প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: গত রবিবার রেড রোডে ছিল দুর্গাপুজোর কার্নিভাল। প্রতি বছরের মতো এই বছরেও মহা ধুমধাম করে আয়োজন করা হয়েছিল কার্নিভালের। এদিকে গত শনিবার রাতভর প্রবল বর্ষণে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে উত্তরবঙ্গ। ভূমিধসে মৃতের সংখ্যা বাড়তে থাকে। রবিবার সকাল থেকে একের পর এক ভয়ংকর খবর উঠে হাসতে থাকে শিরোনামে। সেই সময় মুখ্যমন্ত্রী (Mamata Banerjee) ঘোষণা করেন যে তিনি উত্তরবঙ্গে যাবেন। কিন্তু তাঁর এই ঘোষণাকেই হাতিয়ার করে নিলেন বিরোধীরা। প্রশ্ন তোলা হল কেন বাতিল করা হল না পুজোর কার্নিভাল? এবার তাদের জবাব দিলেন মুখ্যমন্ত্রী।
উত্তরকন্যায় সাংবাদিক বৈঠক মমতার
গতকাল অর্থাৎ সোমবার দুপুর থেকে আজ, মঙ্গলবার দুপুর পর্যন্ত উত্তরের বিপর্যয়গ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দেখা করেছিলেন আহত বিজেপি সাংসদ খগেন মুর্মুর সঙ্গে। সবসময় পাশে থাকার পরামর্শ দেন মুখ্যমন্ত্রী। এরপর আজ বিকেলে উত্তরকন্যার সাংবাদিক বৈঠক ডাকেন মুখ্যমন্ত্রী। আর সেই বৈঠকেও এবার বিরোধীদের এক হাত নিলেন মমতা। কার্নিভাল বন্ধ না করার যোগ্য জবাব দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর কথায়, যাঁরা কার্নিভাল নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন তাঁরা আসলে রাজনীতি করছেন।
কেন কার্নিভাল বন্ধ হয়নি?
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বৈঠকে বলেন যে, “কার্নিভাল বাংলার গর্ব। আর সেই অনুষ্ঠান দেখতে উপস্থিত ছিলেন বিদেশিরা। সবকিছু আগে থেকে ঠিক করা হয়েছিল। ফলে রাতারাতি এভাবে ক্যান্সেল করা সম্ভব! তাছাড়়া আমরা যদি ওই দিনই আসতাম, এসে কী করতাম? পুলিশ, প্রশাসন কাকে সামলাত? উদ্ধারকার্যে প্রভাব পড়ত। পুলিশ ব্যস্ত হয়ে পড়ত আমাকে নিয়ে। যা মোটেও কাম্য নয়। কারণ দুর্যোগের সময় একমাত্র প্রধান কাজ দুর্গতের পাশে দাঁড়ানো।” এদিন মমতা বিজেপিকেও নিশানা করেছেন। তুলে ধরেছেন মহাকুম্ভের দুর্ঘটনাও বিজেপি শাসিত রাজ্যের বিভিন্ন দুর্যোগ। প্রশ্ন করেন, “মহাকুম্ভের দুর্ঘটনা কি ডিজাস্টার ঘোষণা করা হয়েছে? আমি কোনও দিন দুর্যোগ নিয়ে রাজনীতি করি না।”
আরও পড়ুন: কাজে গাফিলতি, জরুরি সময়েও কন্ট্রোল রুমে গরহাজির আধিকারিক! শোকজ নবান্নর
দাঙ্গা নিয়ে মুখ খুললেন মমতা
এদিন উত্তরকন্যার সাংবাদিক বৈঠকে বিজেপি সাংসদ খগেন মুর্মুর উপর আক্রমণ নিয়েও মুখ খুলেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি জানিয়েছেন, “দাঙ্গা-বন্যার পর সাধারণ মানুষ অসহায় হয়ে পড়ায় ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেছিলেন। আমিও অনেক খারাপ পরিস্থিতির মুখে পড়েছি। দাঙ্গার সময় হিন্দু এলাকায় গিয়ে দেখিছি ওরা তাড়া করছে। মুসলিম এলাকায় আরও তাড়া করছে। কী করা যাবে। সেই অসহায় অবস্থা কাটানোর জন্য আমাদের খুব শান্তিপূর্ণভাবে ট্যাকেল করতে হয়। ওখানে আর্গুমেন্ট করতে হয় না। এর মধ্যে রাজনীতি করলে চলবে না। ”