প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: সোমবার রাতে কলকাতার এই মহাদুর্যোগ গত ৪০ বছরে কেউ কখনও দেখেনি বললেই চলে। পাঁচ ঘণ্টার টানা বৃষ্টিতে কার্যত থমকে গিয়েছিল কলকাতা। এক দিকে হাঁটু থেকে কোমর সমান জল, অন্যদিকে বিদ্যুত্ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে বহু এলাকায় অচলাবস্থা তৈরি হয়েছিল। দিন শেষে অফিসযাত্রী থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ, সকলে পড়েছিলেন চরম ভোগান্তিতে। পরিস্থিতি বুঝতে গতকাল সকাল থেকেই রাস্তায় ছিলেন কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম, ঠিক তেমনই বেশ কয়েকটি এলাকার পরিস্থিতি বুঝতে পথে নেমে ছিলেন তৃণমূলের নেতারা। যার মধ্যে ছিলেন রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ (Kunal Ghosh)।
শিল্পীদের পাশে দাঁড়াল কুণাল
তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষের ক্লাব রামমোহন সম্মিলনীর এবারের থিম ছিল ‘গয়না বড়ি’। তাই দিয়েই হয়েছিল মণ্ডপসজ্জা। খাস মেদিনীপুর থেকে নিয়ে আসা হয়েছিল শিল্পীদের। কিন্তু ভারী বৃষ্টির জেরে মণ্ডপের অবস্থা অত্যন্ত খারাপ। এমতাবস্থায় শিল্পীদের পাশে দাঁড়িয়েছেন কুণাল-সহ এলাকার মানুষ। শিল্পীদের থাকা-খাওয়ার চূড়ান্ত সমস্যামোকাবিলা করতে সকাল থেকে রাস্তার হাঁটু জলে নেমে পরিস্থিতির তদারক করছেন কুণাল। সঙ্গে রয়েছেন ক্লাবের অন্যান্য সদস্যরাও। এলাকার বাড়িতে বাড়িতে বেশি করে রান্না করা হচ্ছে খিচুড়ি। তাই দেওয়া হচ্ছে শিল্পীদের। একই সঙ্গে তাঁদের থাকার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। নিজের পাড়া ছাড়াও আশপাশের পুজোমণ্ডপগুলিও হাঁটু জল পেরিয়ে গিয়ে দেখে এসেছেন কুণাল। খবর নিয়েছেন নিচু বাড়িতে একতলায় থাকা মানুষের সমস্যার বিষয় নিয়ে। আর এই অবস্থায় বিরোধীদের কটাক্ষকে দুষলেন কুনাল।
বিরোধীদের কটাক্ষ করে পোস্ট কুণালের
জলমগ্ন কলকাতার রেকর্ড বৃষ্টি পর্যবেক্ষণ নিয়ে তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ সমস্ত বিরোধীদের বিরুদ্ধে একটি কটাক্ষের পোস্ট করলেন তাঁর এক্স হ্যান্ডেলে। তিনি জানান যে, “রেকর্ড বৃষ্টি। দুর্যোগ। জল। এতবড় সমস্যায় মুখ্যমন্ত্রী সর্বক্ষণ মনিটরিং করলেন। মেয়র থেকে শুরু করে বিভিন্ন জায়গায় তৃণমূল নেতারা জলে নেমে মানুষের পাশে। বিজেপি, সিপিএম, কংগ্রেস নেতারা কই? শুধু বিবৃতি আর পোস্ট। কার্যক্ষেত্রে কোথায়? মনে রাখুন, বামসরকারের সময় ঘনঘন জল জমত, ব্যাঙে হাঁচলেও জল, দুচারদিন জমে থাকত বহুস্থানে, তখনও আমরা সমালোচনা করতাম, সঙ্গে একইভাবে কার্যক্ষেত্রে পাশে থাকতাম। পাড়া, এলাকাবাসী আমাদের সেইভাবেই দেখে এসেছেন। তাই আছি, থাকব। মানুষ পার্থক্যটা জানেন।” যদিও এই নিয়ে কোনো মতামত দেয়নি গেরুয়া শিবির।
আরও পড়ুন: রায়গঞ্জ নয়, আরজি করেই পোস্টিং দিতে হবে অনিকেতকে! রাজ্যকে স্পষ্ট নির্দেশ হাইকোর্টের
প্রসঙ্গত, ধীরে ধীরে এইমুহুর্তে কলকাতার রাস্তায় জল নামতে শুরু করেছে। আর এই আবহে আলিপুর আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, আগামী শনি ও রবিবার ফের বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। তাই পুরসভার নিকাশি বিভাগের আধিকারিকরা স্পষ্ট জানিয়েছেন, শারদোৎসবের দিনগুলিতে যদি ফের প্রবল বৃষ্টি হয়, তাই আগেভাগে পরিকল্পনা করেই পরিস্থিতি সামলানো হবে। ইতিমধ্যে মেয়র পারিষদ তারক সিংহ তাঁর প্রস্তুতি নিয়ে বিশদে জানিয়েছেন পুরসভার মেয়র ফিরহাদ হাকিমকে।