প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: গত দুইবছর ধরে কেন্দ্র আবাসের টাকা না পাঠালেও থেমে থাকেনি মমতা সরকার। রাজ্যের সম্পদ থেকেই এবার দেওয়া হবে এবার আবাসের টাকা। মাঝে আবাস যোজনার সমীক্ষা নিয়ে এলাকায় এলাকায় নানা বিক্ষোভ দেখা দিয়েছিল। অবশেষে আবাস যোজনার সমীক্ষার সমস্ত জটিলতা কাটিয়ে উঠেছে রাজ্য প্রশাসন। এবার পালা আবাস যোজনার প্রথম কিস্তির টাকা প্রদান। গত মঙ্গলবার থেকেই আবাস উপভোক্তাদের ১১ লক্ষ এবং প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে ক্ষতিগ্রস্ত আরও এক লক্ষ, মোট ১২ লক্ষ উপভোক্তাকে আবাসের প্রথম কিস্তির বরাদ্দ দেওয়ার কাজ শুরু করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দফায় দফায় অ্যাকাউন্টে টাকা পাঠানোর কাজ চলছে জেলায় জেলায়। কিন্তু এবার দলের নেতাদের সতর্ক করে দিলেন এই যোজনা বিষয়ে।
প্রভাবশালীদের উদ্দেশে বড় নির্দেশ
এর আগে আবাস যোজনার সমীক্ষার সময় নবান্ন থেকে কড়া নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল যে সমীক্ষায় কোনওরকম হস্তক্ষেপ করতে পারবেন না এলাকার কোনও ছোট বড় নেতা। এমনকি সেই সমীক্ষায় হস্তক্ষেপ করতে পারবেন না কোনও জনপ্রতিনিধিও। তা সে তিনি সাংসদ হোন বা বিধায়ক, জেলা পরিষদের সদস্য হোন বা পুরসভার, পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য হোন কী গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্য। এরা কেউ সমীক্ষার কাজে কোনওরকমের হস্তক্ষেপ করতে পারবেন না। আর এবার সেই একই নিয়ম চাপানো হল আবাস যোজনার টাকা প্রদানের সময়ও।
নজরদারির দায়িত্ব দেওয়া হল জেলাশাসকদের ওপর
নবান্ন থেকে প্রত্যেক উপভোক্তাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যে নিজের বাড়ি নিজেই তৈরি করানোর ব্যবস্থা যাতে করে। এর জন্য যেন কোনো নেতা বা জনপ্রতিনিধির সাহায্য না নিতে হয়। তবে তার জন্য গোটা বিষয়ের ওপর নজরদারির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে জেলা প্রশাসনগুলিকে। কারণ আগের অভিজ্ঞতা থেকে প্রশাসন মনে করছে যে এই সময় অর্থাৎ আবাস যোজনার প্রথম কিস্তির টাকা প্রদানের সময় প্রভাবশালীদের বাড়বাড়ন্ত দেখা দিতে পারে। তাই প্রশাসন মনে করছে, একসঙ্গে বিপুল সংখ্যক মানুষ যেহেতু বাড়ি তৈরির টাকা পাচ্ছে, তাই জেলা প্রশাসনগুলিকে তৎপর থাকার নির্দেশ দিয়েছে নবান্ন। বাড়ি নির্মাণ সরঞ্জামের জোগান স্বাভাবিক থাকছে কি না, সে ব্যাপারেও নজরদারির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে জেলাশাসকদের ওপর।
এর আগে আবাসের যোগ্য উপভোক্তা চিহ্নিত করতে, উপনির্বাচনের কারণে নির্বাচন কমিশনের নির্দেশে ৫টি জেলা বাদ দিয়ে সারা রাজ্যেই চালু হয়েছিল যাচাই পর্ব। রাজ্যের নিজস্ব নিয়মাবলি অনুযায়ী, বাড়ি বাড়ি গিয়ে সমীক্ষক দলের সদস্যরা খতিয়ে দেখছেন আদৌও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি বাড়ি তৈরির টাকা পাওয়ার যোগ্য কি না। নানা মতবিরোধ, নানা অযোগ্য ব্যক্তির বাতিলের পর অবশেষে প্রথম কিস্তির টাকা পাওয়া দেওয়া হচ্ছে।