জামালপুরে তৃণমূল প্রধানের দেওরকে বেধড়ক পেটাল এলাকাবাসী! আক্রান্ত পুলিশও

Published on:

Bardhaman

প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: বছর ঘুরলেই ২৬ এর বিধানসভা নির্বাচন। তাই পুজোর আগে থেকেই শুরু হয়ে গিয়েছে ভোট প্রচারের প্রস্তুতি। শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস থেকে শুরু করে বিরোধীদল বিজেপি, সিপিআইএম, কংগ্রেস সকলেই নেমে পড়েছে ভোট যুদ্ধে। এমতাবস্থায় সন্দেশখালির ভয়ংকর নারকীয় ঘটনার ছায়া এবার দেখা গেল বর্ধমানের (Bardhaman) জামালপুর এলাকায়। সন্ত্রাস এবং অত্যাচার চালানোর প্রতিবাদে তৃণমূলের পঞ্চায়েত প্রধানের দেওরকে বেধড়ক মার গ্রামবাসীদের। আক্রান্ত পুলিশও।

সন্দেশখালীর ছায়া এবার জামালপুরে!

বছরখানেক আগে সন্দেশখালির বহিষ্কৃত তৃণমূল নেতা শেখ শাহজাহানের বিরুদ্ধে গ্রামবাসীদের ওপর অত্যাচার এবং মহিলাদের ওপর নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছিল। দিনের পর দিন এই অত্যাচারের প্রতিবাদে গর্জে উঠেছিল গোটা গ্রাম। এবার সেই একই ঘটনার ছায়া পড়ল পূর্ব বর্ধমান জেলার জামালপুরের বেরুগ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার চক্ষণজাদী গ্রামে। স্থানীয় রিপোর্ট অনুযায়ী, বেরুগ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান হাসনা হারা বেগমের স্বামী শেখ ফিরোজে বিরুদ্ধে সম্প্রতি গর্জে উঠেছিলে চক্ষণজাদীর বাসিন্দারা। কিন্তু অভিযোগ উঠতেই সুযোগ বুঝে গ্রাম থেকে পালিয়েছে সে। এখনও অধরা শেখ ফিরোজ। এমতাবস্থায় গতকাল, সন্ধ্যায় ফিরোজের ভাই শেখ চাঁদের বিরুদ্ধে ক্ষোভে ফেটে পড়ে গ্রামবাসী।

বেধড়ক মারধর গ্রাম পঞ্চায়েতের দেওরকে

জানা গিয়েছে, বেরুগ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান হাসনা হারা বেগম ২০১৮ সাল থেকে একটানা এই পদে রয়েছেন। যার ফলে তাঁর স্বামী শেখ ফিরোজের দাপট দিনের পর দিন এলাকাজুড়ে বাড়তে থাকে। গ্রামবাসীদের অভিযোগ, স্ত্রীয়ের সরকারি পদের ওপর ভিত্তি করে এলাকায় চরম অত্যাচার শুরু করেছিলেন শেখ ফিরোজ। গ্রামবাসীদের কাছ থেকে জমি জমি কেড়ে নেওয়া, স্কুল এবং মসজিদের সম্পত্তি যখন তখন কায়েম করার মত বিস্ফোরক অভিযোগ উঠে আসে তার বিরুদ্ধে। এমনকি দামোদর নর থেকে বালি তোলার অভিযোগে উঠেছে পঞ্চায়েত প্রধানের স্বামীর বিরুদ্ধে। এরপরই এই ঘটনার প্রতিবাদ করতে জামালপুর থানায় গ্রামবাসীরা শেখ ফিরোজের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ দায়ের করেন। এবং ঘটনা জানাজানি ফিরোজ শেখ পালিয়ে যায় গ্রাম থেকে।

আরও পড়ুন: সিভিক ভলান্টিয়ারকে পিষে দিল ট্রাক! মর্মান্তিক দুর্ঘটনা শিলিগুড়িতে

গ্রেপ্তার ১৭ জন

এদিকে গ্রামে শেখ ফিরোজকে খুঁজে না পাওয়ায় উত্তাল হয়ে ওঠে গ্রামবাসী। আর সেই ক্ষোভের আগুন সরাসরি উগ্রে দেয় শেখ ফিরোজের ভাই তথা গ্রাম পঞ্চায়েতের দেওর শেখ চাঁদের ওপর। অসংখ্য গ্রামবাসী তাকে রাস্তার মধ্যেই আটকে রেখে বেধড়ক মারধর করে। আর সেই খবর জামালপুর থানায় এসে পৌঁছলে সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ ঘটনাস্থলে আসে। এদিকে জনরোষের হাত থেকে শেখ চাঁদকে উদ্ধার করতে গিয়ে আক্রান্ত হয় পুলিশ বাহিনী এবং ভাঙচুরও করা হয় পুলিশের গাড়িতে। আহত হয় বেশ কয়েকজন। ইতিমধ্যেই বিক্ষোভ এবং পুলিশের গাড়ি ভাঙচুরের দায়ে গ্রেপ্তার করা হয়েছে ১৭ জনকে। আজ সকালে বর্ধমান আদালতে পাঠানো হয়েছে। গোটা ঘটনায় ভয়ংকর পরিস্থিতি তৈরি হয় এলাকা জুড়ে।

আক্রান্ত শেখ চাঁদ বলেন, “জামালপুর থানার মেজবাবু আমায় বাইরে চলে যেতে বলেছিলেন। আমি কোচবিহারে চলে গিয়েছিলাম। দু’দিন আগে গ্রামে এসেছি। আমি কিছু করিনি। তবুও ওরা এদিন আমায় ব্যাপক মারধর করল। আমার মুখ ও শরীরের বিভিন্ন জায়গায় মেরে রক্ত বার করে দিয়েছে।” অন্যদিকে জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অর্ক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় জামালপুর থানার বেরুগ্রামে এ ঘটনায় স্থানীয় পুলিশ তৎক্ষণাৎ হস্তক্ষেপ করে এবং একজনকে উদ্ধার করে নিয়ে আসার সময় পুলিশ গাড়ির উপর ঢিল-পাথর ছোড়া হয়। এই ঘটনায় তিন জন পুলিশকর্মী আহত হন। বাকি অভিযুক্তদেরও গ্রেফতারের জন্য পুলিশবাহিনী তল্লাশি চালাচ্ছে।”

গুরুত্বপূর্ণ খবরের জন্যJoin Group
চাকরির খবরের জন্যJoin Hood Jobs
রাশিফলের জন্যJoin Hood Rashifal
খেলার খবরের জন্যJoin Whatsapp
সঙ্গে থাকুন ➥