প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: উত্তরবঙ্গের নাগরাকাটা, মালবাজার, জলপাইগুড়ি ও কালিম্পং-সহ একাধিক জেলায় প্রবল বর্ষণ ও পাহাড়ি জলোচ্ছ্বাসে ভয়াবহ ক্ষয়ক্ষতি তৈরি হয়েছে এলাকা জুড়ে। যার ফলে বহু এলাকা প্লাবিত হওয়ার পাশাপাশি বহু মানুষ গৃহহীন। শুধু তাই নয়, ভয়ংকর ভূমিধসের ফলে অনেকের মৃত্যু হয়েছে। এমতাবস্থায় রাজনৈতিক ক্ষমতা নিয়ে একে অপরকে ধিক্কার জানাতে দ্বিধাবোধ করলেন না প্রধানমন্ত্রী এবং মুখ্যমন্ত্রী (Mamata Banerjee)। প্রতি মুহূর্তে একে অপরকে কটাক্ষ করে চলেছেন তাঁরা।
তৃণমূলকে নিশানা প্রধানমন্ত্রীর
উত্তরবঙ্গের ভয়াবহ বন্যা ও ভূমিধস বিধ্বস্ত অবস্থা সেখানকার জনজীবনে। আর এসবের মধ্যে দিল্লি-কলকাতা অক্ষে রাজনৈতিক পারদ চড়চড়িয়ে বাড়তে লাগল। বন্যা দুর্গত এলাকায় নাগরাকাটায় বিজেপি সাংসদ খগেন মুর্মু এবং বিধায়ক শঙ্কর ঘোষের উপর হামলার অভিযোগে সরব হলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তিনি তৃণমূলকে কটাক্ষ করে এক্স হ্যান্ডলে লেখেন “মানবিকতা হারিয়েছে সরকার! বন্যা দুর্গতদের পাশে না থেকে হিংসায় মত্ত তৃণমূল”! তবে এই কটাক্ষ চুপ থাকেননি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনিও বাংলা ও ইংরাজি, দুই ভাষাতেই এক্স হ্যান্ডেলে সেই বার্তার ‘জবাব’ দিয়েছেন।
পাল্টা জবাব মমতার
এদিন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রধানমন্ত্রীকে টার্গেট করে লিখেছেন যে, “এটা দুর্ভাগ্যজনক ও গভীরভাবে উদ্বেগজনক, যে ভারতের প্রধানমন্ত্রী যথাযথ তদন্তের অপেক্ষা না করেই একটি প্রাকৃতিক দুর্যোগকে রাজনীতিকরণের চেষ্টা করছেন। বিশেষ করে যখন উত্তরবঙ্গের মানুষ ভয়াবহ বন্যা ও ভূমিধস পরবর্তী পরিস্থিতির মোকাবিলা করছেন।” তিনি আরও লিখেছেন, “যখন স্থানীয় প্রশাসন এবং পুলিশ ত্রাণ ও উদ্ধার কাজে ব্যস্ত, তখন বিজেপি নেতারা কেন্দ্রীয় বাহিনীর নিরাপত্তায় বিশাল কনভয় নিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় গিয়েছেন। তাও আবার স্থানীয় পুলিশ এবং প্রশাসনকে কোনও তথ্য না দিয়েই। এই ঘটনার জন্য কীভাবে রাজ্য প্রশাসন, স্থানীয় পুলিশ বা তৃণমূল কংগ্রেসকে দোষ দেওয়া যেতে পারে?”
আরও পড়ুন: কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য পদ থেকে সরতে হচ্ছে শান্তা দত্তকে
মণিপুরের হিংসা নিয়েও উঠেছে প্রশ্ন
অন্যদিকে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এও অভিযোগ তুলেছেন যে প্রধানমন্ত্রী কোনও প্রমাণ ছাড়াই দোষারোপ করছেন। শুধু তাই নয় মমতা এদিন মণিপুরের হিংসা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন। তিনি জিজ্ঞাসা করেছেন মণিপুরের হিংসার ৯৬৪ দিন পর কেন প্রধানমন্ত্রী সেখানে গিয়েছিলেন? এমনকি উত্তরবঙ্গের এই দুর্যোগে প্রধানমন্ত্রীর এই উদ্বেগকেও সুযোগসন্ধানী রাজনৈতিক নাটকের মতো মনে হচ্ছে বলেও কটাক্ষ করেছেন মমতা। যদিও এখনও এর প্রতিবাদে কোনো পাল্টা জবাব পাওয়া যায়নি বিজেপির তরফ থেকে।