প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: বিগত কয়েক দিন ধরেই বিজেপির বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠে আসছে যে, বিজেপি শাসিত রাজ্যে বাংলা ভাষায় কথা বললেই ‘বাংলাদেশি’ তকমা দেওয়া হচ্ছে। এমনকি তাঁদের অনেককে বাংলাদেশে পাঠিয়েও দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ। অত্যাচারিত হচ্ছে বাঙালি শ্রমিকরাও। এমতাবস্থায় আজ, বুধবার, কলেজ স্ক্যোয়ার থেকে ধর্মতলা পর্যন্ত মিছিলের আয়োজন করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানেই বিজেপিকে সরাসরি আক্রমণ করলেন তিনি।
বাংলা ভাষা নিয়ে বিজেপিকে কটাক্ষ মমতার
আজ, বুধবার, ১৬ জুলাই, ধর্মতলায় তৃণমূলের প্রতিবাদ মঞ্চ থেকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে তীব্র ভাষায় আক্রমণ শানালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন তিনি বলেন, “বিজেপি কি দেশের জমিদারি পেয়ে গিয়েছে? যাকে ইচ্ছা জেলে পাঠিয়ে দিচ্ছে। পশ্চিমবঙ্গের নাগরিকদের কাছে আধার কার্ড, প্যান কার্ড রয়েছে। তাঁরা বাংলায় থাকলে অনেক ভাল থাকতে পারেন। তাঁদের দিয়ে কাজ করাবে, আর বাংলায় কথা বললেই জেলে নিয়ে যাবে, কেন? পশ্চিমবঙ্গ কি ভারতের অঙ্গ নয়?”
মোদীকে হুঁশিয়ারি মমতার
এছাড়াও তিনি এদিন প্রসঙ্গ টানলেন কবিগুরু রবীন্দ্রনাথের। সকলের সামনে মমতা বললেন, “বাঙালিদের উপর এত রাগ কেন? কী করেছে বাঙালিরা আপনাদের? রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রাখিবন্ধন করেছিলেন। ভারত এবং বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীত রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা। জনগণমণ অধিনায়ক কি একজন বাঙালি লেখেননি? তখন তো দেশ একজোট ছিল।”
এখানেই থামেননি তিনি আরও বলেন, “ লুকিয়ে লুকিয়ে (নোটিফিকেশন) করে যেখানে বিজেপি আছে সেখানে পাঠিয়েছে। সেখানে পরিষ্কার বলা হয়েছে, যাকেই সন্দেহ হবে, বাংলায় কথা বলে, তাকে অ্যারেস্ট করবে, ডিটেনশন ক্যাম্পে রেখে দেবে। তাই মোদীজিকে বলছি, সতর্ক করে গেলাম। মারবও না, কাটবও না। আমরা তোমাদের ভাষায় কথা বলি না। কিন্তু অত্যাচার যদি বন্ধ না হয়, আমরা কীভাবে থামাতে হয়, তা জানি।”
দিল্লিতে সরকার গড়বে ইন্ডিয়া জোট?
এমনকি এদিন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নির্বাচনের প্রসঙ্গে ও বিজেপিকে আক্রমণ করেছিলেন। তিনি বলেন, “আমি বিহারে শুনেছি ৩০.৫ লক্ষ ভোট বাদ দিয়ে দিয়েছে। এভাবেই মহারাষ্ট্রে বিজেপি জিতেছে। না হলে জিততে পারত না। দিল্লিতেও এই সব করেই জিতেছে। বিহারেও সেই পরিকল্পনা করছে। তারাও আমাদের ভাই-বোন। বাংলাতেও পরিকল্পনা করছে। আমরা ইঞ্চিতে ইঞ্চিতে লড়াই করব। বিনা যুদ্ধে এক ইঞ্চি জমিও আমরা ছাড়ব না।” মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, “২৬ এ বাংলা তারপরের ইলেকশনে দিল্লি দখল করব। এবারে ইন্ডিয়ার সরকার হবে।”
আরও পড়ুন: দক্ষিণবঙ্গের ৪ জেলায় বন্যার আশঙ্কা! নবান্নর মিটিংয়ে আধিকারিকদের দায়িত্ব বোঝালেন মমতা
পাল্টা মন্তব্য বিজেপির
তবে বাঙালি বিদ্বেষ ইস্যু নিয়ে বিরোধী দল বিজেপি স্পষ্ট মতামত জানিয়েছে যে, ”গেরুয়া শিবিরের কোনও বাঙালি বিদ্বেষ নেই। ভিন রাজ্যে বাংলাদেশ থেকে অবৈধ ভাবে আসা মুসলিমদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। এদিকে ঘটনাক্রমে সেই মুসলিমরা বাংলা ভাষায় কথা বলে। কিন্তু কোনও অবৈধ অনুপ্রবেশকারী এদেশে এসে থাকবে, ষড়যন্ত্র করবে তা মেনে নেওয়া যেতে পারে না।”
২১ এর কর্মসূচিতে নয়া চমক
তবে এদিনের সভা মঞ্চ থেকে ২১ জুলাই শহীদ মঞ্চের প্রসঙ্গ উঠে এসেছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “আমাকে অনেকেই বলেছেন, সামনে ২১ শে জুলাই। তার আগে আবার কেন? আমি বলেছি ডেঞ্জারাস সিচুয়েশন হলে এমন হবে। আমি ছাড়ার পাত্র নই। বাকি ২১জুলাই কর্মসূচী ঘোষণা করব।”
এদিন অবশ্য নাম না করে নির্বাচন কমিশন ও কেন্দ্রীয় এজেন্সিগুলোর ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন মুখ্যমন্ত্রী। সেক্ষেত্রে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন সামনের একুশে জুলাইতে এক বড় চমক আনতে চলেছেন মমতা ব্যানার্জি।
গুরুত্বপূর্ণ খবরের জন্য | Join Group |
চাকরির খবরের জন্য | Join Hood Jobs |
রাশিফলের জন্য | Join Hood Rashifal |
খেলার খবরের জন্য | Join Whatsapp |