সৌভিক মুখার্জী, কলকাতা: এক সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টে তোলপাড় রাজনৈতিক মহল। সম্প্রীতি আলিপুরদুয়ারের কুমারগ্রামের বিজেপি বিধায়ক মনোজকুমার ওঁরাও (North Bengal BJP MLA) সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি পোস্ট করেছিলেন। সেই পোস্টে তিনি নিজের অসন্তোষ প্রকাশ করে দলের সব পদ থেকে অব্যাহতি নেওয়ার ঘোষণা জানিয়েছেন। তবে দলের সঙ্গ ছাড়ছেন না, বরং সাধারণ কর্মী হিসেবে কাজ চালিয়ে যাবেন, এমনটাই জানিয়েছেন। কিন্তু হঠাৎ কেন এমন সিদ্ধান্ত? দলের অন্দরে কি কিছু চলছে? আসুন জেনে নেওয়া যাক।
সোশ্যাল মিডিয়ার পোস্টে কী বলেছেন?
বিজেপি বিধায়ক তার সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টে দলের শীর্ষ নেতৃত্বের ভূমিকাকে স্বীকৃতি দিলেও স্থানীয় নেতাদের কিছু কার্যকলাপের উপর কার্যত ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন। সোশ্যাল মিডিয়ায় এক পোস্ট করে তিনি জানিয়েছেন, “শুভেন্দু অধিকারী এবং দিলীপ ঘোষ বাংলার পরিবর্তন আনতে জান প্রাণ দিয়ে কাজ করছে। কয়েকজন নেতা তাদের স্বার্থসিদ্ধিতেই ব্যস্ত। সাধারণ কর্মীদের ভাবাবেগকে উপেক্ষা করে তাদের পছন্দের বিরুদ্ধে গিয়ে চাটুকারদেরকে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। যদি আগামী নির্বাচনে দলের ফল খারাপ হয়, তাহলে এর দায় তাদেরকে নিতে হবে।”
তিনি এখানেই থেমে থাকেননি। আরো জানিয়েছেন, “এই পরিবেশে দলের কোনো দায়িত্ব পালন করা সম্ভব না। তাই সব দলীয় পদ থেকে অব্যহতি নিলাম। তবে বিজেপিতেই থাকছি সাধারণ একজন কর্মী হিসাবে।”
আসলে কী ঘটছে বিজেপির অন্দরে?
সোশ্যাল মিডিয়ার এই পোস্ট প্রকাশ্যে আসার পর বিজেপির অন্দরমহলে তীব্র আলোচনা শুরু হয়েছে। প্রশ্ন উঠছে, বিজেপির কুমারগ্রাম শাখার অন্দরে কি কোন দলীয় তালবাহানা চলছে? কোন নেতার বিরুদ্ধে এরকম ক্ষোভ উগরে দিল বিধায়ক? আগামী নির্বাচনে কি এর কোন প্রভাব পড়বে। বলাবাহুল্য, বিধায়ক মনোজকুমার ওঁরাও বিজেপির কুমারগ্রাম ২ নম্বর মন্ডলের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। আর তিনি এখন পদত্যাগ করায় বিজেপির সাংগঠনিক কাঠামোতে বড়সড় পরিবর্তন আসতে পারে।
দলের প্রতিক্রিয়া
এখনো পর্যন্ত বিজেপির শীর্ষ নেতারা এই বিষয়ে কোনরকম জলঘোলা করেনি। তবে আলিপুরদুয়ার জেলা বিজেপির কয়েকজন নেতা প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন। বিজেপির কুমারগ্রাম ২ নম্বর মন্ডল সভাপতি নলিত দাস বলেছেন, “আমি সোশ্যাল মিডিয়ার পোস্টের মাধ্যমে বিষয়টি জেনেছি। কিন্তু হঠাৎ কেন এরকম সিদ্ধান্ত নিলেন উনি, তা নিয়ে এখনো জানা যায়নি।”
আরও পড়ুনঃ বিধানসভায় গরহাজির! এবার মন্ত্রী মনোজ সহ ৩০ বিধায়কের বিরুদ্ধে কড়া হচ্ছে তৃণমূল
এছাড়া বিজেপির আলিপুরদুয়ার জেলার সাধারণ সম্পাদক মিঠু দাস জানিয়েছেন, “এই ব্যাপারে জেলা সভাপতি যা বলার বলবেন।” জেলা সভাপতি জানিয়েছেন, “আমি বিধায়কের পোস্ট দেখেছি। তবে এ বিষয়ে এখন কোন মন্তব্য করব না।” যদিও বিধায়ক মনোজকুমার ওঁরাওকে ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তিনি ফোন বন্ধ রাখায় তার প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। এখন আগামীদিনে এই ঘটনা বিজেপির জন্য কোন নেতিবাচক প্রভাব আনতে পারে তা সময় বলে দেবে।