প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: রাজ্যে দিনের পর দিন দুর্নীতির প্রবণতা যেন বেড়েই চলেছে। বালি দুর্নীতি, কয়লা দুর্নীতি, শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি থেকে শুরু করে রেশন দুর্নীতি, গরু পাচার কাণ্ড এমনকি মৎস্য দপ্তরের নিয়োগ দুর্নীতি নিয়েও উঠছে একাধিক প্রশ্ন। এদিকে সামনেই ২৬ এর বিধানসভা নির্বাচন। মুখ্যমন্ত্রীর সিংহাসন ধরে রাখতে তাই মরিয়া হয়ে উঠেছে শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস। এমতাবস্থায় ফের আরও একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে দুর্নীতির মামলা উঠল কলকাতা হাইকোর্টে (Calcutta High Court)।
MAKAUT বিশ্ববিদ্যালয়ে ব্যাপক দুর্নীতি
পুজোর আগেই রাজ্যে ফের ব্যাপক দুর্নীতির অভিযোগ উঠে এসেছে। MAKAUT বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রায় ৮৩৭ কোটি টাকার দুর্নীতির অভিযোগ প্রকাশ্যে উঠে আসায় বড় ঝটকা খেল শাসক শিবির। রাজনৈতিক ময়দানেও উঠে এল এক চাপা উত্তেজনা। আর এবার সেই দুর্নীতি কাণ্ডের জল গড়াল কলকাতা হাইকোর্টে। দায়ের করা হল জনস্বার্থ মামলা। আইনজীবীরা দাবি করছেন যে, এই বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রায় ৮৩৭ কোটি টাকার বেশি আর্থিক দুর্নীতি হয়েছে, গড়মিল হয়েছে। বহুক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে টেন্ডার ছাড়াই বরাত দেওয়া হয়েছে। এবং তার কোনও হিসাব বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে নেই। বহু ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে, কোনও ভুয়ো সংস্থাকে কাজের বরাত দেওয়া হয়েছে। এবং সেখানে কাজ সম্পূর্ণ না হওয়ার আগেই অর্থ দেওয়া হয়ে গিয়েছে। অথচ সেই কাজ সম্পূর্ণ হয়েছে বলে কারও কাছে কোনও খবর নেই।
কবে হবে পরবর্তী শুনানি?
এছাড়াও মামলাকারী আইনজীবীদের অভিযোগ MAKAUT বিশ্ববিদ্যালয়ে বহু বেআইনি নিয়োগ করা হয়েছে। পদ্ধতি না মেনে নিয়ম না মেনে নিয়োগ হয়েছে। এবং বেশ কিছু উচ্চপদে এমন ব্যক্তিদের বসানো হয়েছিল, যেই ব্যক্তিদের নিয়োগ করা কার্যত ওই বিশ্ব বিদ্যালয়ের পক্ষে অনুচিত ছিল। কিন্তু সেখানেও বেশ কয়েক কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। এদিকে রাজ্যের করা অডিটে দুর্নীতির সন্ধান পাওয়া গেলেও কোন ব্যবস্থা নেয়নি প্রশাসন। আর তাই এবার এই নিয়ে মামলা দায়ের করা হল কলকাতা হাইকোর্টে। গতকাল অর্থাৎ শুক্রবার, সবপক্ষকে হলফনামার নির্দেশ দিলেন বিচারপতি সুজয় পালের ডিভিশন বেঞ্চ। জানা গিয়েছে পুজোর পরে এই দুর্নীতি মামলার ফের শুনানি হবে।
আরও পড়ুন: ‘ভ্যানচালক থেকে কয়েকশ কোটির মালিক!’ বসিরহাটের দ্বিতীয় শাহজাহান, কে এই শাহানুর মণ্ডল?
বিস্ফোরক পোস্ট সুকান্তর
এদিকে MAKAUT বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রায় ৮৩৭ কোটি টাকার বিষয়টি নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করে সরব হয়েছেন কেন্দ্রীয় শিক্ষাপ্রতিমন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার। তাঁর দাবি, “টেন্ডার ছাড়াই কাজ দেখিয়ে কোটি কোটি টাকার দুর্নীতি করা হয়েছে। ৮৩৭ কোটি টাকার দুর্নীতি হয়েছে, মানুষের টাকা নয়ছয় হয়েছে। ন্যায়বিচারের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। এত বড় অঙ্কের দুর্নীতিকে কখনই অবজ্ঞা করা যায় না।” এর আগেও একাধিক বিদ্যালয়ে মিড ডে মিলের দুর্নীতিও খবরের শিরোনামে উঠে এসেছে। কিছুদিন আগে কাটোয়া ১ নম্বর ব্লকের কৈথন প্রাথমিক স্কুলে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে মিড ডে মিলের টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগ উঠেছে। যা নিয়ে বেশ সরব হয়েছে শিক্ষা দফতর। আশা করা যাচ্ছে খুব শীঘ্রই এই মামলার তদন্ত করা হতে চলেছে।