প্রীতি পোদ্দার, ইম্ফল: রাজনীতির দরবারে পাশা পাল্টে গেল এক নিমেষে। এবার বিজেপি শাসিত এন বীরেন সিং-এর নেতৃত্বাধীন বিজেপি মণিপুর সরকারের উপর থেকে সম্পূর্ণ সমর্থন প্রত্যাহার করে দিল নীতিশ কুমারের নেতৃত্বাধীন জেডি(ইউ)। আজ অর্থাৎ বুধবার মণিপুরের রাজ্যপাল অজয় কুমার ভাল্লাকে একটি চিঠি পাঠান জেডি(ইউ)-এর মণিপুর শাখার প্রধান ক্ষেত্রিমায়ুম বীরেন সিং। সেই চিঠিতে রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধানকে স্পষ্ট জানিয়ে দেওয়া হয় যে, তাঁদের দল রাজ্য সরকারের উপর থেকে সমর্থন প্রত্যাহারের করে নিচ্ছে। তাই তাঁদের দলের একমাত্র বিধায়ক এবার থেকে বিরোধী জনপ্রতিনিধির ভূমিকা পালন করবেন। আর এই সিদ্ধান্তে রীতিমত শাসক দলের মাথায় পড়ল বজ্রাঘাত।
বরাবর বিহারের রাজনীতিতে নীতিশ কুমার নিজের সমর্থন বদলেছেন। এইভাবে একাধিকবার তাঁর সমর্থন বদল, সিদ্ধান্তের জেরে বদলেছে রাজ্যের রাজনৈতিক পটভূমি, সমীকরণ। যা নিয়ে সম্প্রতি রাজনীতির আঙিনায় তাঁকে নিয়ে সরগরম চর্চা চলেছিল। ২০২২ সালে মণিপুরে বিধানসভা নির্বাচনে সবাইকে চমকে দিয়ে নীতীশ কুমারের জনতা দল ইউনাইটেড ৬টি আসন জিতে নিয়ে ছিল। তখন অবশ্য বিজেপি এবং জেডি(ইউ) সরাসরি জোটে ছিল না। কিন্তু কয়েক মাসের মধ্যে দেখা যায় সেখানকার পাঁচ জেডি(ইউ) বিধায়ক– কে জয়কিসান সিং, গুরুসঙ্গলুর সানাতে, আচাবউদ্দিন, থাঙ্গজাম অরুণকুমার এবং এল এম খাউতে বিজেপিতে যোগ দেন।
সবাই চলে গেলেও থেকে যান শুধুমাত্র মহম্মদ আবদুল নাসির নীতীশের দলে থেকে যান। সরকারিভাবে এতদিন ওই বিধায়ক বিজেপিকে সমর্থন করছিলেন। কিন্তু এবার চিঠি দিয়ে সমর্থন প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত জানিয়ে দিল জনতা দল ইউনাইটেড। সংশ্লিষ্ট চিঠিতে ক্ষেত্রিমায়ুম বীরেন সিং লিখেছেন, ‘জনতা দল (ইউনাইটেড)-এর মণিপুর শাখা, মণিপুরে বিজেপি নেতৃত্বাধীন রাজ্য সরকারকে সমর্থন করে না এবং তাই, আমাদের একমাত্র বিধায়ক মহম্মদ আব্দুল নাসিরকে বিধানসভায় বিরোধী বিধায়ক হিসেবে গণ্য করা হোক।’ এবং তিনি রাজ্যপালল দেওয়া চিঠিতে আরও জানিয়েছেন যে এখন থেকে মহম্মদ আব্দুল নাসির বিধানসভায় বিরোধী বিধায়কদের জন্য নির্দিষ্ট আসনে বসবেন।
যদিও এতে অবশ্য মণিপুর সরকারের কিছু আসে যায় না। তার কারণ ৬০ আসনের মণিপুর বিধানসভায় বীরেন সিংয়ের নেতৃত্বাধীন এনডিএ সরকারের পক্ষে রয়েছে ৫৪ জন বিধায়কের সমর্থন। তবে এই সিদ্ধান্ত বিহার ভোটের আগে পরিস্থিতি বেশ সরগরম করে দিয়েছে। কারণ বেশ কয়েকদিন ধরে বিহার নিয়ে বিজেপি এবং জেডি(ইউ) এর মধ্যে নানা ধরনের টানাপোড়েন চলছে। তবে সেই টানাপোড়েনের এবার অবসর ঘটিয়ে মণিপুরে সমর্থন প্রত্যাহার করে গেরুয়া শিবিরকে বার্তা দিতে চাইলেন বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতিশ কুমার।