প্রীতি পোদ্দার, কলকাতাঃ বর্তমানে রেশন দুর্নীতি কাণ্ডে এখনও জেলবন্দী রাজ্যের প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার বিরুদ্ধে উঠে আসছে একের পর এক অভিযোগ। যার জেরে রীতিমত সরগরম রাজ্য রাজনীতি। আর এই আবহেই ফের দুর্নীতির তথ্য উঠে এল রেশন ব্যবস্থায়। ভুয়ো রেশন কার্ডের জন্য ফের বড় অভিযোগ উঠল তৃণমূলের এক সদস্যের বিরুদ্ধে।
ঘটনাটি কী?
জেলা খাদ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী কালিয়াচক ৩ ব্লকের সাহাবানচক অঞ্চলে রয়েছে রেশন ডিলার আশরাফুল ইসলামের দোকান। তিনি নাকি ২০১৫ থেকে ২০২২ সালের মধ্যে রেশন কার্ডের অপব্যবহার করে চলেছেন। শুধু তাই নয় সরকারি খাদ্য সামগ্রী বন্টনে দুর্নীতি-সহ একাধিক অভিযোগ রয়েছে ওই ডিলারের বিরুদ্ধে। এমনকি কয়েক মাস আগে এ বিষয়ে রাজ্য দুর্নীতি দমন শাখার অফিসেও ওই রেশন ডিলারের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছিল। বিষয়টি জানাজানি হতে তদন্ত হয়। দুর্নীতির প্রমাণও মিলেছে অনেক।
জরিমানার অঙ্ক বিপুল!
এই প্রসঙ্গে মালদহের জেলা খাদ্য নিয়ামক শাশ্বত সুন্দর দাস জানিয়েছেন যে , “রেশন ডিলার আশরাফুল ইসলামের বিরুদ্ধে মোটা অঙ্কের জরিমানা করা হয়েছে। কারণ তাঁর বিরুদ্ধে দীর্ঘ ৮ বছর ভুয়ো কার্ডে পণ্য তোলার অভিযোগের প্রমাণ মিলেছে। তাই জেলা খাদ্য সরবরাহ দপ্তর প্রায় ৭ কোটি ৮৫ লক্ষ ৬১ হাজার ৪৪ টাকা জরিমানার পাশাপাশি ডিলারশিপ সাসপেন্ড করে দিয়েছে।” যদিও রবিবার পর্যন্ত জরিমানার টাকা সরকারি কোষাগারে জমা করেননি ওই ডিলার।
গণস্বাক্ষর সম্বলিত অভিযোগ দায়ের করল রেশন গ্রাহকরা!
এখনও পর্যন্ত ওই রেশন ডিলার সেই জরিমানার টাকা জমা করেনি। তার বদলে পাল্টা খাদ্য দফতরের বিরুদ্ধে মামলা করে উচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন তিনি। তবে খাদ্য দফতরের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, যেভাবে সরকারি খাদ্য সামগ্রীতে দুর্নীতি করেছে ওই রেশন ডিলার, তাতেই এই বিপুল টাকার জরিমানা করা হয়েছে। জানা গিয়েছে, আশরাফুল ইসলাম সাহবানচক পঞ্চায়েতের তৃণমূলের অঞ্চল কমিটির সভাপতি। এছাড়াও কালিয়াচক ৩ নম্বর পঞ্চায়েত সমিতির তৃণমূলের সদস্য তিনি। অনেক আগেই দুর্নীতির আখড়ার বিরুদ্ধে জেলা খাদ্য দফতরে ওই ডিলারের বিরুদ্ধে নানা দুর্নীতির বিষয় নিয়ে গণস্বাক্ষর সম্বলিত অভিযোগ দায়ের করেছিলেন সংশ্লিষ্ট এলাকার একাংশ রেশন গ্রাহকেরা।
ওই এলাকার একাংশ রেশন গ্রাহকদের অভিযোগ, ওই ডিলারের কাছে কোনওদিনই নিয়মিত সরকারি খাদ্য সামগ্রী পাওয়া যায়নি। তার কারণ রাতারাতি তিনি নাকি সীমান্তের ওপারে রেশন সামগ্রী পাচার করতেন। এদিকে, যার বিরুদ্ধে অভিযোগ সেই রেশন ডিলার আশরাফুল ইসলামকে একাধিকবার মোবাইলে যোগাযোগ করলে করা হলে তাঁর কোনো প্রতিক্রিয়া মেলেনি।