প্রীতি পোদ্দার, মালদা: গত বছর অর্থাৎ ২০২৪ সালে ২২ মে কলকাতা হাই কোর্টের OBC সার্টিফিকেট বাতিল সংক্রান্ত এক ঐতিহাসিক রায় দিয়েছিল কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তী এবং বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার ডিভিশন বেঞ্চ। সেই রায়ের নির্দেশ অনুযায়ী, ২০১০ সালের আগের OBC শংসাপত্র বৈধ। তবে ২০১০ পরবর্তী অর্থাৎ ২০১১ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত রাজ্যের দেওয়া সমস্ত সার্টিফিকেট বাতিল করে দেওয়া হয়। তার ফলে বাতিল হয়ে যায় কয়েক লক্ষ OBC শংসাপত্র। এরপর হাই কোর্টের এই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হয় রাজ্য। এখনও বিচারাধীন সেই মামলা। এদিকে এই আবহে এবার তৃণমূল পঞ্চায়েত প্রধানের OBC সার্টিফিকেট বাতিল করল রাজ্য সরকার।
ঘটনাটি কী?
২০২৩ সালে পঞ্চায়েত নির্বাচনে OBC সংরক্ষিত আসনে তৃণমূলের টিকিটে জয়লাভ করেন মালদার হরিশ্চন্দ্রপুরের রসিদাবাদ গ্রাম তৃণমূলের পঞ্চায়েত প্রধান লাভলি খাতুন। আর তারপর থেকেই লাভলির বিরুদ্ধে বাংলাদেশি হয়ে ভারতে প্রবেশ করার অভিযোগ ওঠে। আর এই অভিযোগ তোলেন তাঁরই প্রতিদ্বন্দ্বী রেহানা সুলতানা। এরপর অভিযোগের ভিত্তিতে BDO-র তদন্ত শুরু হলে লাভলির নথিতে ধরা পড়ে একের পর এক গড়মিল। প্রকাশ্যে আসে তাঁর আসল নাম নাসিয়া শেখ। আর বাবার নাম জামিল বিশ্বাস।
সূত্রের খবর রাজ্যে ২০১১ সালে তৃণমূল সরকার ক্ষমতায় আসার পর পরই ভারতে অনুপ্রবেশ করেন লাভলি খাতুন। এরপর ২০১৫ সালে তাঁর নাম ভোটার তালিকায় ওঠে। কয়েক বছর পরেই লাভলি খাতুন ভুয়ো বার্থ সার্টিফিকেট জোগাড় করে ফেলে। এর পর স্থানীয় বাঘমারা এলাকার শেখ মুস্তাফা নামে এক ব্যক্তিকে নিজের বাবা পরিচয় দিয়ে নিজেকে ভারতীয় বলে দাবি করে সে। এদিকে ওই এলাকার স্থানীয়দের দাবি শেখ মুস্তাফার সমস্ত সন্তানদের ছোটো হেকেই চেনেন তাঁরা। লাভলি খাতুন নামে শেখ মুস্তাফার কোনও সন্তান নেই বলে স্পষ্ট জানিয়ে দেন তাঁরা।
বাতিল করা হল OBC সার্টিফিকেট
এরপর লাভলি খাতুন নিজেকে ভারতীয় হিসেবে দাবি করার জন্য যে ব্যক্তিদের সাক্ষী হিসাবে উল্লেখ করে হাইকোর্টে হলফনামা পেশ করেছিলেন তারা সকলেই সত্যিটা প্রকাশ করে। তাঁরা জানিয়ে দেব ভুয়ো কাগজে তাঁদের সই জাল করা হয়েছে। এবং তাঁদের ফাঁসানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। এরপরই নড়েচড়ে বসে প্রশাসন। এদিকে বছর ঘুরতেই বিধানসভা নির্বাচন। তাই বিপদের আগুন বেশিদূর ছড়ানোর আগেই তাই বাতিল করা হল লাভলির ওবিসি সার্টিফিকেট। তবে শুধু সার্টিফিকেট নয় আশা করা হচ্ছে এবার লাভলির পঞ্চায়েতের সদস্যপদ এবং পঞ্চায়েত প্রধানের পদও খোয়া যাবে।
আরও পড়ুনঃ রমজান মাসে রেশন কার্ডে বিশেষ প্যাকেজ দেবে রাজ্য সরকার, ডিলারদের বড় নির্দেশ
এই বিষয়ে হরিশ্চন্দ্রপুরের তৃণমূলের ব্লক সভাপতি মর্জিনা খাতুন জানিয়েছেন , “ BDO তদন্ত করে দেখেছে যে লাভলি খাতুনের OBC সার্টিফিকেট সম্পূর্ণ নকল। তাই অবিলম্বে প্রশাসনের তরফ থেকে তা বাতিল করা হয়েছে। এরপর প্রশাসন সিদ্ধান্ত নেবে কি হবে, ভোট হবে নাকি প্রশাসনিক চার্জ হবে, নাকি উপপ্রধানকে দায়িত্ব দেওয়া হবে, সেটা দেখা যাক।” অন্যদিকে প্রতিপক্ষ রেহানা সুলতানার আইনজীবী ও বিজেপি নেতা অম্লান ভাদুড়ি জানিয়েছেন, “প্রায় পাঁচ মাসের শেষের পথে SDO নির্দেশ দিয়েছেন, লাভলি খাতুনের OBC সার্টিফিকেট বাতিল করেছেন। এবার তার বিরুদ্ধে ক্রিমিনাল কেসও শুরু করতে হবে পুলিশকে।”
গুরুত্বপূর্ণ খবরের জন্য | Join Group |
চাকরির খবরের জন্য | Join Hood Jobs |
রাশিফলের জন্য | Join Hood Rashifal |
খেলার খবরের জন্য | Join Whatsapp |