অনুযায়ী সুচিকিৎসার জন্য দিল্লির পথে ছুটলেন মুর্মু দম্পতি। গতকাল দুপুর ৩টে নাগাদ আগরতলা-দিল্লী রাজধানী এক্সপ্রেস ট্রেনে রওনা দিয়েছেন তাঁরা।তাঁকে ট্রেনে তুলে দিতে যান জেলার বিজেপি নেতারা।
আরও পড়ুন: NRC আতঙ্কে আগরপাড়ায় ‘আত্মঘাতী’ এক! বিজেপিকে দুষলেন মমতা
কী বলছেন খগেন মুর্মু?
মালদহ টাউন স্টেশনে পৌঁছে বিজেপি সাংসদ খগেন মুর্মু বলেন,‘‘কথা বললে কষ্ট হচ্ছে। এখনও তরল খাবার খেতে হচ্ছে। চোখেও ভাল দেখতে পাচ্ছি না। তাই দিল্লির এমসে যাব।’’ পাশে দাঁড়িয়েছিলেন তাঁর স্ত্রী। তিনিও একই কথা বলেন। তাঁরঅভিযোগ ‘‘এখনও ওই ঘটনার বিচার পাইনি। দিল্লিতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করব। যে আক্রমণ তৃণমূলের গুন্ডারা করেছে, তার বিচার চাইব। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে অভিযোগ করব।’’ এছাড়াও সাংসদের স্ত্রী আরও বলেন, ‘‘চোখে আবছা দেখছে ও। আটটা দাঁত নড়েছে এবং ভেঙেওছে।’’ যদিও এই হামলার পিছনে রোহিঙ্গা, বাংলাদেশিরা জড়িত রয়েছে বলে বারংবার অভিযোগ তুলছে বিজেপি নেতৃত্বে। তবে বিজেপির তরফে, ইতিমধ্যেই ৮ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে এবং চার জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।












