প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: পুজোর আগেই ভাগ্য ঘুরতে চলেছে প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের (Partha Chatterjee)! আরও একটি মামলায় এবার জামিন পেলেন তিনি। অশিক্ষক কর্মী নিয়োগ দুর্নীতিতে সিবিআইয়ের দায়ের করা মামলায় আজ অর্থাৎ মঙ্গলবার জামিন দেওয়া হয়েছে। জানা গিয়েছে, ৯০ হাজার টাকা বন্ডে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের জামিন মঞ্জুর করেছে আলিপুরের সিবিআইয়ের বিশেষ আদালত। তবে এখনই তাঁর জেলমুক্তি হচ্ছে না। কারণ এখনও তাঁর মাথায় প্রাথমিক নিয়োগ দুর্নীতি মামলার খাঁড়া ঝুলছে।
টিভি ৯ বাংলার রিপোর্ট অনুযায়ী, ২০২২ সালের ২২ জুলাই দক্ষিণ কলকাতার নাকতলায় পার্থর বাড়িতে অভিযান চালিয়েছিল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ED। এছাড়াও পার্থর ঘনিষ্ঠ বান্ধবী অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের টালিগঞ্জ ও বেলঘরিয়ার ফ্ল্যাটে হানা দেয় কেন্দ্রীয় সংস্থা। সেখান থেকেই উদ্ধার হয় ২১ কোটি ৯০ লক্ষ টাকা, আর বেলঘরিয়ার ফ্ল্যাট থেকে ২৭ কোটি ৯০ লক্ষ টাকা। এই বিপুল পরিমাণ নগদ উদ্ধারের পরই গ্রেফতার করা হয় পার্থ এবং অর্পিতাকে। তারপর নবম-দশম শ্রেণির নিয়োগ দুর্নীতি থেকে শুরু করে গ্রুপ সি ও গ্রুপ ডি সবেতেই নাম জড়ায় প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রীর। দলও মুখ ফিরিয়ে নেয় তাঁর থেকে। এমতাবস্থায় একের পর এক মামলায় ইতিমধ্যেই জামিন পেতে শুরু করেছেন তিনি।
একের পর এক মামলায় পার্থের জামিন
আড়াই বছর ধরে জেলে থাকলেও একাধিকবার শারীরিক অসুস্থতার কারণে হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়েছিল। তাই সেই কারণে বারবার অসুস্থতার কথা বলে জামিনের আবেদন জানিয়েছিলেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। কিন্তু প্রতিবারই তা খারিজ করে দেওয়া হয়। সদ্য ইডির দায়ের করা মামলায় পার্থ চট্টোপাধ্যায় জামিন পেলেও জেলমুক্তি হয়নি তাঁর। এমনকি আগস্টে স্কুল সার্ভিস কমিশনের শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডে সিবিআই মামলাতে জামিন পেয়েছিলেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। কিন্তু তখনও জেলমুক্তি হয়নি তাঁর। আর আজ অশিক্ষক কর্মী নিয়োগ দুর্নীতিতে সিবিআইয়ের দায়ের করা মামলাতে জামিন পেয়েছেন তিনি। কিন্তু যেহেতু প্রাথমিক নিয়োগ দুর্নীতির মামলা এখনো রয়েছে, তাই তাঁকে এখনই জেল থেকে ছাড়া হবে না।
আরও পড়ুন: ভাতা কমেছে ৪০০ টাকা, অথচ কাজ দ্বিগুণ! ফিরহাদকে ঘিরে বিক্ষোভ KMC-র স্বাস্থ্যকর্মীদের
কবে জেলমুক্তি হবে পার্থের?
প্রসঙ্গত, আইন অনুযায়ী, একজন অভিযুক্তকে দীর্ঘদিন ধরে জেলে রাখা আইনসম্মত নয়, যদি না প্রমাণসহ চার্জশিট পেশ করা হয়। আর পার্থের ক্ষেত্রে সেটাই হয়েছে। ফলস্বরূপ কেন্দ্রীয় সংস্থার তদন্তের গতি নিয়েও প্রশ্ন উঠছে। তাঁদের মতে, এতদিন পরেও যদি মূল মামলায় রায় না আসে, তাহলে প্রশ্ন উঠবেই তদন্তের গতিপ্রকৃতি নিয়ে। তাই এই জামিন। এদিকে প্রাথমিক নিয়োগ দুর্নীতি মামলার খাঁড়া ঝুলছে মাথার উপর। কলকাতা হাই কোর্টে গতকাল অর্থাৎ সোমবারই তার শুনানি শেষ হয়েছে। তবে রায়দান স্থগিত রেখেছেন বিচারপতি শুভ্রা ঘোষ। সেই মামলায় জামিন পেলে তবেই পার্থ কারাগার থেকে বেরতে পারবেন বলে মনে করা হচ্ছে।