প্রীতি পোদ্দার, নয়া দিল্লি: বরাবরই স্বল্প প্রতিক্রিয়া প্রকাশ করতেন সদ্য প্রয়াত প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ড. মনমোহন সিং (Manmohan Singh)। গোটা রাজনৈতিক জীবনে এবং ব্যক্তিগত জীবনে তাঁর একটাই আদর্শ ছিল, আর সেটি হল ‘’কথা কম, কাজ বেশি’। যদিও বিরোধীরা সেই কারণে কম কটাক্ষ করতেন না। অনেক সময় তাঁকে ‘মৌনমোহন’ও বলতেন। এমনকি বর্তমান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিও তাঁকে কটাক্ষ করতে ছাড়েননি। নরেন্দ্র মোদী যখন গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন তখন প্রধানমন্ত্রী হওয়ার দৌড়ে বিভিন্ন সভায় তিনি বলতেন, ‘কী বিচিত্র এই দেশ। একটা লুলা, ল্যাংড়া, খোঁড়া সরকার চলছে। যে সরকারের প্রধানমন্ত্রী মৌনি। মুখে রা কাড়েন না। কারণ সরকারটা চলছে রিমোট কন্ট্রোলে।’ কিন্তু এই চুপ থাকার পিছনে যে একটা বিরাট অবদান তাঁর অর্থনৈতিক জীবনে রয়েছে সেটা এখন উপভোগ করতে পারছেন দেশের প্রত্যেক নাগরিক।
দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে একাধিক অবদান!
সেই সময় একের পর এক কটাক্ষের বিরুদ্ধে তিনি তখন একটা কথাই বলেছিলেন আর সেটি হল, “আমি আন্তরিকভাবে বিশ্বাস করি, যে সমকালীন গণমাধ্যমের তুলনায় ইতিহাস আমার প্রতি সদয় থাকবে।” রিজার্ভ ব্যাঙ্কের গভর্নর পদ থেকে দেশের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার যাত্রাপথে ভারতের আর্থিক সংস্কারের কাণ্ডারী ছিলেন তিনি। FDI থেকে লাইসেন্স রাজ এবং আধার কার্ড থেকে ১০০ দিনের কাজ এই সব সিদ্ধান্তই গোটা দেশের রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক পরিকাঠামো পরিবর্তন করে দিয়েছিল। চলুন আজকের প্রতিবেদনের মাধ্যমে সেই বিশেষ বিশেষ সিদ্ধান্তের সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক যার দরুন গোটা অর্থনৈতিক উন্নয়ন ঘটেছিল।
রাইট টু ইনফরমেশন বা RTI
এই রাইট টু ইনফরমেশন বা তথ্য জানার অধিকার আইন এর মাধ্যমে দেশের সকল নাগরিক রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক নানা প্রশ্নের উত্তর জানতে পারবেন সরাসরি সরকারী তরফ থেকে। থাকবে না কোনো বাধা। শুধু থাকবে নির্ভেজাল তথ্য। আর এই সুবিধা এনে দিয়েছিলেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ড. মনমোহন সিং। এই বিল পাস হয় তাঁর আমলে। শুধুমাত্র অর্থনীতি নয় সরকারের স্বচ্ছতার জন্য এই আইন আজও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে চলেছে।
আধার কার্ড
আধার কার্ড বর্তমানে নানা গুরুত্বপূর্ণ কাজ করার ক্ষেত্রে এক অন্যতম নথি। ভোটার কার্ড, প্যান কার্ডের মতই আধার কার্ড একপ্রকার দেশের পরিচয়পত্র বটে। প্রায় সবরকম কাজেই লাগে। যে কোনও পরিষেবা পেতে জরুরি এই পরিচয়পত্র। আর এই আধার কার্ড তৈরি হয়েছিল মনমোহন সিং এর আমলেই।
দরিদ্র মানুষের জন্য ভর্তুকি যুক্ত খাদ্য সামগ্রী প্রদান
দেশের সমস্ত মানুষ যাতে অপুষ্টির শিকার না হয় এবং সকলেই যেন খাবার পায়, তা সুনিশ্চিত করেছিলেন মনমোহন সিং। তখনই তিনি চালু করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী গরিব কল্যাণ অন্য যোজনা। দরিদ্র মানুষকে ভর্তুকি দিয়ে খাবার দেওয়ার ব্যবস্থা করেন তিনি। সৌভাগ্যবশত সেই আইন আজও রয়েছে। যার ফলে করোনা পরিস্থিতিতে লকডাউন পরিস্থিতিতে এই আইনের জন্যই দরিদ্র মানুষের খাদ্যের অভাব হয়নি।
ভারত-আমেরিকা পরমাণু চুক্তি
আন্তর্জাতিক চুক্তির ক্ষেত্রেই বিরাট অবদান রেখেছেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং। তাঁর মেয়াদকালে ভারত ও আমেরিকার মধ্যে পরমাণু চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। আর সেই চুক্তির মাধ্যমে ইউরেনিয়াম আমদানির অনুমতিও পেয়েছিল ভারত সরকার। পাশাপাশি NSG থেকে পেয়েছিল ছাড়পত্রও।
১০০ দিনের কাজ
এবং ভারতের অর্থনৈতিক সংস্কারের ক্ষেত্রে সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ যে সিদ্ধান্তের নেওয়া হয়েছিল, তা ছিল ‘মহাত্মা গান্ধী ন্যাশনাল রুরাল এমপ্লয়মেন্ট গ্যারান্টি অ্যাক্ট’ অথবা MGNREGA। দেশের অভ্যন্তরেই যাতে শ্রমিকদের কাজ দেওয়া হয় এবং দেশের বাইরে গিয়ে যাতে কাজ করতে না হয়, তার জন্য এই আইন ছিল গুরুত্বপূর্ণ। সেই জন্যই শ্রমিকদের ১০০ দিনের কাজের গ্যারান্টি দেওয়া হয়। সেক্ষেত্রে তখন গ্রামীন অর্থনীতির ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা পালন করেছিল এই আইন।
গুরুত্বপূর্ণ খবরের জন্য | Join Group |
চাকরির খবরের জন্য | Join Hood Jobs |
রাশিফলের জন্য | Join Hood Rashifal |
খেলার খবরের জন্য | Join Whatsapp |