প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: বছর পেরোলেই রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচন। হাতে অনেক সময় থাকলেও রাজনীতিবিদদের যাচ্ছে প্রতিটা মুহূর্ত এখন খুবই দরকারি। তাই সেই নির্বাচনকে মাথায় রেখে এখন থেকেই প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস। কোনো জায়গায় নিজেদের প্রচারে ফাঁক রাখতে চাইছেন না তাঁরা। সেই কারণে প্রায়ই মন্ত্রীদের সঙ্গে বৈঠকে বসতে দেখা যায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। আজ অর্থাৎ বৃহস্পতিবারও নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে (Netaji Indoor TMC Meeting) এক গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকের আয়োজন করা হয়েছিল। সেই বৈঠকে উপস্থিত ছিল দলের সর্বস্তরের নেতা-কর্মীরা। কিন্তু এই বৈঠকেই এবার ঘটে গেল বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি।
হাজির অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অনুব্রত মণ্ডল
সূত্রের খবর, শাসক দলের পূর্বনির্ধারিত ঘোষণা অনুযায়ী আজ অর্থাৎ বৃহস্পতিবার নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে (Netaji Indoor TMC Meeting) কর্মিসভার বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় থেকে শুরু করে বীরভূমের ‘বাঘ’ অনুব্রত মণ্ডল এবং হুগলির সাংসদ রচনা বন্দ্যোপাধ্যায় সহ একাধিক নেতা নেত্রী। আসলে এই সভার মূল উদ্দেশ্য ছিল ২০২৬ বিধানসভা নির্বাচনের রণকৌশল তৈরি করা ও কর্মীদের উজ্জীবিত করা। কিন্তু এই পরিকল্পনা এবং আলোচনার মাঝেই চরম বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হল। আসলে নেতাজি ইনডোর স্টেডিয়ামে যা ধারণ ক্ষমতা তার তুলনায় বেশি নেতা কর্মী পৌঁছে গিয়েছেন সেখানে। ফলে গেট খুলতেই স্টেডিয়ামে ঢোকার জন্য তুমুল ধাক্কাধাক্কি শুরু হয়ে যায়।
আমন্ত্রণপত্র ছাড়াই হাজির একাধিক নেতা
স্টেডিয়ামে কাছের সিট গুলিতে বসার জন্য রীতিমত ধস্তাধস্তি শুরু হয়ে যায়। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছয় যে কাচে হাত কেটে গিয়েছে মন্ত্রী বিপ্লব মিত্রর। তড়িঘড়ি তাঁর প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাওয়া হয় SSKM হাসপাতালে। নেতাজি ইনডোরের ফ্লোর ও স্টেডিয়াম মিলিয়ে মোট ১৪ হাজার নেতা কর্মীর বসার ব্যবস্থা করা হয়েছিল। আসলে প্রথম দিকে ২৭ ফেব্রুয়ারি এই সভার আয়োজনের কথা তোলা হলেও সেই সময় কোনো স্থির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। গত রবিবার হঠাৎ করেই ২৭ এ সভা করার সবুজ সংকেত দেওয়া হয়। সঙ্গে সঙ্গে আমন্ত্রিত নেতা কর্মীদের জন্য গত মঙ্গলবার কার্ড ছাপতে যায়। তা গতকাল অর্থাৎ বুধবার এসে পৌঁছানো মাত্র বিভিন্ন জেলায় পাঠানো হয়। কিন্তু আমন্ত্রিতদের বাইরে অনেক বেশি কর্মী এসে পৌঁছেছেন।
আরও পড়ুনঃ নিয়োগের নির্দেশ অমান্য রাজ্য সরকারের! শিক্ষা দফতরের আধিকারিকদের জোর ধমক হাইকোর্টের
সাংবাদিকদের ধাক্কাধাক্কির মধ্যে পড়তে হয়
অত্যাধিক অতিথিদের ভিড় জমে যায় স্টেডিয়াম এর বাইরে। এই অবস্খায় সকাল ১১ টায় গেট খোলা হলে রীতিমত ধাক্কাধাক্কি শুরু হয়ে যায়। যা সামলাতে নাজেহাল হয়ে যান দলের স্বেচ্ছাসেবকরা। পুলিশও হিমসিম খেয়ে যায়। তাতেই ভাঙ্গে নেতাজি ইনডোরের দরজার কাচ। শুধু মন্ত্রী বিপ্লব মিত্রের নয় আরও কয়েক জনের হাত কেটেছে বলে জানা গিয়েছে। মাটিতে রক্তের ফোঁটা পড়ে থাকতেও দেখা গিয়েছে। এমনকি ধাক্কাধাক্কির মুখে পড়তে হয়েছে সাংবাদিকদেরও। ফলে তাঁদের নিরাপদ জায়গায় সরাতে কনফারেন্স রুমে ঢুকিয়ে দেওয়া হয়। নেতাজি ইনডোরে তৃণমূলের শেষ কর্মিসভা হয়েছিল ২০২৩ সালের নভেম্বর মাসে। তার পর থেকে এ ধরনের কোনও সভা হয়নি। তাই এই সভা নিয়ে অত্যাধিক কৌতূহল প্রদর্শনেই বড় বিপদ ঘটে গেল।