প্রীতি পোদ্দার, কালিয়াচক: বছর ঘুরলেই ২৬ এর বিধানসভা নির্বাচন। তাই নির্বাচনকে ঘিরে এখন থেকে শুরু হয়ে গিয়েছে ভোট প্রস্তুতির নানা আলোচনা। এদিকে ২৬ এর নির্বাচন যত এগিয়ে আসছে ততই শাসকদলের মধ্যে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের প্রবণতা চরম আকার ধারণ করছে। এমতাবস্থায় নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন মালদার (Malda) কালিয়াচক ২নং ব্লকের রথবাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান শামসুন্নাহার। আতঙ্কে গৃহবন্দী পঞ্চায়েত প্রধান। অভিযোগ তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র ও খুনের পরিকল্পনা দলেরই একাংশের।
খুনের চেষ্টা করা হচ্ছে পঞ্চায়েত প্রধানকে!
পঞ্চায়েত প্রধান শামসুন্নাহার অভিযোগ জানিয়েছেন যে, কংগ্রেস থেকে সাত জন সদস্য তৃণমূলে যোগদানের পর থেকেই সমস্যা দেখা দিয়েছে। বিভিন্ন জায়গায় শোনা গিয়েছে নয়া সদস্যরা সরকারি বিভিন্ন প্রকল্পের সুবিধা পাইয়ে দিতে কাটমানি তুলছেন আর সেই নিয়ে প্রতিবাদ করেছিলেন তিনি ও তাঁর স্বামী নাসির আহমেদ। এই প্রতিবাদই কাল হয়ে দাঁড়ায় তাঁদের কাছে। কিছুদিন আগে পঞ্চায়েত দপ্তরে বৈঠক করার অজুহাতে নাসির আহমেদের উপরে চড়াও হন ফেকু মোমিন,নাসির আহমেদ নামে কয়েকজন। সেই সময়ে কোনও মতে পালিয়ে প্রাণে বেঁচেছিলেন তাঁর স্বামী। বর্তমানে তিনি গুরুতর আহত অবস্থায় স্থানীয় একটি নার্সিংহোমে ভর্তি। চরম আতঙ্কে রয়েছেন গোটা পরিবার।
নিরাপত্তা না থাকায় যাচ্ছেন না অফিসে
প্রধান শামসুন্নাহার আশঙ্কা করছেন যে, দলের বিরোধী শিবির তাঁকে খুন করতে চাইছে৷ তিনি গোটা ঘটনাটি স্থানীয় বিধায়ককে জানিয়েছেন৷ পুলিশের কাছে তাঁর আবেদন, নির্ভয়ে অঞ্চল অফিসে গিয়ে যাতে মানুষের কাজ যেন তিনি করতে পারেন, এবং তাঁকে যেন নিরাপত্তা দেওয়া হোক৷ শামসুন্নাহার আরও বলেন, “স্থানীয় বিধায়ক তথা সাবিনা ইয়াসমিন আমাকে বলেছিলেন, আমি যেন তাঁর সম্মান বজায় রেখে কাজ করি৷ আমি সেটাই চেষ্টা করেছি৷ আমি গোটা বিষয়টি তাঁকে জানিয়েছি৷” কিন্তু এইমুহুর্তে পুলিশি নিরাপত্তা ছাড়া তিনি দফতরে যেতে পারছেন না বলেই জানা গিয়েছে। এর ফলে প্রবল সমস্যায় পড়েছেন সাধারণ মানুষজন৷
আরও পড়ুন: কয়েক মাসে বেহাল ১৪০ কোটির রাস্তা! বাঁকুড়া-ঝাড়গ্রাম রাজ্য সড়কের দুর্দশা ঘিরে বিক্ষোভ
নাটক বলে দাবি বিরোধীদের
এদিকে রথবাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান শামসুন্নাহার এই অভিযোগগুলিকে নাটক বলে কটাক্ষ করছেন বিরোধী গোষ্ঠীর নেতারা৷ সুযোগ বুঝে সুর চড়িয়েছে বিরোধীরাও৷ মালদা জেলা কংগ্রেসের সহ-সভাপতি ভূপেন্দ্র হালদার অবশ্য বলেন, ‘এটি তৃণমূলের আভ্যন্তরীণ বিষয়। এর সঙ্গে কংগ্রেসের কোনও যোগ নেই। কংগ্রেস নেতাদের যে প্রলোভন দেখিয়ে তৃণমূলে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল হয়তো সেই প্রতিশ্রুতি পূরণ করা হচ্ছে না। তাই এই ধরনের অশান্তির ঘটনা বলে মনে করছি।’ কিছুদিন আগে খড়গপুর ২ নং ব্লকের চাঙ্গুয়াল পঞ্চায়েত অফিসের ভেতরে তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্য সুজাতা দে-র হাতে মারধর খেলেন তৃণমূলেরই পঞ্চায়েত প্রধান দীপালি সিংহ। অভিযোগ, এলাকার উন্নয়নমূলক কাজ নিয়ে বাধা দেওয়া নিয়েই শুরু হয় বচসা। যা গড়ায় মারামারিতে।