প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: বিগত কয়েকদিন ধরে কাঁথি সমবায় ব্যাঙ্কের বোর্ড অফ ডিরেক্টরস নির্বাচন নিয়ে তৃণমূল অন্দরে দুই মন্ত্রীর মধ্যে বেশ বিতর্ক বেঁধেছে। খবরের শিরোনামে বার বার উঠে আসছে প্রাক্তন মন্ত্রী অখিল গিরি ও বিধায়ক উত্তম বারিকের বিবাদ। মঙ্গলবার সকালে অখিল গিরিকে চোর চোর বলে তাড়া করেন বিধায়ক উত্তম বারিকের অনুগামীরা। যার জেরে পালটা উত্তম অনুগামীদের বোমা মারার হুমকি দেন অখিল গিরি। আর এতেই সমস্যা আরও বড় আকার ধারণ করে। অস্বস্তিতে পড়েছিল শাসকদল তৃণমূল। এবার সেই সমস্যা নিয়ে দুই মন্ত্রীর প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
দুই বিধায়ককে কঠোর হুঁশিয়ারি
জানা গিয়েছে মঙ্গলবার রাতেই অখিল গিরি এবং উত্তম বারিকের ঘটনায় হস্তক্ষেপ করেন তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব। দলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সী পূর্ব মেদিনীপুর জেলা তৃণমূলের নেতাদের ফোন করে ডেকে পাঠান। এরপর গতকাল অর্থাৎ বুধবার দুপুরে সুব্রত দক্ষিণ কলকাতায় তাঁর প্রিয়নাথ মল্লিক রোডের অফিসে বৈঠকে বসেন জেলার নেতাদের নিয়ে। আরসেখানেই রাজ্য সভাপতির ফোনে ফোন করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এবং দুই মন্ত্রীর বিরুদ্ধে কঠোর হুশিয়ারি দেন।
আগামী ১০ বছর দলের নেত্রী থাকবেন মমতা
সূত্রের খবর এদিন দলের জাতীয় কর্মসমিতির বৈঠকে হাজির সমস্ত নেতাদের উদ্দেশে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানান শীঘ্রই পারস্পরিক দ্বন্দ্ব যেন মিটিয়ে নেন অখিল গিরি এবং উত্তম বারিক। এবং এও বলেন যে দলের নির্দেশ মেনে সবসময় কাজ করতে হবে। এমনকি পার্সোনালি ফোন কথা বলেন দুই বিধায়কের সঙ্গেও। গোটা ঘটনায় যে তিনি কতটা ক্রুদ্ধ, সেটা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পদে পদে বুঝিয়েও দিয়েছেন নেতাদের। সুব্রত বক্সির ফোনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) বলেন, “আমি দলের চেয়ারপার্সন। আগামী ১০ বছর আমিই দল চালাব। সুতরাং দল যে প্যানেল বা নিয়ম ঠিক করে দেবে সেই প্যানেল অনুযায়ী দলের সবাইকে মেনে চলতে হবে। এবং সমবায় নির্বাচন নিয়ে যেন সংযত থাকেন নেতারা।”
আরও পড়ুনঃ তৃণমূলে এবার অভিষেক বনাম কুণাল? সাংসদের এক মন্তব্যে উস্কে গেল জল্পনা
এদিকে এদিনের বৈঠকে রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সী মনে করিয়ে দেন গত বছর কালীঘাটে জাতীয় কর্মসমিতির বৈঠকে বলা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথা গুলি। সেই সময় মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন, এ বার থেকে ‘দলবিরোধী’ কাজ করলে সংশ্লিষ্ট নেতাকে শোকজের মুখে পড়তে হবে। পর পর তিন বার যদি শোকজ করা হয় তাহলে দল থেকে সংশ্লিষ্ট নেতাকে বহিষ্কার করা হবে। তবে বিধায়কদের দ্বন্দ্ব এই প্রথমবার নয়, এর আগেও হয়েছে। আর তাতেই প্রশ্ন উঠছে যে তবে কি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্ব মানতে চাইছে না দলের নেতারা!
আরও পড়ুনঃ বাড়বে DA থেকে পেনশন! অবশেষে বহু প্রতীক্ষিত অষ্টম পে কমিশন গঠনের অনুমোদন কেন্দ্রের
বিজেপির কটাক্ষ
অন্যদিকে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি গেরুয়া শিবির। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নিজের দলের লোকের দ্বন্দ্ব নিয়ে বিজেপি কটাক্ষ করে জন্য আগেই দলের হয়ে তোলাবাজির ক্ষমতা ভাইপো অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাতে তুলে দিয়েছেন মমতা। কিন্তু তাতে সন্তুষ্ট নন ভাইপো। তার ক্ষমতাও চাই। এবার সেই বিবাদের জেরেই পড়তে হচ্ছে দলনেত্রী মমতাকে।
ভারত নয়, চ্যাম্পিয়নস ট্রফি জিততে পারে এই দুই দল! হয়ে গেল ভবিষ্যদ্বাণী