প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: গত শনিবার যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে তৃণমূল কংগ্রেসের শিক্ষক সংগঠন ওয়েবকুপা-র অনুষ্ঠানকে ঘিরে রীতিমত ধুন্ধুমার পরিস্থিতি তৈরি হল রাজ্য রাজনীতিতে। বরাবর যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় দেশের অন্যতম সেরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে পরিচিত। কিন্তু সেই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে (Jadavpur University Incident) এইরূপ ভয়ংকর পরিস্থিতি তৈরি হওয়া নিয়ে চারিদিকে নিন্দার ঝড় উঠেছে। আসলে বামপন্থী ছাত্র সংগঠনের একটিমাত্র দাবি ছিল দ্রুত ছাত্র সংসদ নির্বাচনের দিন ঘোষণা নিয়ে যেন সরব হন শিক্ষামন্ত্রী। কিন্তু তা থেকেই পরিস্থিতি অন্যদিকে মোড় নেয় এবং নজিরবিহীন অশান্তির পরিবেশ তৈরি করে।
ইন্দ্রানুজকে দেখতে যান সৃজন ভট্টাচার্য!
এদিনের এই ঘটনায় SFI-এর দাবি ছিল, শনিবার তাঁরা বিক্ষোভ দেখানোর সময় শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর গাড়ি নাকি মিছিল ভেদ করে বিক্ষোভকারীদের উপর দিয়ে চলে যাওয়ার চেষ্টা করে। কিন্তু তখন গাড়ির সামনে পড়ে আহত হন দুজন ছাত্র। তাঁদের মধ্যে একজন হলেন ইন্দ্রানুজ রায় এবং অপরজন হলেন অভিনব বসু। অভিনব বিশ্ববিদ্যালয়ের SFI নেতা এবং ইন্দ্রানুজ RSF নেতা। এঁদের মধ্যে ইন্দ্রানুজের আঘাত বেশি থাকায় তাঁকে স্থানীয় একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। রবিবার তাঁকে দেখতে গিয়েছিলেন SFI-এর প্রাক্তন রাজ্য সম্পাদক সৃজন ভট্টাচার্য। আর সেই আবহে পশ্চিমবঙ্গের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের মৃত্যুর পরে তাঁকে ‘কুকুর’, ‘ভণ্ড’ এবং ‘অত্যাচারী’ বলে সোশ্যাল মিডিয়ায় ইন্দ্রানুজ এর পোস্ট দেখিয়ে সিপিআইএমকে কটাক্ষ করতে ছাড়লেন না তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ।
ইন্দ্রানুজের পোস্টে সিপিআইএম এর প্রতি ক্ষোভের চিহ্ন
তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ ইন্দ্রানুজের সোশ্যাল মিডিয়ায় যে পোস্টটি উল্লেখ করেন সেটি আসলে ২০২৪ সালের ৮ আগস্ট এর। যেদিন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য মারা গিয়েছিলেন। ওইদিন ইন্দ্রানুজ একটি ভিডিও পোস্ট করে তাতে বলেছিলেন, “Death of a Hypocrite, Death of a Tyrant (ভণ্ডের মৃত্যু, অত্যাচারীর মৃত্যু)। বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের মৃত্যুতে দুঃখেরও যেরকম কিছু নেই, আনন্দেরও কিছু নেই।’ এখানেই থেমে থাকেনি সে। তিনি আরো বলেন যে, ‘শাসক শ্রেণির এককালীন বিশ্বস্ত কুকুর হিসেবে বুদ্ধদেব বাবু তার কর্তব্য পালন করেছেন, তাই বলেই এই প্রতিক্রিয়াশীল রাষ্ট্র তাকে রাষ্ট্রীয় সম্মান দিচ্ছে, যা কমিউনিস্টদের প্রাপ্য নয়।’ কলকাতা-সহ রাজ্যের একাধিক শীর্ষস্থানীয় ব্যক্তিত্বকে ‘কুকুর’ বলে সম্বোধন করেছেন ইন্দ্রানুজ। এছাড়াও ইন্দ্রানুজের ফেসবুক দেওয়ালে মাওবাদী নেতার সমর্থনেও পোস্ট দেখা গিয়েছে।
এর আগেও ২০২৪ সালের জুনের একটি পোস্টে ইন্দ্রানুজ রায় বলেছিলেন, ‘জনগণকে দোষ দিয়ে, নিজেদের এই আমরা শিক্ষিত, আমরা কালচার্ড, বাকি সব ভিক্ষা পেয়ে খুশি অশিক্ষিতের দল মার্কা নাক উঁচুপনার কারণেই সিপিএম জনগণের কাছে লাথ খেয়েছে, আগামীতে আরও খাবে। জনগণ মূর্খ নয়, তোরা জনগণের পার্টি না হয়ে মধ্যবিত্তের পার্টি হয়েছিস, গণ আন্দোলন ছেড়ে কোর্ট, ইডি সিবিআইয়ের উপর ভরসা রেখে কিছু স্টান্টবাজির শর্টাকাট বেছে নিয়েছিস বলেই লাথ খেয়েছিস। আগামীতে আরও খাবি না শুধরোলে।’ আর এবার এই সকল পোস্টকে ঘিরে রীতিমত বিস্ফোরক মন্তব্য করলেন কুণাল ঘোষ।
কটাক্ষ করলেন কুণাল ঘোষ
গত শনিবারের ঘটনায় যেখানে সকলেই নিন্দা করছেন, সেখানে একইভাবে তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ এই বিক্ষোভের প্রতি চরম ক্ষুব্ধতা প্রকাশ করেছে। তিনি ইন্দ্রানুজ সহ গোটা সিপিআইএম কে কটাক্ষ করে বলেন, ‘কমরেড, ঘোষিত সম্মেলন, মন্ত্রীর গাড়িতে হামলার মতো বাঁদরামি সমর্থন করার আগে গণতন্ত্রের প্রতীকের ভাষাটা পড়ে নিলে ভালো হয়। এই গণতন্ত্রের প্রতীকেরই ওটা ভাষা কিনা, চলুন খতিয়ে পরীক্ষা করা যাক। দেউলিয়া সিপিএমের হাল এমনটাই।’
গুরুত্বপূর্ণ খবরের জন্য | Join Group |
চাকরির খবরের জন্য | Join Hood Jobs |
রাশিফলের জন্য | Join Hood Rashifal |
খেলার খবরের জন্য | Join Whatsapp |